ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান সংক্ষেপে বিশ্লেষন করো।

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান সংক্ষেপে বিশ্লেষন করো।

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান সংক্ষেপে বিশ্লেষন করো।

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান সংক্ষেপে বিশ্লেষন করো।

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান 


৯১৬ খ্রীঃ ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর আবির্ভাব এক গুরুত্বপূর্ন অধায়। ১৯০৭ খ্রীঃ কংগ্রেসের সুরটি অধিবেশনে জাতীয় কংগ্রেসের বিভক্ত, রাজনীতি থেকে অরবিন্দের স্বেচ্ছা- নির্বাসন, তিলকের নির্বাসন দন্ড -এরূপ রাজনৈতিক পটভূমিকায় গান্ধীজীর আবির্ভাব ঘটে । আল্পকালের মধ্যেই তিনি ভারতীয়দের নিকট প্রিয় নেতা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। ভারতের রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশকে জহরলাল নেহরু বলেছেন, 'তিনি ছিলেন টাটকা হাওয়ার একটা প্রবল প্রবাহের মতো। আমাদের জাগিয়ে দিলেন, গভীর নিঃশ্বাস নিলাম আমরা।'

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন


 দক্ষিন আফ্রিকা থেকে ফিরে এসে গান্ধীজীর মনে হয়েছিল, ভারতবর্ষ সত্যাগ্রহ নীতি প্রয়োগের উর্বর ক্ষেত্র। আফ্রিকা-প্রবাস জীবনে তিনি টলস্টয়ের 'Kingdom of God is within you' এবং রাসকিনের 'unto the last' প্রভৃতি গ্রন্থ থেকে অহিংস, সত্যাগ্রহ ও সর্বোদয়ের আদর্শ রাজনীতিতে প্রয়োগ করেছিলেন। ডেভিড থরোর 'civil disobedience' তাঁর মনে সত্যাগ্রহ ও আইন-অমান্যের রূপরেখা এঁকে দেয়।

 দক্ষিন আফ্রিকায় গান্ধীজীর নেতৃত্বে শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে আট বছর ধরে চলা সত্যাগ্রহ আন্দোলন জয়যুক্ত হয়। তিনি ১৯১৫ খ্রিঃ ভারতে ফিরে আসেন। তাঁর রাজনৈতিক গুরু গোপালকৃষ্ণ গোখলের পরামর্শে তিনি প্রথমেই ভারতের জন-সাধারনের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল পরিভ্রমন করেন এবং ভারতের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যোগদেন। ভারতীয় রাজনীতিতে নেতা রূপে গান্ধীজীর উত্থান ঘটেছিল চম্পারন, খেড়া এবং আমেদাবাদ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের মাধ্যমে।

 ভারতে এসে বিহারের চম্পারনে তিনি তাঁর প্রথম সত্যাগ্রহ নীতি প্রয়োগ করে সফল হন। তিন-কাটিয়া ব্যবস্থা অনুযায়ী চম্পারনের কৃষকদের নিজস্ব জমির ৩/২৫ অংশ বাধ্যতামূলকভাবে নীল চাষ করতে হত। এই নীল চাষীরা নীলকর সাহেব দ্বারা নির্যাতিত হত। ১৯১৭ খ্রীঃ গান্ধীজী কৃষকদের সমর্থনে সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করলে ব্রিটিশ সরকার তিন-কাটিয়া ব্যবস্থার বিলোপ সাধন করেন।

 চম্পারনের পর গান্ধীজী গুজরাটের খেড়ায় কৃষকদের সাহায্য এগিয়ে আসেন। এখানে কৃষকরা খাজনা হ্রাসের জন্য আন্দোলন করলে গান্ধীজী তাদের সমর্থন করে সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করেন। ১৯১৮ খ্রীঃ সরকার জমি বাজেয়াপ্ত করলে ও কৃষকরা খাজনা বন্ধ আন্দোলন চালিয়ে যায়। অবশেষে সরকার কিছুটা নরম মনোভাব দেখালে গান্ধীজী এই সত্যাগ্রহ তুলে নেন।

 গুজরাটের আমেদাবাদে মজুরী বৃদ্ধির আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গান্ধীজী অনশন সত্যাগ্রহ শুরু করেন। অনশনের চতুর্থ দিন মিল-মালিকরা তাদের অনড় মনোভাব ত্যাগ করে শ্রমিকদের মজুরী ৩৫% বাড়িয়ে দিলে গান্ধীজী অনশন তুলে নেন। ১৯১৯ খ্রীঃ তিলকের মৃত্যুর পর কথংগ্রামের নেতৃত্ব গাজীজীর উপর নাস্ত হয়। এসময় রাওলাটকিন্তু রাওলাট সাতালে পাইও নেতৃত্ব গো পাক-ভারতীয় ক্ষেত্রে প্রয়োগের সুযোগ পান। কিন্তু রাওলাট সত্যাগ্রহে গাড়ীর সত্যাগ্রহকে সর্ব-ভারতীয় দালন তাঁকে আকৃষ্ট করে। ভারতীয় সীমা ব্রিটিশ-বিরো খিলাফৎ আন্দোলন শুরু করেন, গান্ধীজী তাতে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন।

 গান্ধীজীর নেতৃত্বে ১৯২০ খ্রীঃ ব্রিটিশ বিরেই অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনের মাধ্যমে মিলাচ্ছে সমস্যার সমাধান ও রাওলাট আইনের প্রত্যাহার চাওয়া হয়। গান্ধীজী চেয়েছিলেন এই আন্দোলনের মাধ্যমে অহিংস পদ্ধতিতে স্বরাজ অর্জন। শেষ পর্যন্ত ১৯২২ খ্রীঃ চৌরি-চৌরা ঘটনায় এই আন্দোলনে হিংসা প্রকাশ পাওয়ায় গান্ধীজী আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।

আইন-অমান্য আন্দোলন ও গান্ধীজীঃ কংগ্রেস পূর্ণস্বাধীনতার দাবী যোন করলে ব্রিটিশ সরকারের সাথে কংগ্রেসের আপোসের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিয়ে ১৯৩০ খ্রিঃ গান্ধীজী তাঁর সবরমতী আশ্রম থেকে ৭৯ জন সত্যাগ্রহীকে নিয়ে যাত্রা শুর করে ডান্ডি উপকূলে পৌঁছান এবং লবন আইন ভঙ্গ করেন। শুরু হয় আইন অমান আন্দোলন। অসহযোগ আন্দোলনের মতো এই আন্দোলন গান্ধীজী মাঝ পথে পাটন কংগ্রেস অধিবেশনে প্রত্যাহার করে নেন।

 কংগ্রেসের নেতৃত্বে গণ-আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়লে বামপন্থী প্রভাব বৃদ্ধি পায়। -যার নেতৃত্বে ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। গান্ধী-সুভালে নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসে অর্ন্তদ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর পরিনতিতে সুফল চিরকালের জন্য কংগ্রেস ত্যাগ করেন। এখানে গান্ধীজীর ভূমিকা তাঁর রাজনৈতিক জীবনে কিছুটা কালিমা লেপন করে।

 ক্রিপস মিশনের ব্যর্থতা ও দ্বিতীয় বিশ যুদ্ধের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪২ -এর আগষ্ট্রে গান্ধীজীর নেতৃত্বে শুরু হয় জাত ছাড়ো আন্দোলন। তাঁর করেঙ্গ-ইয়ে মরেঙ্গে ধুনিতে আকাশ-বাতাস কেঁপে ওঠে। বিল কারনে এই আন্দোলন ব্যর্থ হলেও জনসাধারন যেভাবে এই আন্দোলনে অধি পড়েছিল, তাতে ব্রিটিশ সরকার ভীত হয়ে পড়ে। অবশেষে ১৯৪৭-এর ১৫ই আগে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করে।


গান্ধীজীই ছিলেন ভারতীয় গণ-আন্দোলনের জনক। জাতীয় অপোষ তিনি যে জনসাধারনকে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন, তাতে কোন সন্দেহ নেই ভারত-বাসী কর্তৃক পরিতাক্ত হন ত্যাগের এই প্রতিমূর্তিকে নিহত হতে হয় নাথুরাম গর্ডসে নামক এক আততরণ করে ৷

বুঝতে চাইলে ভিডিওটি দেখতে পারেনঃ

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান সংক্ষেপে বিশ্লেষন করো। এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟