ভৌগোলিক আবিষ্কারের উদ্দেশ্য কি ছিল ?

ভৌগোলিক আবিষ্কারের উদ্দেশ্য কি ছিল ?

 ভৌগোলিক আবিষ্কারের উদ্দেশ্য কি ছিল ?


ভৌগোলিক আবিষ্কারের উদ্দেশ্য কি ছিল ?


ঞ্চদশ শতকে ইউরোপে সৃষ্ঠ রেনেসাঁ বা নবজাগরণ ইউরোপীয় সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকেই স্পর্শ করেছিল যার ফলে রেনেসাঁস মুক্ত চিন্তা যুক্তিবাদ পূর্বে প্রচারিত সমস্ত কুসংস্কারের মূলে কুঠারাঘাত করে । ফলে মানুষের চিন্তনের মুক্তি ঘটে ৷ আর মুক্তচিন্তার মানুষজনের মধ্যে অজানাকে জানা অদেখাকে দেখার বাসনা ক্রমশ তীব্রতর হতে থাকে ৷ আর রেনেসাঁর আলোকে দীপ্ত ধারায় স্পষ্ট অনুসন্ধিৎস্যু মানুষ তাদের দৃশ্যমান জগতের সীমারেখার বাইরের যে বিরাট অদেখা পৃথিবী তাকে স্পর্শ করার জন্য সামুদ্রিক অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ে ৷ এই অভিযান ছিল অত্যন্ত দুঃসাহসিক কারণ, বিশাল লবণাক্ত উৎসাহিত তরঙ্গ কে সামুদ্রিক ফেনিল স্রোত অপসারিত করতে করতে পর্তুগাল, স্পেন, ইংল্যান্ড , ফ্রান্সের নাবিকরা ইউরোপ থেকে ক্রমশ এশিয়া আফ্রিকা ও আমেরিকার অভিমুখে সফল যাত্রা সম্পন্ন করে ৷

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

এই সামরিক অভিযান গুলির পশ্চাতে একাধিক লক্ষ উদ্দেশ্য এবং কারণ এর কথা বলেছেন নানান ঐতিহাসিকরা ৷ তবে ভৌগোলিক আবিষ্কার গুলির পেছনে প্রধান কারণ গুলিকে একত্রে 3g ফ্যাক্টর দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে ৷ যার অর্থ হলো গোল্ড, গ্লোরি এবং গড ৷ প্রাচ্যে সোনা আর রুপো সহ অফুরন্ত খনিজ প্রাকৃতিক সম্পদ অধিগ্রহণের লক্ষ্য সামনে রেখে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি অনাবিকৃত অজানা অদেখা বিশ্ব ভূখণ্ডকে আবিষ্কারের নেশায় মত্ত হয়ে ওঠে ৷ অন্যের সম্পর্কে নিজেদের সমৃদ্ধ করার সু তীব্র বাসনা নিয়ে চতুর্দশ পঞ্চদশ শতকের ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি আফ্রিকার কিউবা ও গিনি উপকূল এশিয়ার ভারতবর্ষ এবং আমেরিকা আবিষ্কার করে ৷ ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি আবিষ্কৃত দেশগুলি থেকে এলাচ লবঙ্গ ,দারুচিনি, সুগন্ধি দ্রব্য ,মূল্যবান পাথর, কাঁচা রেশম বস্ত্র ইত্যাদি ইউরোপে নিয়ে আসে । তবে বর্হীদেশীয় দেশে সম্পদের মধ্যে পর্তুগাল স্পেন সামুদ্রিক অভিযানকারী রাষ্ট্রগুলির সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট হয়েছিল বুলিয়ান অর্থাৎ তাল তাল সোনা রুপোর ।

তবে সামুদ্রিক অভিযানের পিছনে অপর যে লক্ষ্যটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা হল ইউরোপীয় ভূখণ্ডের বাইরে অর্থাৎ বহির্বিশ্বের নিজেদের গৌরব বা মহাত্য প্রতিষ্ঠা করা ৷ এক কথায় বিশ্বের বিভিন্ন ভূখণ্ডে নিজ নিজ রাষ্ট্রের বিজয় গাঁথা উত্তীর্ণ করা যা ঐতিহাসিকদের ভাষ্য অনুসারে গ্লোরি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ৷ তবে এই ইউরোপীয় খ্রিস্টান যাজকরা ও বিভিন্ন রাষ্ট্রের বীর নাবিকদের সামুদ্রিক অভিযানের বিষয়ে অনুপ্রাণিত করেছিলেন ৷ কারণ খ্রিস্ট ধর্মজাজকরা চেয়েছিলেন আবিষ্কৃত নতুন ভূখণ্ডে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করতে ৷ এই পর্বে অভিযানকারী ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি নিজ রাষ্ট্রের শিল্প ও কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আফ্রিকা হতে পরিশ্রমী নিগ্র‌ মানুষদের দাস হিসাবে নিজ নিজ দেশে নিয়ে আসার ব্যাপারে প্রচন্ড উৎসাহী হয়ে ওঠে এটিও ছিল সামুদ্রিক অভিযানের আরেকটি অন্যতম কারণ ৷

তবে এই রেনেসাঁর ফলে ইউরোপের জ্ঞান বিজ্ঞানের যে বিকাশ ঘটে তার মধ্য দিয়ে আধুনিক মানচিত্র, নির্মাণ উন্নত কম্পাস, astrolob সর্বোপরি উন্নত জাহাজ আবিষ্কারের ফলে সামুদ্রিক অভিযান পূর্বে অপেক্ষার কিছুটা সুবিধা জনক হয়ে ওঠে ৷ যার ফলে একাধিক রাষ্ট্র সামুদ্রিক অভিযানের বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করে ৷ ইউরোপীয় বিভিন্ন রাজন্নবর্গ যেমন রাজা ফার্দিনান্দ, ইসাবেলা সামুদ্রিক অভিযানের বিষয়ে নাবিকদের উৎসাহ ও সর্বপ্রকার সাহায্য করতে থাকেন ৷ যা সামুদ্রিক অভিযানকে অনুপ্রাণিত করে ৷

সামুদ্রিক বা ভৌগলিক আবিষ্কারের পিছনে ঐতিহাসিকদের আরেকটি মত হল ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দের কনস্ট্যান্টিনেপাল ইসলামী ও শক্তির হাতে পরাজিত হলে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ইসলামীয় শক্তির আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হয় ৷ ভূমধ্যসাগর ইসলামের হ্রদে পরিণত হয় ৷ ফলে ভূমধ্যসাগরীয় হ্রদ ব্যবহার করে ইউরোপীয় রাষ্ট্রের দুর্বাণিজ্য প্রচন্ড সংকটে পড়ে ৷ যার ফলে ইউরোপীয় শক্তির ব্যবসা-বাণিজ্য জারি রাখার জন্য বিকল্প পথ সন্ধান একান্ত জরুরি হয়ে ওঠে ৷ যার ফলে ভৌগোলিক অভিযান সংগঠিত হতে থাকে আর এই অভিযান গুলির পিছনে যে বিষয়টিকে কোনভাবেই অস্বীকার করা যায় না তা হল অজানাকে জানার বিষয় মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি ৷ ইউরোপীয় একদল নাবিক কে যেন দৃষ্টির অগোচরে থাকা রহস্যময় পৃথিবী হাতছানি দিয়ে ডাকে যাকে উপেক্ষা করে কলম্বাস ভাস্কোদাগামা আমেরিকা ভেসপুজির মতো বির সাহসী নাবিকদের পক্ষে সম্ভব হয়নি, তাই জীবনের চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়েও রহস্য উন্মোচন এবং অনবিকৃত পৃথিবী কে আবিষ্কারের সুতীব্র বাসনা তাদের চালিত করে এবং একের পর এক সফল অভিযান ভৌগোলিক অভিযান সম্পন্ন করে ৷

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ভৌগোলিক আবিষ্কারের উদ্দেশ্য কি ছিল ? এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟