মহাবলীপুরমের রথ মন্দির The chariot temple of Mahabalipuram.

মহাবলীপুরমের রথ মন্দির।

 মহাবলীপুরমের রথ মন্দির

মহাবলীপুরমের রথ মন্দির The chariot temple of Mahabalipuram.

দক্ষিণ ভারতের স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের ইতিহাস পল্লব আমলের মন্দিরসমূহ থেকে শুরু হয়েছে। এই মন্দিরগুলিতে আমরা সর্বপ্রথম দ্রাবিড় শিল্পরীতির সাক্ষাৎ পাই। মহামল্ল বা মামল্ল গোষ্ঠীর সময়ের স্থাপত্য নিদর্শনগুলি সবই মহাবলীপুরমে পাওয়া গেছে। পল্লব নৃপতি নরসিংহ বর্মন কেবল পাহাড় কেটে গুহামন্দিরই বানাননি বরং এক একটি একশিলা বিমান যাকে রথ বলে তার গঠন পরিকল্পনা করেন। পল্লব আমলে তৈরি সবকটি একশিলা বিমান রথ মহাবলীপুরমে অবস্থিত। এই মহাবলীপুরম মন্দির প্রাচীনতম ও একেবারে সমুদ্রের উপরে অবস্থিত হওয়ায় একে তীর মন্দিরও বলে।


মহাবলীপুরমে রথগুলি নির্মিত হয়েছে ক্রমশ উপর থেকে নিচে প্রস্তরের চটা খসিয়ে। স্তূপী নির্মিত হয়েছে সকলের শেষে, অন্যান্য অঙ্গ নির্মাণের পর। এখানের রথ নয়টি হল-(১) দ্রৌপদী রথ, (২) অর্জুন রথ, (৩) ভীম রথ, (৪) ধর্মরাজ রথ, (৫) নকুল সহদেব রথ, (৬) গণেশ রথ, (৭) ও (৮) দুটি পিদারি রথ, (৯) বলৈয়ন কুট্টে রথ। দ্রৌপদী ও অর্জুন রথ দুটি একই উপপীঠের উপরে দন্ডায়মান। শিলাখন্ডের মধ্যবর্তী অঙ্গের চটা খসিয়ে ভীষ্ম রথ নির্মিত। সর্বদক্ষিণের অভঙ্গটি দিয়ে তৈরী হয়েছে ধর্মরাজ রথ। নকুল সহদেব রথ দ্বিতলও দেখতে হস্তীর পৃষ্ঠদেশের মতো। ভীম ও গণেশ রথ আয়তাকার এবং শিখর মাদলাকৃতি। তবে গণেশ রথ দ্বিতল।


পাহাড় কুঁদে মন্দির নির্মাণের রীতি অতি প্রাচীন। কিন্তু বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্ন বৃহদায়তনের প্রস্তরখণ্ডগুলিকে সামগ্রিক রূপদানের প্রয়াস ভারতীয় শিল্পরীতিতে প্রথম। দ্রৌপদী রথের চারটি অঙ্গ-অধিষ্ঠান, পাদ-ভিত্তি, শিখর ও স্তুপী। তাই এটি চতুর্বর্গ রথ। তবে এর গর্ভগৃহের পিছনের দেয়ালে দুর্গার মূর্তি উৎকীর্ণ আছে। বর্গাকার ও দ্বিতলীয় অর্জুন রথ অষ্টাঙ্গিক। রথের গ্রীব ও শিখর অষ্টকোণ। ধর্মরাজ রথ ত্রিতলীয়, বর্গাকার ও তৃতীয় তলে গর্ভগৃহ আছে। তাতে শিবের সোমস্কন্দ মূর্তি প্রতিষ্ঠিত। দশাঙ্গিক ধর্মরাজ রথ নরসিং বর্মা শুরু করলেও সর্বোচ্চ তলটির কাজ সম্পূর্ণ করেন পৌত্র প্রথম পরমেশ্বর বর্মা। গণেশ রথ সংকীর্ণ মুখমণ্ডপ ও শল্যমূর্তি সজ্জিত। পরিশেষে বলা যায় যে নরসিংহ বর্মা একশিলা বিমান নির্মাণের কাজ শুরু করেন, কিন্তু কোনও বিমানই সম্পূর্ণ করে যাননি। তাঁর মৃত্যুর পর পুত্র দ্বিতীয় মহেন্দ্র বর্মা, পৌত্র প্রথম পরমেশ্বর বর্মা এবং প্রপৌত্র রাজসিংহ তাঁর অসমাপ্ত কাজকে পূর্ণতা দানে সচেষ্ট হন ৷

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ মহাবলীপুরমের রথ মন্দির The chariot temple of Mahabalipuram. এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟