বার্লিন চুক্তির (১৮৭৮) প্রধান শর্তগুলি কী ছিল। এটি কি ইউরোপের কুটনৈতিক সম্পর্ককে পরিবর্তিত করে দিয়েছিল।Treaty of Berlin

বার্লিন চুক্তির (১৮৭৮) প্রধান শর্তগুলি কী ছিল। এটি কি ইউরোপের কুটনৈতিক সম্পর্ককে পরিবর্তিত করে দিয়েছিল।

বার্লিন চুক্তির (১৮৭৮) প্রধান শর্তগুলি কী ছিল। এটি কি ইউরোপের কুটনৈতিক সম্পর্ককে পরিবর্তিত করে দিয়েছিল।


প্যারিসের সন্ধি পূর্বাঞ্চল সমস্যার কোনও স্থায়ী সমাধান করতে পারেনি । ঘটনা পরম্পরায় বিচার করলেই কথাটি সত্য। প্রথমতঃ, তুর্কি সুলতানি শাসনের স্বরূপ বদলায়নি। প্যারিসের সন্ধি তুরস্কের আভ্যন্তরীণ উন্নয়নে ব্যর্থ। দ্বিতীয়তঃ, বলকান জাতিগুলির জাতীয় আকাঙ্ক্ষার ও আশার বাস্তব রূপায়ন ঘটাতে ঐ সন্ধি ব্যর্থ ছিল। তৃতীয়তঃ, ইয়োরোপীয় বৃহৎ শক্তিবর্গ তাদের স্বার্থপর দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন



 তুরস্কের সুলতানের সংস্কারবিমুখতা এবং অ-মুসলিম প্রজাদের উপর অত্যাচার বলকান জাতীয়তাবাদের প্রেরণা বাড়িয়ে দেয়। বলকান অঞ্চলে অ-তুর্কি প্রজাদের এক বড়ো অংশ ছিল শ্লাভ জাতির। তারা সর্বশ্লাভবাদ (Pan Slavism) আন্দোলন গড়ে তুললে রাশিয়া তাকে সমর্থন জানায়। রুমানিয়ার স্বাধীনতা তাদের উৎসাহিত করে। ক্রমে মন্টিনিগ্রো, সার্বিয়া, বুলগেরিয়া, বসনিয়া প্রভৃতি এলাকায় আন্দোলন হলে রাশিয়া তা সমর্থন করলেও তুরস্ক বর্বর নীতি নিয়ে সেগুলি দমন করে। 1867 খ্রিস্টাব্দে রাশিয়াতে সর্ব শ্লাভ সম্মেলনও বসেছিল। তবে সর্ব-শ্লাভ আন্দোলনের দুর্বলতা ছিল, তাই এর ফলে বৃদ্ধি পায় বলকানদের মধ্যে ধর্মীয় ও জাতিগত বৈষম্য এবং পারস্পরিক বিবাদ।


বলকান বিদ্রোহ: 1875 খ্রিস্টাব্দে অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাতে,পরে ম্যাসিডোনিয়াতে এবং বুলগেরিয়াতে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে এবং সুলতান সৈন্যবাহিনীর সাহায্যে বর্বরোচিতভাবে তা দমন করেন। এই অত্যাচার ইয়োরোপের তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। তবে তাদের একদিকে জনমতের চাপ অন্যদিকে নিজেদের জাতীয় স্বার্থ- এই দুই টানা-পোড়েনের মধ্যে কাজ করতে হয়। অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইংল্যাণ্ড চেষ্টা চালিয়ে যায় যাতে তুরস্ক বলকান জাতিগুলিকে স্বায়ত্তশাসন দেয় কিন্তু তারা কেউই হস্তক্ষেপ করেনি। ইয়োরোপীয় শক্তিবর্গের প্রেরিত 'আন্দ্রাসি নোট'-এর জবাবে সুলতান 'কনস্তানতিনোপল্ প্রতিশ্রুতি' (1876 খ্রিঃ) দিলেও সংস্কারের প্রতিশ্রুতি আদৌ পালন করেনি।


রুশ-তুর্কি যুদ্ধ ও স্যান স্টিফানোর সন্ধি: রাশিয়া কিন্তু চুপচাপ বসে থাকেনি। তারা প্রথমে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে এক আঁতাত সম্পাদন ক'রে গোপনে উভয়ের মধ্যে যে মতভেদ তা দূর করে। তারপর রাশিয়া বুলগেরিয়া হত্যাকাণ্ড এবং বলকান জাতির উপর অত্যাচারের অজুহাতে তুরস্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে (1877 খ্রিঃ)। যুদ্ধে তুরস্ক শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয় এবং রাশিয়ার সঙ্গে স্যান স্টিফানোর সন্ধি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় (1877)। এর ফলে সার্বিয়া, মন্টিনিগ্রো স্বাধীন হয়। রাশিয়া ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ এবং অনেক রাজ্য লাভ করে। পরিণতিতে বৃহৎ বুলগেরিয়া রাজ্য গঠিত হয় এবং বলকানে রুশ প্রভাব বৃদ্ধি পায়। পক্ষান্তরে স্যানস্টিফানোর সন্ধির দ্বারা তুরস্ক ইয়োরোপের বলকান অঞ্চলের উপর প্রতিপত্তি হারাল এবং ঐ অঞ্চলে রাশিয়ার প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেল। তাই এই সন্ধি ইংল্যাণ্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া প্রমুখ শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলিকে খুশি করতে পারল না। প্রথমতঃ, ইংল্যাণ্ড নৌ-বাণিজ্যে ও ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যে শক্তিশালী। রাশিয়া যদি বলকান অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করে ও ভূমধ্যসাগরে অবাধে প্রবেশ করতে পারে তাহলে ইংল্যাণ্ডের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়। সুতরাং ইংল্যাণ্ড এই সন্ধি বাতিল করার জন্য রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করে। দ্বিতীয়তঃ, রুশ-তুরস্ক যুদ্ধে রাশিয়া ও অস্ট্রিয়া রাইখস্ট্যাণ্ডে এক গোপন চুক্তি করে। সেই চুক্তি অনুসারে যুদ্ধের সময় অস্ট্রিয়া ছিল নিরপেক্ষ। যুদ্ধের পর গোপন চুক্তি অনুসারে রাশিয়া অস্ট্রিয়াকে তুরস্ক থেকে বিজিত অংশের ভাগ দিল না। অন্যদিকে বুলগেরিয়ার সীমানা বর্ধিত হওয়ায় অস্ট্রিয়ার সীমান্তে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। ফলে ইংল্যান্ডের মত অস্ট্রিয়াও সন্ধির শর্ত পাল্টাবার জন্য চাপ সৃষ্টি করবে। তৃতীয়তঃ, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ার চাপের নিকট রাশিয়া যাতে নতি স্বীকার করে সেই উদ্দেশ্য নিয়ে এই সময় এগিয়ে এলেন জার্মানির প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক। 1870 খ্রিস্টাব্দে জার্মানির ঐক্য বিধানের পর তিনি ইয়োরোপে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।


তাই বিসমার্ক জার্মানির বার্লিনে ইয়োরোপীয় শক্তিবর্গের এক অধিবেশন আহ্বান করেন। স্যানস্টিফানোর সন্ধির ফলে রাশিয়ার যে লাভ হয় তা অস্ট্রিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, কেউই পছন্দ করে নি। বলকান অঞ্চলে রুশ প্রতিপত্তি বৃদ্ধিতে ব্রিটেন ও অস্ট্রিয়া যুদ্ধে আগ্রহী ছিল। তখন জার্মানির বিসমার্ক এক কংগ্রেস ডেকে 'সাধু দালাল' (honest broker)-এর ভূমিকা নেন। জার্মানির এই আন্তর্জাতিক কংগ্রেস ডাকার কারণ ছিল এই যে, যদি অস্ট্রিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ হত তাহলে বিসমার্কের 'ড্রাইকাইজারবুণ্ড' বা তিন সম্রাটের চুক্তি ভেঙে যেত। ফ্রান্সকে মিত্রহীন করে রাখার জার্মান পররাষ্ট্রনীতি তাহলে ব্যহত হত। এজন্য বার্লিন কংগ্রেস ডাকা হলো। সেখানে বিসমার্ক ছাড়াও ব্রিটেনের ডিসরেলি এবং সলস্কেরি, রাশিয়ার গোরস্তাক, ফ্রান্সের ওয়ারিংটন, অস্ট্রিয়ার আন্দ্রেসি এবং ইতালির কোর্তি উপস্থিত ছিলেন। বার্লিন কংগ্রেস আলাপ আলোচনার পর এক চুক্তি স্বাক্ষর করে। ইতিহাসে তা বার্লিন চুক্তি (The Treaty of Berlin) নামে খ্যাত (1878)। বার্লিন সন্ধিতে যে-সব শর্ত গৃহীত হয় সেগুলি হলো: 

  1. (i) মন্টিনিগ্রো, সার্বিয়া ও রুমানিয়া স্বাধীনতা লাভ করল। '
  2.  স্যানস্টিফানোতে স্বীকৃত বৃহৎ বুলগেরিয়াকে তিন অংশে বিভক্ত করা হলো, যেমন, (ক) ম্যাসিডোনিয়া অঞ্চল তুরস্ককে দেওয়া হলো, (খ) পূর্ব রুমানিয়া তুরস্কের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলরূপে গণ্য হলো। তুরস্ক এই অঞ্চল শাসনের জন্য একজন খ্রিস্টান শাসক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিল। (গ) বাকি অংশটুকু বুলগেরিয়া নামে একটি পৃথক রাষ্ট্ররূপে গণ্য হলো। 
  3. বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাকে অস্ট্রিয়ার নিয়ন্ত্রণে অর্পণ করা হলো। 
  4. রাশিয়া পেল আর্মেনিয়ার কিয়দংশ এবং কারস, বাটুম ও বেসারাবিয়া অঞ্চল।
  5.  রুমানিয়াকে দোক্রজা (Dobrudja) নামক স্থানটি দেওয়া হলো।
  6.  ইংল্যাণ্ড পেল সাইপ্রাস দ্বীপ। 
  7.  ফ্রান্স যাতে উত্তর আফ্রিকার টিউনিস পেতে পারে এরূপ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলো।
  8.  গ্রিস যাতে থেসালী (Thessaly) ও এপিরাস (Epirus) পেতে পারে তার ব্যবস্থা করার জন্য তুরস্কের সুলতানকে সুপারিশ করা হলো।


অবশ্য বার্লিন চুক্তির দ্বারা বলকান সমস্যা বা নিকট প্রাচ্য সমস্যার সমাধানের আন্তরিক সসম্মানে শান্তিপ্রতিষ্ঠা করেছি।" ইংল্যাণ্ডের দৃষ্টিকোণ থেকে কথাটা বহুলাংশে সত্য। কারণ, এই সন্ধিতে সর্বাধিক লাভবান হলো ইংল্যাণ্ড। কিন্তু লক্ষ্য করা যায়, 1878 এরপর থেকে প্রথম মহাযুদ্ধ পর্যন্ত এই বলকান অঞ্চলই হলো ঝটিকা কেন্দ্র। এই কেন্দ্র থেকে ঝড় উঠেই বিশ্বে প্রলয়কাণ্ড ঘটালো। প্রথমেই, তুরস্কের ভৌগোলিক অক্ষুণ্ণতা বজায় রাখার জন্যে এই সন্ধি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু তুরস্কের প্রায় অর্ধেকটাই স্বাধীন হয়ে প্রচেষ্টা হলো না। তবে ইংল্যান্ডের প্রাধানমন্ত্রী ডিসরেলি অবশ্য বলেছিলেন যে, "আমি গেল। সুতরাং তুরস্ক সম্পর্কে মূলত অবিচার করা হলো। এদিকে রাশিয়া এই সন্ধিতে মোটেই খুশি হতে পারেনি। কারণ বলকান অঞ্চলে তার আগ্রাসী নীতি প্রতিহত হলো। স্যানস্টিফানোর সন্ধিতে রাশিয়ার যে লাভ হয়েছিল তা তাকে হারাতে হলো। তাছাড়া এই সন্ধিতে বলকান জাতীয়তাবাদীদের আশা পূর্ণ হলো না। ম্যাসিডোনিয়ার জাতীয় আশাও পূর্ণ হলো না। এই অঞ্চলটি চলে গেল তুরস্কের নিয়ন্ত্রণাধীনে। পূর্ব রুমেলিয়া তুরস্কের অধীনে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলরূপে থেকে গেল। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাকে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হলো। এখানকার শ্লাভ জাতি সার্বিয়ার শ্লাভদের সঙ্গে মিলিত হবার আশা করত। ফলে সার্বিয়ার সঙ্গে অস্ট্রিয়ার দ্বন্দ্ব স্বাভাবিক হয়ে উঠল। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বলকানে যে কটি স্বাধীন রাষ্ট্র হলো তাদের মধ্যেও স্বার্থগত দ্বন্দ্ব ক্রমশ প্রখর হতে থাকে। আবার তুরস্ক সাম্রাজ্যের মধ্যে এই সময় "তরুণ তুর্কি" দলের আবির্ভাব ঘটল। তুর্কিকরণই ছিল তাদের আদর্শ। ফলে খ্রিস্টান প্রজাদের উপর তাদের অত্যাচার বৃদ্ধি পেল। এদিকে এই সময় জার্মানির কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়াম সম্প্রসারণের নীতি অবলম্বন করেন। তিনি জার্মানির বার্লিন থেকে বাগদাদ পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন। এর ফলে সমস্যা আরও জটিল হলো। ফলতঃ বার্লিন কংগ্রেস বলকান জাতীয়তাবাদের সমস্যা সমাধান করতে তো পারেই নি বরং বহু নতুন প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র তৈরি করেছিল, যেমন অস্ট্রো-রুশ, অস্ট্রো-বুলগেরিয়া, সার্বো-বুলগেরিয়া, অস্ট্রো-সার্বিয় ইত্যাদি সমস্যা বেড়ে যায়। সর্বোপরি বিসমার্ক যদিও নিরপেক্ষ ছিলেন কিন্তু রাশিয়া মনে করল জার্মানি অস্ট্রিয়ার প্রতি পক্ষপাত দেখিয়েছে। এই অভিযোগ তুলে তারা 'তিন সম্রাটের চুক্তি' থেকে বেরিয়ে আসে। ফলে। বসমার্কের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন দেখা যায়। তিনি প্রথমে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে দ্বৈত চুক্তি (1879) এবং পরে ইতালিকে নিয়ে 'ত্রিপাক্ষিক চুক্তি' (Triple Alliance) করতে বাধ্য হন। 



অধ্যাপক এ. জে. পি. টেলার মনে করেন যে, বার্লিন কংগ্রেস ইয়োরোপের ইতিহাসের এক জল বিভাজিকা অর্থাৎ নতুন যুগের সন্ধিক্ষণ। এর সামনে রয়েছে তিরিশ বছরের দ্বন্দ্ব এবং পিছনে রয়েছে চৌত্রিশ বছরের শান্তি। ল্যাঙ্গার-এর মতে বার্লিন কংগ্রেসের ফলেই ইয়োরোপীয় কূটনীতির পরিবর্তন হয়। ম্যারিয়ট-এর মতে ব্রিটেনের চেষ্টাতেই অনিবার্য ধ্বংসের হাত থেকে তুরস্ক রক্ষা পায় বটে তবে এর ফলে বলকান অঞ্চলে নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ডেভিড টমসন ঠিকই লিখেছেন যে, বার্লিন কংগ্রেস প্রত্যেকটি দেশকেই অধিকতর অসন্তুষ্ট ও উদ্রগ্রীব করে ("It left each power dissatisfied and more anxious than before")


বার্লিন কংগ্রেস প্রসঙ্গে ডেভিড টমসনের একটি উক্তি প্রণিধানযোগ্য। তিনি লিখেছেন যে, বার্লিন কংগ্রেস 'was significant more for its effects on the alignments of the great powers than for its efforts to 'settle' the fate of Turkey'।


অর্থাৎ তুরস্কের ভাগ্য 'নির্ধারণ' করার প্রচেষ্টার চেয়েও বৃহৎ শক্তিগুলির মৈত্রী বা জোট গড়ার উপর প্রভাবের ক্ষেত্রে অধিক তাৎপর্য প্রভাব ফেলেছিল বার্লিন কংগ্রেস। যেহেতু প্রত্যেক বৃহৎ শক্তিই আগের চেয়ে অধিক উদ্বিগ্ন এবং অসন্তুষ্ট হলো 1878 এবং পরে, তাই আন্তর্জাতিক জটিলতাও বৃদ্ধি পেল। সুতরাং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ভিসরলি যতই শান্তি ও সম্মান ফিরিয়ে আনার কথা বলুন কার্যত তা হয়নি। বলকানের অশান্তি আন্তর্জাতিক অশান্তির সৃষ্টি করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পথ সুগম করে।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

বার্লিন চুক্তি সম্পর্কিত সমস্ত প্রশ্ন গুলিঃ

বার্লিন চুক্তি কী?

বার্লিন চুক্তি (Berlin Conference) ছিল ১৮৮৪-৮৫ সালে ইউরোপীয় শক্তিগুলোর মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশ ভাগাভাগির একটি আনুষ্ঠানিক সম্মেলন, যেখানে তারা উপনিবেশ স্থাপনের নিয়মাবলি নির্ধারণ করে।

বার্লিন চুক্তির বছর কত?

বার্লিন চুক্তি বা বার্লিন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৮৮৪ সালের নভেম্বর থেকে ১৮৮৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

বার্লিন চুক্তির উদ্দেশ্য কী ছিল?

বার্লিন চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে আফ্রিকাকে শান্তিপূর্ণভাবে ভাগ করা এবং উপনিবেশ স্থাপনের নিয়ম নির্ধারণ করা যাতে সংঘাত এড়ানো যায়।

বার্লিন চুক্তিতে কোন কোন দেশ অংশ নেয়?

বার্লিন চুক্তিতে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, ইতালি, স্পেনসহ ১৪টি ইউরোপীয় রাষ্ট্র অংশ নিয়েছিল।

বার্লিন চুক্তির ফলাফল কী ছিল?

বার্লিন চুক্তির মাধ্যমে আফ্রিকার উপনিবেশিক মানচিত্র চূড়ান্ত করা হয় এবং ইউরোপীয় শক্তিগুলো বিভিন্ন অঞ্চল নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়, যার ফলে আফ্রিকার স্বাধীনতা বিলুপ্ত হয়।

বার্লিন চুক্তির দুটি শর্ত লেখো

১। অটোমান সাম্রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া কিছু রাজ্যকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়।
২। ইউরোপীয় শক্তিরা অটোমান সাম্রাজ্যের বিষয়গুলিতে হস্তক্ষেপের অধিকার লাভ করে।

বার্লিন চুক্তি কবে স্বাক্ষরিত হয়?

বার্লিন চুক্তি ১৩ জুলাই, ১৮৭৮ সালে স্বাক্ষরিত হয়।

বার্লিন চুক্তি কখন স্বাক্ষরিত হয়?

১৮৭৮ সালের ১৩ জুলাই তারিখে বার্লিন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বার্লিন চুক্তি ১৮৭৮

১৮৭৮ সালের বার্লিন চুক্তি ছিল ইউরোপীয় শক্তিগুলোর মধ্যে একটি কূটনৈতিক সমঝোতা, যা পূর্বের সান স্তেফানো চুক্তির পরিবর্তে কার্যকর হয়।

বার্লিন চুক্তি কত সালে হয়?

বার্লিন চুক্তি ১৮৭৮ সালে হয়।

বার্লিন চুক্তি কখন সংঘটিত হয়?

বার্লিন চুক্তি ১৮৭৮ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত হয়।

বার্লিন চুক্তি কবে হয়?

বার্লিন চুক্তি ১৮৭৮ সালের ১৩ জুলাই হয়।

রোম-বার্লিন চুক্তি কী?

রোম-বার্লিন চুক্তি ছিল ১৯৩৬ সালে ইতালি ও জার্মানির মধ্যে একটি সামরিক ও কূটনৈতিক চুক্তি, যার মাধ্যমে তারা একে অপরকে সমর্থন করার অঙ্গীকার করে।

কার উদ্যোগে বার্লিন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

জার্মানির চ্যান্সেলর অটো ভন বিসমার্কের উদ্যোগে বার্লিন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তিনি সম্মেলনের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟