লেসেফিয়ার তত্ত্ব বা অবাধ বাণিজ্যনীতি বলতে কী বোঝো?

লেসেফিয়ার তত্ত্ব বা অবাধ বাণিজ্যনীতি বলতে কী বোঝো?

 লেসেফিয়ার তত্ত্ব বা অবাধ বাণিজ্যনীতি বলতে কী বোঝো?

লেসেফিয়ার তত্ত্ব বা অবাধ বাণিজ্যনীতি বলতে কী বোঝো?


ব্রিটেনের অর্থনৈতিক ইতিহাসে ব্যক্তি স্বাধীনতাভিত্তিক অবাধ অর্থনীতির উদ্ভব হয়েছিল অষ্টাদশ শতাব্দীতে । এই বিশেষ অর্থনৈতীক ব্যাবস্থা লেসোফিয়ার তত্ত্ব নামে পরিচিত । এই নীতির মর্মার্থ ছিল এই যে শিল্প ও বাণিজ্যের বিষয়ে নূন্যতম রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ বাঞ্ছনীয় হয়েছিল । এটি ছিল অনেকাংশেই মার্কেন্টাইল মতবাদের নানা ত্রুটি বিচ্যুতির বিরুদ্ধে একটি প্রতিক্রিয়া । এর প্রবক্তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল মার্কেন্টাইল মতবাদ আর্থিক উন্নয়ন এবং সম্পসারনের পরিপন্থী । এরা মনে করতেন যদি ব্যক্তি বা বেসরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে আর্থিক উদ্যোগ গ্রহন করলে উন্নয়নের হার বৃদ্ধি পাবে ৷ বাণিজ্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া শুল্ক প্রাচীর ভেঙে দিলে মোট বাণিজ্যের পরিমান উল্লেখযোগ্য তাবে বৃদ্ধি পাবে ।


মার্কেন্টাইল মতবাদের পরিপূর্ণ বিকাশের যুগে জন্মগ্রহন করেছিলেন অ্যাডাম স্মিথ । তিনি বলেছিলেন যে ব্যক্তির অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ওপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা চলবে না । রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ও নিয়ম নূন্যতম হতে হবে । স্বাধীন ও মুক্ত পরিবেশেই ব্যক্তির অর্থনৈতিক ক্ষমতার বিকাশ এবং সর্বাঙ্গীন কল্যান সম্ভব। ব্যক্তির কল্যানের অর্থ সমাজের কল্যাণ, এই বক্তব্যই পরবর্তীকালে অবাধ ও মুক্ত আর্থনীতির মূল সূত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে । স্মিথ বিশ্বাস করতেন শুধুমাত্র শ্রমের ফলেই সম্পদ সৃষ্টি হতে পারে ৷ ব্যক্তির পক্ষে যা সত্য রাষ্ট্রের পড়েও তাই সত্য । তাই প্রত্যেক রাষ্ট্রের উচিত প্রাকৃতিক পরিস্থিতি ও উপকরণ অনুকরণ অনুযায়ী কিছু নির্দিষ্ট পন্য তার দেশেই অপেক্ষাকৃত স্বল্প উৎপাদনে ব্যয়ে উৎপাদন করা । যে গুলির উৎপাদন ব্যয় অপেক্ষাকৃত বেশি সেইসব পণ্য ওই দেশ আমদানি করবে । এই ভাবেই আন্তর্জাতিক বিশেষিকরণ সম্ভব । এর জন্যই পৃথিবীর সব দেশের মধ্যে অবাধ ও মুক্ত বানিজ্য চলা উচিত।



 উপরিউক্ত মতাদর্শ স্মিথ তার "weath of nations" গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেছিলেন । ব্রিটেনে লেসেফেয়ার অর্থনীতি প্রয়োগের পশ্চাতে কিছু বানিজ্যিক সুবিধার প্রশ্ন ছিলে । নেপোলিয়ন যুদ্ধের পরবর্তীকালে ইংল্যান্ড স্বর্ণমান ব্যাবহার করতে শুধু করে, এমনকি ইংল্যান্ড আমদানি বাণিজ্যের তুলনায় রপ্তানি বাণিজ্যের পরিমান বহুগুন বৃদ্ধি করে । স্বর্ণমান চালু করার পর থেকেই ইল্যান্ডের রপ্তানির মূল্য স্বর্ণের মাধ্যমে প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় । প্রধানত এই কারনেই ইংল্যান্ডের বৈদেশিক বাণিজ্যকেও অবাধ করে দেয় ।


লেসেফেয়ার অর্থীতির তাত্ত্বিক ভিত্তি ছিল মুক্ত ও অবাধ প্রতিযোগিতা, এই নীতিতে বিশ্বাসী ধনবিজ্ঞানীদের বিশ্বাস ছিল এই যে যদি মানুষকে কৃষি শিল্প ও বাণিজ্যের পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা প্রকার বিধিনিষেধ ও নিয়ন্ত্রন থেকে মুক্তি দেওয়া হয় তাহলে সে তার নিজের সুবিধাতে সর্বপৃষ্ঠ পনথাই অনুসরণ করনে । এতে শেষ পর্যন্ত সমগ্র মানব জাতি উপকৃত হবে । কয়েকটি নিয়মের মাধ্যমে লেসেফেয়ার অর্থনীতি পরিচালিত হয় । এগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল। ① প্রতিযোগীতার নিয়ম ② স্বার্থরতার নিয়ম,(৩)চাহিদা ও যোগানের নিয়ম, ④ মজুরির নিয়ম, ও আন্তর্জাতিক বিনিময়ের মাধ্যম এবং বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রেও সরকারি হস্তক্ষেপ না থাকলে উভয় দেশই বাণিজ্যিক দিক থেকে লাভবান হবে । বর্তমান পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ ধনতান্তিক রাষ্ট্রেই এই ব্যাবকথা প্রচলিত আছে ।

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ লেসেফিয়ার তত্ত্ব বা অবাধ বাণিজ্যনীতি বলতে কী বোঝো? এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟