হরপ্পার নগর পরিকল্পনার উপর টীকা লেখো। বা, হরপ্পার নগর পরিকল্পনা আলোচনা করো।
সিন্ধু সভ্যতা ছিল নগরকেন্দ্রিক। উৎখননের ফলে মহেঞ্জোদাড়োতে বাড়িঘর তৈরির নয়টি স্তর এবং হরপ্পায় ছয়টি স্তর আবিষ্কৃত হয়েছে । হরপ্পা, মহেঞ্জোদাড়ো, রূপার কালিবঙ্গান, লোথাল, ধোলাভিরা সকল স্থানেই নগরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। এই নগরগুলির গঠন রীতি ছিল প্রায় একই প্রকার ।মহেঞ্জোদাড়ো শহরটি প্রায় আড়াই বর্গকিলোমিটার স্থান নিয়ে গড়ে উঠেছিল। এর জনসংখ্যা ছিল অনেকের মতে ৩৫০০০। কেউ কেউ এই সংখ্যাকে এক লাখে নিয়ে নিন্দু গেছেন। স্টুয়ার্ট পিগট নামে প্রত্নতত্ত্ববিদ বলেছেন যে, সিন্ধু সভ্যতা যেরূপ বিস্তীর্ণ অঞ্চল ছিনিয়ে ছিল তাতে মনে করা যায় যে, এই অঞ্চলে দুইটি রাজধানী ছিল, যথা-হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়ো। নগর পরিকল্পনা অনেকটা দাবার বোর্ডের মতো সাজানো। মহেঞ্জোদাড়ো, হরপ্পা, লোথাল ও কালিবাঙ্গানে দেখা গিয়েছে যে, শহরের রাস্তাগুলি ছিল সোজা; উত্তর থেকে দক্ষিণে বা পূর্ব থেকে পশ্চিমে বিস্তৃত। একদিকের রাস্তা অন্যদিকের রাস্তার সঙ্গে সমকোণে সংযুক্ত। বড় রাস্তার পাশ থেকে গলিগুলি বের হয়ে গেছে। বড় রাস্তাগুলি ৯ থেকে ৩৪ ফিট চওড়া এবং গাড়ি চলাচলের উপযোগী। গলিগুলিতে পানীয় জলের কুপ খোঁড়া হত। হরপ্পায় মহেঞ্জোদাড়োর তুলনায় কূপের সংখ্যা কম দেখা যায়। বড় রাস্তায় Lamp-post থাকত।
রাস্তার ওপর সারিবদ্ধভাবে গৃহগুলি তৈরি হত। গলিতেও গৃহ তৈরি করা হত। রাস্তা অবরোধ করে বাড়ি তৈরি করা হত না। বড় রাস্তার ধারে নির্মিত কোন কোন ঘরকে দোকানের সঙ্গে অভিন্ন বলে মনে করা হয়। হরপ্পা, মহেঞ্জোদাড়ো, লোখাল সর্বত্র পোড়া ইটের বাড়ি তৈরি হত। কোন শহরে পাথরের তৈরি বাড়ি পাওয়া যায় নি। বাড়িগুলিকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়- (১) বৃহৎ প্রাসাদ বা সরকারি বাড়ি; (২) বাসগৃহ; (৩) স্নানাগার; (৪) দুর্গ। বাসগৃহগুলি বিভিন্ন আকৃতির ছিল। দু কামরাযুক্ত ছোট গৃহ থেকে ত্রিশ কামরাযুক্ত বিরাট প্রাসাদ সরকারের বাসগৃহ হরপ্পা সংস্কৃতিতে দেখা যায়। কোন কোন বাড়ির কয়েকটি তলা ছিল। ওপরের তলায় যাওয়ার জন্য মজবুত সিঁড়ি ছিল। অধিকাংশ বাড়িতে একটি আঙ্গিনা, ৩ থেকে ৪টি কক্ষ, একটি স্নানাগার ও একটি পাকশালা থাকত।' কোন কোন বাড়িতে জল সরবরাহের জন্য নিজস্ব কূপ থাকত। হরপ্পায় একটি বাসগৃহের আঙিনার চারদিকে দুই কক্ষবিশিষ্ট অনেকগুলি খর দেখা যায়। এই দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘরগুলিকে শ্রমিকদের আবাসস্থল বলে মনে করা হয়। হরপ্পা সংস্কৃতির নগরগুলিতে ধনী, দরিদ্র প্রভৃতি শ্রেণির বৈষম্য ছিল তার প্রমাণ হিসাবে অনেকে এই বাড়িগুলিকে গ্রহণ করেন। বৃহৎ প্রাসাদগুলি ধনীদের আবাস গৃহ এবং দু-কামরাযুক্ত ব্যারাক গৃহ শ্রমিকদের আবাস
গৃহ এই শ্রেণি বৈষম্যের পরিচয় দেয়। তবে হরপ্পা সংস্কৃতিতে মাঝারি বাড়ির সংখ্যা বেশি থাকায় এ. এল. বাসাম এই নগরগুলিতে মধ্যবিত্তের বাস বেশি ছিল বলে মনে করেন। যাই হোক, হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়োর বাড়িগুলির সামনের দিকে কোন জানালা থাকত না। দরজা রাস্তার দিকে না থাকায় কেউ সরাসরি বাড়িতে প্রবেশ করতে পারত না, প্রবেশ করতে হত গলি পথ দিয়ে। অবশ্য কালিবঙ্গায় বেশ কিছু বাড়ির প্রবেশপথ ছিল বড় রাস্তার দিকে। বাড়ির দেওয়ালের নিচের দিকে জল লাগবার সম্ভাবনা থাকায় পোড়ামাটির ইট ব্যবহার হত। দেওয়ালের ওপরের দিকে অনেক সময় কাঁচামাটির রোদে শুকানো ইট ব্যবহার করা করা হত। তবে পোড়ামাটির ইট বেশি ব্যবহার হত। ইটগুলি বেশ বড় আকারের একই মাপের ছিল। হরপ্পা-মহেঞ্জোদাড়োর বিভিন্ন আকৃতির বাড়ি প্রমাণ করে যে, এই নগরগুলির অধিবাসীদের মধ্যে ধনী-দরিদ্র বিভিন্ন শ্রেণির লোক ছিল। ড. এ. এল. বাসামের মতে, এই নগরগুলিতে মধ্যবিত্তের সংখ্যাই বেশি ছিল। তিনি মনে করেন, সমসাময়িক সুমেরিয় ও মিশরীয় সভ্যতার মানুষের তুলনায় হরপ্পা সভ্যতার মধ্যবিত্ত অবস্থাপন্ন মানুষের সামাজিক মর্যাদা ও গুরুত্ব অনেক বেশি ছিল।
হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়োর পশ্চিমের একটি অংশ ছিল উঁচু, বাকি পূর্বের অংশ ছিল নিচু। নগরের উঁচু এলাকা 'সিটাডেল' নামে পরিচিত। সাধারণত নগরের পশ্চিম দিকে এই সিটাডেলগুলি অবস্থিত ছিল। এগুলি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছিল আয়তাকার। কোন কোন
নগরের সিটাডেল অর্থাৎ উঁচু অংশটির চারপাশ শক্ত প্রাকার দিয়ে ঘেরা থাকত। কখনও কখনও নিম্নাঞ্চল ঘিরেও প্রাকার দেওয়া হত, যেমনটি হয়েছিল কালিবঙ্গানে। উঁচু এলাকায় নগরের দুর্গ থাকত। সম্ভবত এই দুর্গে শাসকশ্রেণির লোকেরা থাকত। নগরের অন্য অংশে সাধারণ লোক বসবাস করত। মহেঞ্জোদাড়ো, হরপ্পা, কালিবঙ্গানে একটি করে দুর্গের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। মহেঞ্জোদাড়ো দুর্গের ভেতরের অংশে এখনও খোঁড়ার কাজ হয নি।' হরপ্পার দুর্গটির গঠন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা করা যায়। হরপ্পার দুর্গের বাইরের দেওয়াল ছিল ১৩ মিটার চওড়া। এই দেওয়াল ছিল কাঁচা ইটের তৈরি। এই দেওয়ালের বাইরের দিকে পোড়ামাটির ইট দ্বারা আচ্ছাদন করা ছিল। দেওয়ালের কোণে কোণে গম্বুজ বা বুরুজ ছিল। প্রাচীরের ওপর মাঝে মাঝে বুরুজ স্থাপন করা ছিল। এই দুর্গকে প্রাচীন গ্রিক নগর বা Acropolis বা এক্রোপোলিসের সঙ্গে তুলনা করা যায়। কালিবঙ্গানে দুর্গকে ঘিরে বিরাট প্রাকার বা প্রাচীর ছিল।
হরয়ায় দুর্গের সংলগ্ন স্থানে একটি শস্যাগার আবিষ্কৃত হয়েছে। এই শস্যাগারটি হল লম্বায় ১৬৯ ফিট এবং চওড়ায় ১৩৫ ফিট (মতান্তরে ১৫০x২০০ ফিট)। বন্যার জল যাতে এই শস্যাগারটির কোন ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য পোড়ামাটির উঁচু ভিতের ওপর এই শস্যগারটি তৈরি করা হয়। শস্যাগারটি কয়েকটি পৃথক পৃথক কক্ষে ভাগ করা ছিল/শস্যাগারের পাশেই উঁচু বাঁধান চাতাল। এখানে শ্রমিকরা শস্য ঝাড়াই-মাড়াই করত।
শস্যাগারের পাশেই ছিল ২ কামরা-যুক্ত শ্রমিকদের আবাসের কেন্দ্র। মোট ১৪ টি ছোট ছোট দালানের একটি ব্লক লক্ষ্য করা যায়। কোন কোন পণ্ডিত মনে করেন যে, শ্রমিকদের এই শস্যাগারের কাজে নিযুক্ত করা হত। স্যার মাটিমার হইলার দুর্গ এবং তৎসংলগ্ন শস্যাগার ও শস্যাগারের কাজের জন্য শ্রমিক ব্যারাক নির্মাণের পরিকল্পনার প্রশংসা করেছেন। অধ্যাপক বাসাম এই গম্যাগারটিকে রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্কের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি মনে করেন, এই রকম শস্যাগার মহেঞ্জোদাডোতেও ছিল। মহেঞ্জোদাডোতে ৮৫×৯৭ ফিট একটি বিরাট দালানের ভগ্নাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। চতুষ্কোণ স্তম্ভবিশিষ্ট বিরাট কক্ষযুক্ত একটি দালানের ভগ্নাবশেষও আবিষ্কৃত হয়েছে। অনেকে এটিকে সভাগৃহ বলে মনে করেন।
মহেঞ্জোদাড়োতে দুর্গের কাছেই একটি স্নানাগার আবিষ্কৃত হয়েছে। এই স্নানাগারকে সিন্ধু সভ্যতার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য বলা যায়। এই স্নানাগারের বাইরের দিকের মাপ ছিল ১৮০x ১০৮ ফিট। স্নান করবার জলাধারটির মাপ ছিল ৩৯x২৩ ফিট এবং গভীরতা ৮ ফিট। জলাধারটিতে জল ঢোকাবার ও বের করবার ব্যবস্থা ছিল। এর একপাশে বসবার জন্য মঞ্চ ছিল। জলাধারের অন্য তিন পাশে বারান্দা এবং
তার পাশে ছোট ছোট ঘর ছিল। মার্টিমার হুইলারের মতে, এই স্নানাগারটি একটি ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়। পূজার্থীরা স্নান সেরে ছোট কক্ষে পোষাক পরত এবং স্নানাগার-সংলগ্ন মাতৃদেবতার মন্দিরে পুজো দিত। গবেষক ডি. ডি. কোশাম্বী অবশ্য মনে করেন যে, এই কক্ষগুলি অনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হত। সমসাময়িক পৃথিবীতে এ ধরনের স্নানাগার কোথাও পাওয়া যায় নি।
শিল্প নগরগুলির বাসগৃহের জল-নিকাশী ব্যবস্থা ছিল খুবই উন্নত। প্রতি বাড়ির জল বের হওয়ার জন্য পোড়ামাটির ইটের তৈরি নালী ছিল। এই নালী পথে জল নির্গত হয়ে রাস্তার পয়ঃপ্রণালীতে পড়ত। রাস্তার পাশে গর্ত করে নর্দমা তৈরি করা হত। এই নর্দমা পাথরের ঢাকনা দ্বারা চাপা দেওয়া থাকত। জলের দ্বারা বাহিত আবর্জনাকে আটকাবার
জন্য মাঝে মাঝে বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা করা ছিল। কোথাও ইটের তৈরি আবর্জনা ফেলার চৌকো চৌবাচ্চা ছিল। এগুলিতে নিচে নামার সিঁড়ি দেখে অনুমান হয় যে, এগুলি পরিষ্কার করার কোন নাগরিক বন্দোবস্ত ছিল। নালীগুলি নিয়মিত পরিষ্কারের কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে। সিন্ধু নগরগুলির মত পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা প্রাচ্যদেশে আর ছিল না। বাসাম মনে করেন যে, সম্ভবত পৌরসভা এই উন্নত মানের জল-নিকাশী ব্যবস্থা পরিচালনা করত। হরপ্পীয়দের একটি অন্যতম নাগরিক বৈশিষ্ট্য হিসাবে জল-নিকাশী ব্যবস্থাকে গণ্য করা যায়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতাগুলির মধ্যে জল-নিকাশী ব্যবস্থার ব্যাপারে রোম ছাড়া কোথাও এ ধরনের দক্ষতা চোখে পড়ে নি। কোশান্তি মনে করেন যে, হরপ্পার পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা এত উন্নত ছিল যে এই কারণে হরপ্পা সভ্যতাকে মেসোপটেমিয়ার সভ্যতা থেকে আলাদা বলা চলে। গুজরাটের লোখালের নগর পরিকল্পনার সঙ্গে মহেঞ্জোদাড়ো ও হরত্নার কিছু পার্থক্য দেখা যায়। গুজরাটে সৌরাষ্ট্র অঞ্চলে সবরমতীর একটি উপনদী ভোগাবর উপত্যকায় লোখাল কেন্দ্রটি অবস্থিত ছিল। এলাকাটিকে গুজরাটিতে 'ভাল' এলাকা বলে। বর্ষায় প্রায় সবটাই ডুবে যায়, গ্রামগুলি ভেসে থাকে। জমি সাধারণত নোনা ধরা, তবে বর্ষার বন্যার শেষে গম, ধান ও তুলোর ভাল চাষ হয়। লোথালের চারদিক ছিল প্রাচীর। লোখালের পূর্বদিক প্রায় সবটা জুড়ে 'ডক' বা নৌকো বা তদানীন্তন জাহাজ নোঙর করা এবং সারানোর জায়গা ছিল। মূলত এই ডকটি উত্তর-দক্ষিণে ২১৯ মি. লম্বা, পূর্ব-পশ্চিমে ৩৮ মি. চওড়া, ৪.১৫ মি. উঁচু পাকা ইটের দেওয়াল ঘেরা একটি জায়গা, যেখানে নৌকো ঢোকার রাস্তা ছিল। এটির সঙ্গে খালপথে আরব সাগরের যোগ ছিল। সমসাময়িক পৃথিবীতে এমন ডক পাওয়া যায়নি। ডকের পশ্চিমদিকে সবটা জুড়ে ইট বাঁধানো খোলা জায়গা ছিল। এটিকে নৌকো থেকে মাল নামানোর জায়গা বলা হয়েছে।
সিন্ধু নগরগুলির বিন্যাস লক্ষ্য করে পণ্ডিতেরা অনুমান করেন যে, এই নগরগুলির গঠনে ব্যবহারিক সুবিধার দিকেই বেশি নজর দেওয়া হয়। নগরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি অথবা গৃহগুলির স্থাপত্য শিল্প রচনার দিকে তেমন নজর দেওয়া হয় নি। মার্টিমার হুইলার এজন্য মন্তব্য করেছেন যে, "সিন্ধু নগরগুলির অধিবাসীরা ছিল বাণিজ্যজীবি বুর্জোয়া এবং
সিন্ধু নগরগুলির জীবনযাত্রায় বুর্জোয়া সভ্যতার ছাপ দেখতে পাওয়া যায়।”' সৌন্দর্য অপেক্ষা আরাম ও স্থায়িত্বের দিকেই নগরবাসীদের বেশি দৃষ্টি ছিল। এজন্য তারা বাসগৃহগুলিকে মজবুত করে তৈরি করে, কিন্তু বাসগৃহগুলির স্থাপত্য ও ভাস্কর্য ছিল নিচু মানের। সিন্ধু নগরগুলিতে নিশ্চয়ই পৌর শাসন বেশ কড়া ছিল। নতুবা শহরের রাস্তা-ঘাট ও গৃহ নির্মাণে এরূপ শৃঙ্খলা পালিত হত না। শহরের অধিবাসীরা ছিল স্বচ্ছল। শাসকশ্রেণি ছিল দৃঢ় অথচ উদার মতাবলম্বী। হরপ্পা-মহেঞ্জোদাড়োর তুলনায় গুজরাটের লোথালের নগর পরিকল্পনা কিছুটা আলাদা ছিল। লোখালে দুর্গের অবস্থান একটু অন্য রকমের। পশ্চিমে না হয়ে এটি শহরের ঠিক দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত ছিল। শহরের বাড়িগুলি উঁচু ভিতের ওপর তৈরি করা হয় সম্ভবত বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। শহরের চারদিকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল। মহেঞ্জোদাড়ো ও হরপ্পার নিম্নাঞ্চল জুড়ে কোন প্রাকার দেওয়া হয়নি, কিন্তু লোখালে নিম্নাঞ্চলে প্রাচীর দেওয়া হয়েছিল।