কেন ইতালিতে সাধারণভাবে এবং ফ্লোরেন্সের বিশেষ করে নবজাগরণ শুরু হয়েছিল
চতুর্দশ শতক থেকে ষোড়শ শতক পর্যন্ত প্রথমে ইতালি ও পরে ইউরোপের অনত্র ভাব জগতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন ও প্রাণচাঞ্চালের সৃষ্টি হয়েছিল তা নবজাগরণ নামে খ্যাত ৷ তবে ইতালির নবজাগরণ কে হঠাৎ জাগিয়ে ওঠা কোন সাংস্কৃতিক বিপ্লব বলা যায় না, এর পিছনে ছিল দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ৷ ইতালির নবজাগরণ ছিল মূলত সেই সময়কার রাষ্ট্র,সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির কাঠামোর মধ্যে এবং এই পরিবেশে ও পরিস্থিতি ইউরোপের উন্নত ছিল না বলেই সেখানকার নবজাগরণ অনেক দেরিতে ঘটেছিল ৷
ইতালিতে রেনেসাঁ বা নবজাগরণ সূচিত হবার প্রেক্ষাপট প্রস্তুত হয়েছিল বহুদিন পূর্ব হতেই ৷ ইতালিতে এক ধরনের স্থিতাবস্থাময় সমাজ পরিস্থিতির সঙ্গে নতুন ধরনের গতিশীল সমাজ সংস্কৃতি বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল ৷ রেনেসাঁসের অন্যতম প্রধান যে লক্ষ্য অর্থাৎ স্বল্প সময়কালের মধ্যে এক দেশ বা সমাজের বহু সৃজনশীল প্রতিভার উত্থান ইতালি কে কেন্দ্র করে বিকশিত হয়েছিল ৷ ইতালিতে চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতক জুড়ে জিজ্ঞাসা,নির্মাণ,অনুসন্ধান ও প্রকাশ মননের চিন্তামশন সিজনের প্রতি ব্যাকুলতা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে ৷
Related Posts
রেনেসাঁ মানবাধিকার আদায়ের কোন রাজনৈতিক প্রকল্প নয়, রাষ্ট্রবিরোধী অভ্যুত্থানের কর্মসূচিও নয়, রেনেসাঁ সমাজ পরিবর্তনের একটি বৈদিক এবং সাংস্কৃতিক বিচ্ছুরণ ইতালির সুস্পষ্টভাবে কোমল প্রবৃত্ত আলোকময় তাই উদ্ভাসিত হয়েছিল ৷ এ ছিল যেন অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো ৷ মনে রাখা দরকার রেনেসাঁ একটি জাতির জীবনে বারে বারে আসে না,যখন আসে তখন না ঘটে ব্যক্তি প্রতিঘাত অভূতপূর্ব স্ফুরণ ৷ যা স্মিতি ও উত্তরাধিকার থেকে যায় শত শত বছর ধরে ৷ আর ইতালির অতীত সমৃদ্ধি সৃজনশীলতার শ্রেষ্ঠত্ব এই রেনেসাঁসের ঐতিহ্য ৷
নবজাগরণ হবার পিছনে যে সকল কারণ গুলি কম কমবেশি উপস্থিতি জনিত কারণেই ইতালি সাধারণভাবে রেনেসাঁ সংঘটিত হলেও ৷ ইতালি ও ইতালির নগর ফ্লোরেন্সের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ৷ ইতালীয় রেনেসাঁ ছিল মূলত নগর কেন্দ্রিক যার মধ্যে ফ্লোরেন্সের ভূমিকা ছিল সর্বাধিক উজ্জ্বল ৷ এই শহরে বিকশিত হয়েছিল প্রজাতন্ত্রিক আর্দশ ৷ ফ্লোরেন্সের ছিল বাণিজ্যের অন্যতম পীষ্ঠ স্থান ৷ জগৎ বিখ্যাত ব্যবসায়িক পরিবার যারা ব্যাংকের নামেও খ্যাতি অর্জন করেছিল এই ফ্লোরেন্সকে কেন্দ্র করে বিকাশ লাভ করেছিল ৷
ফ্লোরেন্সের যে সকল আলোক উদ্ভাষিত সহবাস্তান ঘটেছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল পেত্রাক,বোগাচ্চিত্ত, দান্তে, দোলতেলে,মাইকেল অ্যাঞ্জেলো, লিওনার্দো-দ্যা -ভিঞ্চি, রাফায়েল, পিকোদেল্লা প্রমুখ । যাদের তীব্র আলোক রেনেসাঁস হয়ে উঠেছিল গৌরব উজ্জ্বল ৷
মানবতার অন্যতম প্রবক্তা পেত্রাক ছিলেন প্রথম মানবতাবাদী ৷ যিনি ইতালির ফ্লোরেন্সের জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই মানবতাবাদী ধ্রুপদী কাব্যের দ্বারা অবলম্বন করে স্থানীয় ভাষায় সাহিত্য রচনা করেন ৷ ইতালির নবজাগরণের অন্যতম মানবতাবাদী সাহিত্যিক যিনি ইতালি ও সাহিত্যের জনক রূপে স্বীকৃত ৷ দান্তে ছিলেন ইতালির শ্রেষ্ঠ কবি এবং ফ্লোরেন্সের নাগরিক তার বিখ্যাত গ্রন্থ "Devine comedy" ফ্লোরেন্সের নবজাগরণের অন্যতম সন্তান "মিরানদোলা" একটি গ্রন্থ লিখে ইতালিতে ঝড় তোলেন ৷
এই শহরের অবস্থানরত শিল্পীদের শিল্প,স্থাপত্য কার্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মাইকেল অঞ্জেলার "madana and the child" লিওনার্দো-দ্যা-ভিঞ্চির "The last sapper" রাফায়েলের "Transforation" সর্বোপরি রেনেসাঁস শিল্প স্থাপত্যের অন্যান্য শিল্পী লিওনার্দো-দ্যা -ভিঞ্চির "মোনালিসা" শিল্পকর্ম জগতে যে আলোক বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছিল ফ্লোরেন্সের শিল্পীদের দ্বারা পরবর্তীকালে যুগ হতে যুগান্তরে কাল হতে কালান্তরে সৌন্দর্য পিপাস্য মানুষদের নয়ন যুগলীকে সার্থকতা প্রদান করেছেন ৷
উপরিউক্ত আলোচনার শেষে বলা যায় যে ইতালীয় নগর গুলিকে কেন্দ্র করে যে মানবতাবাদী চেতনা সূচিত ও বিকশিত হয়েছিল ফ্লোরেন্স ছিল তাদের আতুর ঘর ৷ ফ্লোরেন্স ছিল ইতালির মধ্যে শ্রেষ্ঠ বসন্তের দক্ষিণা বাতাস প্রবাহিত হতে শুরু করলে গাছে গাছে যেমন নতুন পাতা জন্মায় ফ্লোরেন্স ছিল তেমনি ইতালির রেনেসাঁর বসন্তকাল ৷ তাই এই সমস্ত কারণেই বলা যাই ইতালিতে রেনেসাঁস হয়েছিল সাধারণত এবং ফ্লোরেন্সের বিশেষভাবে ৷