জিয়াউদ্দিন বারনি বর্ণিত সুলতানি যুগের নরপতিত্বের আদর্শ কী ছিল? দিল্লির সুলতানি শাসন কি ধর্মাশ্রয়ী ছিল?4+4 (দিল্লির সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি লেখো)
ভারতে ১২০৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কাল 'দিল্লির সুলতানি যুগ' নামে পরিচিত। এই যুগের অন্যতম ইতিহাসবিদ ও রাষ্ট্রনীতিবিদ হলেন জিয়াউদ্দিন বারনি। কার লেখা বিখ্যাত গ্রন্থ 'ফতোয়া-ই-জাহান্দারি'তে রাষ্ট্রের প্রকৃতি আলোচনার পাশাপাশি নরপতিত্বের আদর্শ সম্পর্কেও তার মতামত ব্যক্ত করেছেন। নরপতিত্বের আদর্শ সম্পর্কে যেসব বিষয় তিনি তুলে ধরেছেন সেগুলি হল---
বারনি সুলতানকে তার শাসনকাজে ইসলামকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। ইসলামের আদর্শ সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য সুলতানের হাতে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব থাকা উচিত বলে তিনি উল্লেখ কে করেছেন। তাছাড়া তিনি রাষ্ট্রশক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে ইসলামের আদর্শ ও ভাবধারা ফিরিয়ে আনার পক্ষপাতী ছিলেন।
বারনি কেবল কেবল সুলতানের নয়, শাসক শাসক গোষ্ঠীর উচ্চ বংশকৌলিন্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন। ন। তার মতে সম্রাট বা সুলতান যদি উচ্চ ও পরাক্রমশালী রাজবংশের হন তবে সাধারণ প্রজাদের মনে তাঁর সম্পর্কে উচ্চ ধারণা তৈরি হবে এবং সাধারণভাবেই তিনি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা ও আনুগত্য লাভ করবেন। তাই তিনি নিম্নবর্ণের মানুষকে কেবল প্রশাসনিক কাজে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রেই নয় তাদের শিক্ষ দানেরেও বিরোধী ছিলেন।
'ফতোয়া-ই-জাহান্দারি 'গ্রন্থে বারণি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উল্লেখ করেছেন। ঈশ্বরের রাজ্যে সব মানুষের সমান অধিকার আছে তাই সুলতান প্রজাদের ন্যায়বিচার দিয়ে তাদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করবেন। তার মতে ন্যায়ের মাপকাঠিতে রাষ্ট্র তার লক্ষ্যে অটুট থাকলে তার স্থায়িত্ব সুদৃঢ় হয় ও সমালোচনার ঊর্ধ্বে থাকে।
ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে বারনি শরিয়ত বা ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী রাজ্য শাসনের কথা বলেছেন তাঁর মতে একজন শাসকের প্রধান কর্তব্য হল শরীয়ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপরিচালনা কর করা এবং ইসলাম ধর্মকে সুরক্ষা দানের সঙ্গে সেই ধর্মের প্রচার ও প্রসারের কাজে নিয়োজিত থাকা