টীকা লেখ দাদু দয়াল। বা, দাদু দয়াল সম্পর্কে টীকা লেখ ৷
দাদু দয়াল ছিলেন একজন ভক্তিবাদী সাধক এবং হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের অন্যতম প্রচারক। যদিও তার জন্মস্থান রাজস্থান নাকি আমেদাবাদ তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে বলা যায় তিনি গুজরাট ও রাজস্থান অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। তার পিতা ছিলেন একজন ধর্মান্তরিত মুসলমান।
দাদু দয়ালের বাণী'দাদু অনুভূত্ব বাণী' নামক গ্রন্থে পাওয়া যায়। তিনি বলতেন বল আমি হিন্দু হতে তে চাই না, মুসলিম ও হতে চাই না, আমি শুধু চাই দয়াময়কে'। তিনি কবীরের মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি উপলব্ধি করতেন যেহেতু সকল মানুষের অন্তরেই ঈশ্বর অধিষ্ঠান করেন, তাই মানুষের মানুষে কোন পার্থক্য নেই।
দাদু তার শিষ্যদের বলেছিলেন সহজবোধ্য হিন্দি ভাষায় গ্রন্থ লিখতে। দাদু ঈশ্বরের সঙ্গে মিলিত হওয়ার উপায় হিসাবে ভক্তিবাদীদের মতোই সম্পূর্ণ সমর্পণের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বৈদিক রীতিনীতি জাতিভেদ, বর্ণভেদ প্রথার বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকি মন্দির দর্শন তীর্থযাত্রাসহ সমস্ত কিছুকে বর্জন করেছিলেন। তর অন্যান্য শিষ্যদের মধ্যে ছিলেন সুন্দর দাস, রজ্জব দাস, তিল্য প্রমুখ। এরা দাদুর কবিতা ও বাণীর সংকলন করেছিলেন। দাদুর অনুগামীরা দাদুপন্থী নামে পরিচিত।
দাদুর লক্ষ্য ছিল সর্বধর্মসমন্বয়। বস্তুত দাদু দয়ালের অসাম্প্রদায়িক মনোভাব হিন্দু মুসলিম ঐক্য স্থাপনের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলেছিল। তার কবিতা ও বাণীগুলি ধর্মীয় ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল। তাছাড়া বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাবও তার ওপর বেশ ভালোভাবে লক্ষ্য করা যায়।