সভা ও সমিতির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো

সভা ও সমিতির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো

সভা ও সমিতির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

সভা ও সমিতির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো

ঋগ্‌বৈদিক যুগে প্রশাসন ব্যবস্থায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ পাওয়া যায় সেগুলি হল-সভা ও সমিতি। তৎকালীন প্রশাসনিক ব্যবস্থায় এই দুটি প্রতিষ্ঠানের গুরত্বপূর্ণ অবদান ছিল বলে ঐতিহাসিকরা মনে করেন। ঋগ্বেদের ষষ্ঠ ও অষ্টমমণ্ডলে 'সভা' এবং প্রথম ও নবমমণ্ডলে সমিতি শব্দটি বারে বারে বিশেষভাবে উল্লিখিত হয়েছে। এককথায় সভা ও সমিতিকে উপজাতীয় পরিষদ বলা যায়। রাজার কাজকর্মের উপর এই দুটি পরিষদের প্রভাব ছিল অপরিসীম।

ঋগবেদে সভা বলতে কখনো কখনো সভাকক্ষ বোঝানো হয়েছে। আবার সভাকে 'প্রতিষ্ঠান' হিসাবেও উল্লেখ করা হয়েছে। লুডউইগের মতে, সভা ছিল উপজাতি প্রধানদের পরিষদ, তবে অধ্যাপক জিমার সভাকে গ্রাম পরিষদ বলে অভিহিত করেছেন। মনে হয় 
সমিতির তুলনায় সভার সদস্যরা সংখ্যায় অনেক কম ছিল। গোষ্ঠীর অভিজাত বা মাধবনরই সভার সদস্য ছিলেন। সভাগুলি-

  1. প্রথমদিকে যে-কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারত, তবে পরবর্তীকাছে একমাত্র বিচারের ক্ষেত্রেই সিন্ধান্ত গ্রহণের অধিকারী ছিল।
  2. অগ্‌বৈদিক যুগের তুলনায় পরবর্তী বৈদিকযুগে সমিতির ক্ষমতা অনেক বেড়েছিল।
  3. শুধুমাত্র রাজনীতিই সভার আলোচ্য বিষয় ছিল না, সামাজিক অনুষ্ঠান ও আয়োজন (পাশা খেলা)ও সেখানে হত।

ঋগ্বেদের বিভিন্ন উল্লেখ থেকে মনে হয় সমিতি ছিল উপজাতির সর্বসাধারণের। পরিষদ। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে উপজাতির সকল বয়স্ক লোকই এই পরিষদের সদস্য হতেন। লুডউইক সমিতিকে উপজাতীয় পরিষদ বলে অভিহিত করেন। ড. রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে, সমিতি ছিল কেন্দ্রীয় পরিষদ। সমিতিগুলিতে-

  1. রাজা সমিতির অধিবেশনে উপস্থিত থাকতেন। সম্ভবত তিনি এর অধিবেশনের পৌরোহিত্য করতেন।
  2.  পরবর্তী বৈদিকযুগে সমিতির ক্ষমতা ও মর্যাদা অনেক কমে গিয়েছিল।
  3.  ঐতিহাসিক রোমিলা থাপার-এর মতে, গণরাজ্যগুলিতে সভা অপেক্ষা সমিতির ক্ষমতা অনেক বেশি ছিল। সে যুগে সমিতি যথেষ্ট সক্রিয় ছিল বলে গোষ্ঠীপতি স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠতে পারেনি।

এইভাবে দেখা যায় 'সভা' ও 'সমিতি' নামক দুটি গণ প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠান তৎকালীন প্রশাসন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এই দুটি উপজাতীয় পরিষদ কেবল যে রাজশক্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখত তাই নয়, যেসব উপজাতিদের কোনো নির্বাচিত রাজা ছিল না সেই সমস্ত এলাকার শাসনকাজ পরিচালিত হত 'সভা' ও 'সমিতি'-র দ্বারা। একে প্রাচীন গ্রিসের 'পলিশ' ব্যবস্থার মতো বলা যায়।
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ সভা ও সমিতির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟