মুঘল আঞ্চলিক সম্প্রসারণে আকবরের ভূমিকা আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি সম্পর্কে আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি

মুঘল আঞ্চলিক সম্প্রসারণে আকবরের ভূমিকা আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি সম্পর্কে আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি

মুঘল আঞ্চলিক সম্প্রসারণে আকবরের ভূমিকা আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি সম্পর্কে আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি

মুঘল আঞ্চলিক সম্প্রসারণে আকবরের ভূমিকা আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি সম্পর্কে আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি


মুঘল আঞ্চলিক সম্প্রসারণে আকবরের ভূমিকা আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি সম্পর্কে আলোচনা কর || আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি 

ধ্যযুগের ভারতীয় শাসকদের মধ্যে সাম্রাজ্যের সংগঠক এবং বিজেতা হিসেবে মহামতি আকবর অনন্য স্থান অধিকার করেছেন। আকবরই সর্বপ্রথম উত্তর ও মধ্যভারত সম্পূর্ণভাবে তাঁর অধীনে আনেন। দক্ষিণেও তিনি রাজ্য বিস্তার করেন। রাজ্যবিজয় সম্পর্কে আকবরের মত হল, "রাজা সর্বদা প্রতিবেশী রাজ্য দখলে সচেষ্ট থাকবেন; তা না-হলে প্রতিবেশী রাজ্য তাঁর বিরুদ্ধে তাসধারণ করবে। সেনাদলকে যদে অভসে রাখা দরকার তা না-হলে সৈন্যরা অকেজো অকেজো হয়ে পড়বে।" আকবরের রাজ্যবিস্তার-নীতি বর্ণনা করতে গিয়ে বিভারিজ বলেছেন যে, "আকবর ছিলেন একজন শক্ত ও দৃঢ় সাম্রাজ্যবাদী, যাঁর সাম্রাজ্যবাদী সূর্যের জ্যোতির কাছে লর্ড ডালহৌসীর সাম্রাজ্যবাদী তারকা মান হয়ে যায়" ভন নোর -এর মতে, "নিছক রাজ্যজয়ের নেশায় আকবর যুদ্ধে প্রবৃত্ত হননি। এ কাজে তাঁর অন্যতম প্রেরণা ছিল পৈতৃক রাজ্য পুনরুদ্ধার করে ভারতের রাজনৈতিক ঐক্য ও সংহতি স্থাপন করা"। আবুল ফজল বলেছেন যে,"আঞ্চলিক স্বৈরাচারী রাজাদের অত্যাচাবে জর্জরিত সাধারণ মানুষকে মুক্তি ও শান্তি দানের উদ্দেশ্যেই আকবর রাজ্য বিজয় নীতি গ্রহণ করেন।" এই মত সর্বাংশে নাহলেও বহুলাংশে সত্য।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

১৫৬১ খ্রীঃ আদম খান ও পীর মহম্মদের নেতৃত্বে মুঘল বাহিনী মালবের সুলতান বাজ বাহাদুরকে পরাস্ত করে মালব অধিকার করে। বাজবাহাদুর ছিলেন কাব্য ও সঙ্গীত-প্রিয় সুলতান। কিন্তু যোদ্ধা ও প্রশাসক হিসেবে তিনি ছিলেন দুর্বল। পীর মহম্মদের দুর্বলতার সুযোগে বাজ বাহাদুর মালব পুনরুদ্ধার করেন। আকবরের সেনাপতি আবদুল্লা খান উজবেগ শেষ পর্যন্ত বাজ বাহাদুরকে চূড়ান্তভাবে পরাস্ত করে মালব অধিকার করেন। মালবে আকবরের প্রত্যক্ষ শাসন স্থাপিত হয়। ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে আকবর আসফ খাঁ'কে গড়কাতাঙ্গা বা গন্ডোয়ানা বিজয়ে প্রেরণ করেন। তখন গন্ডোয়ানার রানি দুর্গাবতী তাঁর নাবালক পুত্র পুত্র বীর বীর নারায়ণের নারায়ণের অভিভাবিকা হিসেবে ওই রাজ্য শাসন পরিচালনা করেছিলেন।দুর্গাবতী বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেও শেষ পর্যন্ত মুঘল বাহিনীর হাতে পরাজিত হন এবং আত্মহত্যা করেন। অবশ্য কয়েক বছর পরে ওই রাজ্যেরই জনৈক বংশধর চন্দ্র শাহকে গণ্ডয়ানার সিংহাসনে স্থাপন করে আকবর ওই রাজ্যের সাথে প্রীতির সম্পর্ক স্থাপন করেন ৷

আকবর ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ, দুরদৃষ্টি সম্পন্ন শাসক। তিনি উপলব্ধি করেন যে, ভারতে আফগানদের তখনও পর্যন্ত স্বদেশীয় এবং মুঘলদের বিদেশী মনে করা হত।ভারতে মুঘল শক্তিকে আফগান শক্তির বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাজপুত শক্তিকে। মুঘলের স্বার্থে ব্যবহার করা দরকার। রাজপুতের মিত্রতা পেলে মুঘলের পক্ষে ভারতে স্থায়ী আধিপত্য স্থাপন সহজ হবে। এজন্য তিনি রাজপুত রাজাদের মুঘলকে বশ্যতাদানের বিনিময়ে স্বায়ত্বশাসনের অধিকার ও অন্যান্য সযোগ সুবিধা দেন। অম্বরের রাজা বিহারীমলের কন্যাকে বিবাহ করে তিনি রাজপুত মৈত্রীর প্রথম ধাপ তৈরি করেন।বিকানীরও বৈবাহিক সম্পর্কে তাঁর বশ্যতা স্বীকার করে। তিনি ভগবান দাসের কন্যার সঙ্গে তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র জাহাঙ্গীরের বিবাহ দেন। আকবরের রাজপুত মৈত্রী নীতি বিশেষ ফলপ্রসূ হয়। জয়পুর, যোধপুর, বুঁদি তাঁর মৈত্রী বন্ধনে আবদ্ধ হন।

একাধিক রাজপুত রাজ্য আকবরের 'বশ্যতামূলক মিত্রতা'র অধীনে এলেও মেবার ছিল এর ব্যতিক্রম। মেবারের রানা উদয় সিংহ আকবরকে 'বিদেশি' না উদয় সিংহ আব আখ্যা দিয়ে তাঁর সাথে কোনোরকম সহযোগিতা বা বন্ধুত্বকে . অস্বীকার করেন। কিন্তু আকবর জানতেন, উত্তর ভারতে মুঘল-প্রভুত্ব স্থাপন করতে হলে মেবার জয় ছিল আবশ্যিক। তা ছাড়া, মেবারের রাজধানী চিতোর ছিল গুজরাটের সাথে দিল্লির জলপথে যোগাযোগের কেন্দ্রভূমি। তাই বন্ধুত্বলাভে ব্যর্থ হয়ে আকবর চিতোর আক্রমণ করেন (১৫৬৭ খ্রিঃ)। উদয় সিংহ জয়মল ও পত্ত নামক দুজন রাজপুত বীরের হাতে চিতোর দুর্গের দায়িত্ব দিয়ে গভীর জঙ্গলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। দীর্ঘ চার মাস যুদ্ধের পর মুঘলবাহিনী চিতোর দখল করে। আসফ খাঁ মেবারের শাসক নিযুক্ত হন। মেবারের পতনের পর বিকানীর, কালিঞ্জর, মাড়াবার আকবরের বশ্যতা স্বীকার করে নেয়। এইভাবে সমগ্র রাজপুতানা আকবরের অধীনস্থ হয়।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

চিতোরের পতন ঘটলেও মেবার সরকারিভাবে আকবরের বশ্যতা অস্বীকার করে এবং মুঘলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ-প্রস্তুতি চালিয়ে যায়। উদয় সিংহের পুত্র রানা প্রতাপ হলদিঘাটের যুদ্ধ আকবরের মিত্রতার আহ্বানকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। স্মিথের মতে, "রানা প্রতাপের অপরাধ ছিল তাঁর স্বদেশপ্রেম, তাই আকবর তাঁকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেন।" সেনাপতি আসফ খাঁ ও মানসিংহের নেতৃত্বে বিরাট মুঘলবাহিনী মেবার আক্রমণ করে। ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে হলদিঘাটের প্রান্তরে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধদ্ধ হয়। শেষ পর্যন্ত রাজপুতরা পরাজিত হয় এবং রানা প্রতাপ জঙ্গলে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি গভীর দুঃখকষ্টের মধ্যে থেকেও বিরোধিতা চালিয়ে যান

রাজপুতানা জয়ের পর আকবর গুজরাট বিজয়ের উদ্যোগ নেন। হুমায়ুন গুজরাট জয় করলেও সেখানে স্থায়ীভাবে মুঘল-আধিপত্য স্থাপিত হয়নি। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে আকবর গুজরাটে আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট হয়েছিলেন। ব্যবসাবাণিজ্যে গুজরাট ছিল খুবই উন্নত। পারস্য, তুরস্ক ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র ছিল গুজরাটের বন্দরগুলি। তা ছাড়া বিদেশি পোর্তুগিজ ও বিদ্রোহী উজবেকগন গুজরাটে আশ্রয় নেবার ফলে আকবর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। গুজরাট নিয়ন্ত্রণ করতে না-পারলে ওখান থেকেই বহিরাগত বা অভ্যন্তরীণ বিপদসৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল। অপদার্থ শাসক তৃতীয় মুজফ্ফর শাহকে বিতাড়িত করার জন্য গুজরাটের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আকবরকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি সসৈন্যে গুজরাট রওনা হন (১৫৭২ খ্রিঃ)। তারপর তিনি একে একে আমেদাবাদ, ব্রোচ, বরোদা, ক্যাম্বে, সুরাট প্রভৃতি স্থান দখল করে নেন। তিনি গুজরাটকে একটি মুঘল সুবায় পরিণত করেন। মির্জা আজিজ কোকা গুজরাটের শাসনকর্তা নিযুক্ত হন।

বাংলার আফগান সুলতান সুলেমান করনানী বশ্যতা স্বীকার করেই শাসন চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর পু দাউদ খাঁ সিংহাসনে বসেই নিজেকে 'স্বাধীন সুলতান' বলে ঘোষণা করেন। তিনি নিজের নামে মুদ্রা চালু করেন এবং খুৎবা পাঠ করান। দাউদ খাঁ মুঘল অধিকৃত জামানিয়া দূর্গ আক্রমণ করলে আকবর মুনিম খাঁ'র নেতৃত্বে এক অভিযান পাঠান। দাউদ খাঁ পাটনা দুর্গে আশ্রয় নেন। এবার স্বয়ং আকবর বিরাট বাহিনী নিয়ে বিহারে উপস্থিত হয়ে হাজিপুর দখল করে নেন। দাউদের পিছু নিয়ে মুনিম খাঁ বালেশ্বরের নিকটবর্তী 'তুকরাই' যুদ্ধে (১৫৭৫ খ্রিঃ) দাউদকে পরাজিত করেন। মুনিম খাঁ নববিজিত বাংলার শাসক নিযুক্ত হন। কিন্তু তাঁর মৃত্যু হলে মুঘলবাহিনীর মধ্যেই বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় । সেই সুযোগে দাউদ খাঁ বাংলার স্থান দখল করে নেন । অবশেষে তুরাবতী খান ও টোডরমলের যৌথ আক্রমণে পরাজিত ও বন্দি রাজমহলের যুদ্ধে (১৫৭৬ খ্রিঃ) ৪) দাউদ দাউদ খাঁ খা পর হলে বাংলার স্বাধীন সুলতানির অবসান বসান ঘটে। তবে বাংলার মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেও গ্রাম বাংলার বারো জন ভূম্যধিকারী অসহযোগিতা চালিয়ে যান। এঁরা ইতিহাসে বারো ভুঁইয়া নামে খতে। এরপর আকবর উত্তর পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চল দখল করে মুঘল সাম্রাজ্যের নিরাপত্তাকে সুদৃঢ় করেন। ১৫৮৫ থেকে ১৫৯৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি কাবুল, কাশ্মীর, সিন্ধু ও কান্দাহার অধিকার করেন।

উত্তর ও দক্ষিণের সমন্বয়ে এক ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ে তোলাই ছিল তাঁর স্বপ্ন। কেবল রাজ্যজয় ছাড়াও কিছু বাস্তব প্রয়োজন আকবরকে দক্ষিণ ভারত অভিযানে বাধ্য করেছিল। কারণ তখন দক্ষিণ ভারতে আহম্মদনগর, বিজাপুর, গোলকুন্ডা ও খান্দেশ-এই চারটি রাজ্য ছিল। কিন্তু এদের মধ্যে মিল তো ছিলই না, পরন্তু ছিল পারস্পরিক দ্বন্দ্ব। ফলে পোর্তুগিজরা খুব সহজেই দক্ষিণে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে। তারা ভারতীয়দের ধর্মান্তরিত করতে থাকে এবং অত্যাচারও চালাতে থাকে। এমনকি সিয়াপন্থী দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য গুলিও ধর্মীয় অত্যাচার চালাতে থাকে। ড. ত্রিপাঠীর মতে, "রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, ধর্মীয় ও জাতিগত গোঁড়ামির শিকার এবং বিধর্মীদের অত্যাচার, যা দক্ষিণ ভারতে তা আকবরের পক্ষে নীরবে সহ্য করা সম্ভব ছিল না।" এই অবস্থায় আকবর প্রথমে দক্ষিণে রাজ্যগুলিকে তাঁর বশ্যতা স্বীকারের আহ্বান জানান। কিন্তু একমাত্র খাদেশ ছাড়া কেউই সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তখন তিনি প্রথমে আহম্মদনগরের বিরুদ্ধে একটি অভিযান পাঠান। আহম্মদনগরের চাঁদবিবি বিপুল বিক্রমে যুদ্ধ চালিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত আহম্মদনগর মুঘল অধিকৃত হয় (১৬০০ খ্রিঃ)।

খান্দেশের সুলতান রাজা আলি খাঁ আকবরের প্রতি বশ্যতা জানান। কিন্তু তাঁর পুত্র মীরণ বাহাদুর শাহ পিতার সিংহাসনে বসে মুঘলের প্রতি বশ্যতা তুলে নেন। আকবর নিজেই খান্দেশের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে বুরহানপুর অধিকার করেন। এর পর দক্ষিণের অন্যতম দুর্ভেদ্য দুর্গ আসিরগড় তিনি অবরোধ করেন। আসিরগড় দুর্গ রক্ষায় পূর্তুগীজরা মীরণ বাহাদুরকে সাহায্য করে। মুঘল সেনা বহু চেষ্টায় এই দুর্গ দখলে ব্যর্থ হয়। এদিকে উত্তর ভারতে যুবরাজ সেলিম বিদ্রোহ ঘোষণা করায় আকবর আগ্রায় ফিরে আসার জন্যে ব্যস্ত হন। তিনি সন্ধির শর্ত আলোচনার ছলে মীরণ বাহাদুরকে শিবিরে এনে বন্দী করেন। আসিরগড় ১৬০১ খ্রীঃ অধিকার করেন। আসিরগড়ই ছিল আকবরের রাজ্যজয় নীতির শেষতম ঘটনা। এর পর তিনি তাঁর বিজয়ী তরবারি কোষবদ্ধ করেন।

এইভাবে শক্তি ও সম্প্রীতির সমন্বয়ে সম্রাট আকবর প্রায় সমগ্র উত্তর ও মধ্য ভারত এবং দক্ষিণ ভারতের কিছু অঞ্চলে মোগল সাম্রাজ্যের সীমানাকে সম্প্রসারিত করেছিলেন।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟