চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের নানা রকম ত্রুটি থাকার ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতবর্ষের অন্যত্র কয়েক ধরনের ভূমি রাজস্ব বন্দোবস্ত চালু করেছিল। যেমন, মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে রায়তওয়ারী বন্দোবস্ত। আঠারো শতকের শেষ দিকে কোম্পানি ঐ অঞ্চলে একটি সুবিন্যস্ত ভূমিবন্দোবস্ত গড়ে তুলতে আগ্রহী হয়। প্রত্যেক রায়তের নিজস্ব জমি জরিপ করা হয় এবং তার সঙ্গে সঙ্গে জমির উৎপাদিকা শক্তি পরীক্ষা করে ভূমিরাজস্ব নির্ধারিত করা হয়। জমিদার বা কোনও মধ্যবর্তী শ্রেণীকে বাদ দিয়ে কোম্পানি সরাসরি রায়তদের কাছ থেকে ভূমিরাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা প্রবর্তন করে। এই বন্দোবস্তকেই বলে রায়তওয়ারী ব্যবস্থা।
এই ব্যবস্থা গড়ে তোলার পিছনে আলেকজান্ডার রীড এবং টমাস মানরো নামক দুই ইংরেজ কর্মচারীর কৃতিত্ব অনস্বীকার্য। মাদ্রাজ, মহীশূর (টিপুর কাছ থেকে-জিতে নেওয়ার পর) এবং নিজাম কর্তৃক ছেড়ে দেওয়া অঞ্চলে কোম্পানি এই ভূমিরাজস্ব নীতি প্রয়োগ করে। তবে এই বন্দোবস্তের পিছনেও ছিল কোম্পানির রাজস্ব বৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং রায়তওয়ারী বন্দোবস্তের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি। তবে এই বন্দোবস্তের ফলে প্রকৃত উৎপাদক বা কৃষকদের অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতন বিভিন্ন স্তরের জমিদার ও ভূমিস্বত্বভোগীদের দ্বারা উৎপীড়িত না হয়েও রাজস্ববৃদ্ধির চাপে এবং কোম্পানির কর্মচারীদের হাতে চাষীদের হাল ছিল একই রকম।'
বোম্বাই প্রেসিডেন্সি এবং ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের পর মারাঠাদের কাছ থেকে পাওয়া অঞ্চলেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রায়তওয়ারী বন্দোবস্ত চালু করেন। মাদ্রাজ এবং বোম্বাই উভয় অঞ্চলেই রাজস্ব নির্ধারিত হত তিরিশ বছরের জন্য। কোনও রায়ত ভূমিরাজস্ব দিতে না পারলে তার জমি বাজেয়াপ্ত হত। এই বন্দোবস্তেও কৃষকদের স্বার্থরক্ষার পরিবর্তে দুর্দশা বৃদ্ধি পায়।
📛সম্ভাব্য প্রশ্নে গুলি হলঃ
(১). রায়তওয়ারী বন্দোবস্তের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ফলাফল গুলি উল্লেখ কর ৷
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ রায়তওয়ারী বন্দোবস্ত সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য