ফরাসি সংবিধান সভার কৃতিত্ব ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা কর French Constituent Assembly

ফরাসি সংবিধান সভার কৃতিত্ব ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা কর বা, সংবিধান সভার সাফল্য আলোচনা কর এই সভা কি পুরনো ব্যবস্থা ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করতে সক্ষম হয়েছিল ৷

 ফরাসি সংবিধান সভার কৃতিত্ব ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা কর বা, সংবিধান সভার সাফল্য আলোচনা কর এই সভা কি পুরনো ব্যবস্থা ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করতে সক্ষম হয়েছিল ৷ 

ফরাসি সংবিধান সভার কৃতিত্ব ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা কর বা, সংবিধান সভার সাফল্য আলোচনা কর এই সভা কি পুরনো ব্যবস্থা ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করতে সক্ষম হয়েছিল ৷

রাজা ষোড়শ লুই অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার উদ্দেশ্যে অন্য কোন উপায় না পেয়ে দীর্ঘ ১৭৫ বছর পর জাতীয় সভার অধিবেশন আহ্বান করেন ৷ জাতীয় সভায় যাজক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ছিল 308 জন অভিজাত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ছিল ২৮৫ জন ও তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রধান প্রতিনিধি ছিল ১২১৪ জন ৷ কিন্তু সদস্যদের মাথাপিছু ভোট ছিল না ছিল কক্ষ পিচু ভোট ৷ মিরাবোর নেতৃত্বে তৃতীয় শ্রেণীর এই ব্যবস্থার বিরোধিতা করে দাবী জানান, তিনটি শ্রেণীর প্রতিনিধিদের একই সঙ্গে বসে সংখ্যাধ্যিকের ভোটের আইন পাস করতে হবে । রাজা এই দাবি অগ্রাহ্য করলে ১৭৮৯ সালে ১৭ জুন তৃতীয় শ্রেণি আলাদা একটি জাতীয় সভা গঠন করে ৷



দুর্বলচিত রাজা ষোড়শ লুই অভিজাতদের চাপে দ্বিতীয় সম্প্রদায়ের সমস্ত কাজকর্ম বেআইনি বলে ঘোষণা করেন এবং তাদের বসার জন্য নির্দিষ্ট ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয় । বাধ্য হয়ে তৃতীয় শ্রেণীরা প্রতিনিধির নিকটবর্তী টেনিস কোর্টে মিলিত হয়ে শপথ নিলেন যে যতদিন না তারা ফ্রান্সের জন্য একটি সংবিধান রচনা করতে পারছে ততদিন তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবেন ৷



টেনিস কোর্টের শপথের ফলশ্রুতি হিসাবে ১৭৮৯ সালে ২৭ জুন  ষোড়শ লুই তিন সম্প্রদায়ের যৌথ অধিবেশনে এবং মাথাপিছু ভোটদান রীতি মেনে নেন ৷ ১৭৮৯ সালের ৯ই জুলাই ফ্রান্সের তিন সম্প্রদায়ের যৌথ অধিবেশন আরম্ভ হয়ে তৃতীয় সম্প্রদায়ের ভোটাধিলক্ষ্যে জাতীয় সভা সংবিধান সভা হিসেবে ঘোষিত হয় ৷



সংবিধান সভার প্রথম ও প্রধান কাজ ছিল নতুন সংবিধান রচনা করা ৷ নতুন সংবিধান রচনার প্রাথমিক দায়িত্বপ্রাপ মুনিয়ে ও মোলেত ,পরে বারনাভ, লা-ফায়ে, মিরব প্রভৃতি তৃতীয় সম্প্রদায়ের নেতৃত্ববিন সংবিধান রচনার কাজ শুরু করেন ৷ ১৭৯১ সালে এই সংবিধান রচিত হয় এবং এটাই ছিল ফ্রান্সের প্রথম লিখিত সংবিধান ।



সংবিধান সভার অন্যতম প্রধান অবদান হলো সামন্ত প্রথার বিলুপ্তি ৷ সংবিধানসভা চৌঠা আগস্টের অধিবেশনে ফ্রান্সে সামন্ত প্রথার বিলোপের কথা ঘোষণা করেন ৷ এর দ্বারা যুগ যুগ ব্যাপী অনাচারের বিলোপ হয় ৷



সংবিধান সভার আরেকটি অবদান হলো মানবাধিকারের সনদ ঘোষণা ৷ সংবিধান সবার 26 শে আগস্টের অধিবেশনে ফ্রান্সের জন্য মানবিক অধিকারের সনদ ঘোষণা করেন ৷ স্বাধীনতা, সাম্য এবং মৈত্রী তথা ভাতৃত্বের অপূর্ব ঘোষণা এই সনদে স্থান পায় । এই ঘোষণায় ফরাসি জনগণকে নতুন রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে উদ্বুদ্ধ করেছিল ৷



সংবিধান সভা দেশের আর্থিক সংস্কারের জন্য কতগুলি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যেমন (১).চার্চের ভুসম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা জামিন রেখে "অ্যাসাইনেট" নামক একটি কাগজে মুদ্রা চালু করা (২).পরোক্ষ কর তুলে দিয়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ওপর কর বসানো  (৩). অভ্যন্তরীণ শুল্ক তুলে দিয়ে পণ্য চলাচল অবাধ করা হয় (৪).গিল্ড গঠনের অধিকার দেওয়া হয় ৷


সংবিধান সভা আর দেশের প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য কতগুলি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যেমন(১). ফ্রান্সকে ৮৩টি ডিপার্টমেন্ট বা প্রদেশে ভাগ করা হয় (২).প্রদেশ গুলিকে জেলায়, জেলাকে ক্যান্টনে,  ক্যান্টনকে কমিউনে বিভক্ত করা হয়।



সংবিধানসভার ধর্ম বিষয়ে কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন যেমন (১).চার্চকে রাষ্ট্রের একটি বিভাগে পরিণত করা হয় (২). চার্চের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে যাজকদের বেতনের ব্যবস্থা করা হয় (৩).খ্রিস্টানদের সব গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ।



সংবিধান সভা বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য কতগুলি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যথা (১).আইনের চোখে সকলের সমান এই নীতির বিচার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় (২).নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের অধিকার জনগণকে দেওয়া হয়। (৩).ফৌজদারি মামলার জুড়ি প্রথা চালু করা হয় (৪). বিচারপ্রার্থীদের কাছ থেকে মামলায়  ফ্রি নেওয়া নিষিদ্ধ হয় ৷



সংবিধান সভা ফ্রান্সের পুরাতন ব্যবস্থার বিলোপ সাধন ঘোষণা করেন ৷ মানবাধিকার ঘোষণার সাম্য সৌভ্রাতৃত্ব ও স্বাধীনতার দলিল রূপে সংবিধান সভা কর্তৃক রচিত সংবিধান আজও সারা বিশ্বে আদৃত ৷ রাজতন্ত্রকে সীমাবদ্ধ করে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করেছিলেন সংবিধান সভা ৷

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ফরাসি সংবিধান সভার কৃতিত্ব ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা কর French Constituent Assembly এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟