তাম্রপ্রস্তর যুগের গুরুত্ব আলোচনা করো।

তাম্রপ্রস্তর যুগের গুরুত্ব আলোচনা করো।

 তাম্রপ্রস্তর যুগের গুরুত্ব আলোচনা করো।

তাম্রপ্রস্তর যুগের গুরুত্ব আলোচনা করো।

প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসে নব্যপ্রস্তর যুগের প্রকৃতি ছিল মিশ্র, বিশুদ্ধ নব্যপ্রস্তর যুগের পরিধি ছিল খুবই সীমিত। কারণ নব্যপ্রস্তর যুগের সূচনার কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হয়েছিল ধাতুর ব্যবহার। নব্যপ্রস্তর যুগের শেষের দিকে মানুষ যে ধাতুর সঙ্গে প্রথম পরিচিত হয় তা হল তামা। তামার ব্যবহারের সঙ্গে ওই যুগে পাথরের ব্যবহারও প্রচলিত ছিল। তাই এই যুগটিকে পুরাতাত্ত্বিকরা তাম্রপ্রস্তর যুগ বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে এই যুগের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।


বিভিন্ন কারণের সমাবেশের জন্য তাম্রপ্রস্তর যুগ ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এইযুগে মানুষ প্রথম পাথরের ব্যবহারের পাশাপাশি তামার তৈরি জিনিস ও হাতিয়ার ব্যবহার করতে শুরু করে। তামা গলানোর শিল্প এই যুগের মানুষরা আয়ত্ত করেছিল। এই যুগে কুমোরের চাকা ব্যবহার করে মৃৎপাত্র নির্মিত হতে থাকে। চাকার সাহায্যে তৈরি লাল কালো মাটির পাত্রে এই যুগের মানুষরা প্রথম চিত্র অঙ্কন শুরু করে। রান্না করা, খাদ্য ভোজন ও সংরক্ষণ ইত্যাদি দৈনন্দিন কাজে মাটির পাত্রগুলি ব্যবহৃত হতে থাকে।


তাম্রপ্রস্তর যুগের মানুষরাই প্রথম গ্রাম গড়ে তুলেছিল। পূর্ববর্তী যুগের তুলনায় তারা উন্নত প্রযুক্তি ও অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে তারা অনেক বেশি খাদ্যশস্য উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়েছিল। পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতে উৎপন্ন হত ধান আর পশ্চিম ভারতে গম ও বার্লি। তাদের খাদ্যের তালিকায় আমিষ খাবার অন্তর্ভুক্ত ছিল। পূর্ব ভারতের অধিবাসীদের প্রধান খাদ্য ছিল ভাত এবং মাছ। পশ্চিম ভারতের মানুষরা বিভিন্ন প্রাণীর মাংস ভক্ষণ করতো।


রাজস্থান ও পশ্চিম মহারাষ্ট্রে তাম্রপ্রস্তর যুগের অধিবাসীরা ছিল সম্ভবত উপনিবেশিক। তাদের প্রথম উপনিবেশ গড়ে ওঠে মালব ও মধ্যভারতের কায়াথাওরানে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে তাম্রপ্রস্তর যুগের উপনিবেশগুলির কাঠমোর ভগ্নাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। এই পর্বে মৃতদেহকে সমাহিত করার পদ্ধতিও বিভিন্ন ধরনের ছিল। মহারাষ্ট্রে  মৃতদেহ সমাহিত করা হত উত্তর-দক্ষিণদিক করে, দক্ষিণ ভারতে পূর্ব-পশ্চিমদিক করে। মহারাষ্ট্রে মৃতদেহের পূর্ণ সমাধি প্রথা প্রচলিত ছিল।


সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, তাম্রশ্মীয় যুগে এসে মানুষের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি করার প্রবণতা অনেক বেশি হয়েছিল। মানুষের চেতনার মধ্যে পরিবর্তন কিছুটা হলেও ঘটতে শুরু করেছিল। মানুষ পূর্ববর্তী যুগের তুলনায় সর্বক্ষেত্রে উন্নতির মধ্য দিয়ে গ্রামীণজীবন থেকে নগরজীবনে প্রবেশের পথ সুদৃঢ় করতে মনোযোগী হয়েছিল। আর এই গ্রাম্য সভ্যতা বা গ্রামীণ জীবনই ছিল আদিম গুহাবাসী থেকে নগরায়ন পর্বে উত্তরণের মধ্যবর্তী পর্যন্ত, শিকার ও পশুপালনভিত্তিক অর্থনীতি থেকে কৃষি ও বাণিজ্য অর্থনীতিতে উত্তরণের মধ্যবর্তী পর্যায় এবং সর্বোপরি আদিম সাম্যবাদী সমাজ থেকে দাস সমাজে উত্তরণের মধ্যবর্তী পর্যায় ৷

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ তাম্রপ্রস্তর যুগের গুরুত্ব আলোচনা করো। এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟