ইক্তা ও জায়গিরের মধ্যে তুমি কীভাবে পার্থক্য করবে

ইক্তা ও জায়গিরের মধ্যে তুমি কীভাবে পার্থক্য করবে

ইক্তা ও জায়গিরের মধ্যে তুমি কীভাবে পার্থক্য করবে

ইক্তা ও জায়গিরের মধে তুমি কীভাবে পার্থক্য করবে

ইক্তা ও জায়গিরের মধ্যে  পার্থক্য আলোচনা কর

রিত্রগত ভাবে মোঘল রাজস্ব ব্যবস্থায় ইক্তা এবং জায়গিরের মধ্যে বিশেষ কতকগুলি পার্থক্য নিরূপন করেছেন ঐতিহাসিকরা ৷ ইক্তা ব্যবস্থা হল সুলতানি যুগের একটি ব্যবস্থা, যে ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সুলতানরা চূড়ান্ত মাত্রায় রাজস্ব নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, অপরিক অর্থে ইক্তা কথার অর্থ হল ভূমির এক অংশ, ইলতুৎমিসের সময়কালে থেকে এই ব্যবস্থা চালু করে ৷ তুর্কি অভিজাতদেরে ইক্তা বিলি করে ক্ষুদ্র ভূখন্ডের ওপর রাজস্ব ভোগ দখলে অধিকারী দেওয়া হয়, সেই কারনেই ইক্তা মালিক শুধু মাত্র ভূমিরাজস্বের সংগ্রহ তিনি ভূমির মালিক নন, ইক্তাদারকে ভূসম্পত্তির অধিকার না দিয়ে সুলতানারা কার্যত একটি ইজারাদারি প্রথার সৃষ্টি করলেন, অর্থাৎ এই ইক্তাদার হল, সুলতানের অধীনস্ত ভূমি রাজস্বের সংগ্রহ রাজকর্মচারী ।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

অন্যদিকে ইক্তা ব্যবস্থার সঙ্গে একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে জায়গিরদারি ব্যবস্থা, রাজত্ব নির্ধারণ ও আদায়ের অধিকার, এই দুটি গোপনেক সু নিদিষ্ট ভাবে গড়ে তোলার জন্য তৈরি হয় জায়গির দারি প্রথা ৷ জায়গির শব্দের অর্থ হল দখল বা কোনো স্থানের অবস্থা, ফরাসি শব্দ জায়গিরের প্রয়োগ আকবরেব রাজত্বের আগে দেখা যায় নি । মোঘল শাসন ব্যবস্থার প্রথম দিকে সম্রাটেরা ইক্তা শব্দটি ব্যবহারে বেশি আগ্রহ দেখান, ইরফান হাবিরের মতে 'ইক্তা এবং জায়গির শব্দটির মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই? তাঁর মতে' 'সুলতানি যুগে প্রচলিত ইক্তা প্রথা থেকে মোঘল যুগে জায়গির প্রখা বাস্তবিক রূপ পেয়েছে । তবে ইক্তা ব্যবস্থার সূচনা হয় সেই পর্বে সুলতানের ইক্তাদারদের কিছু স্বাধীন কর্তৃত্ব মেনে নিয়েছিলেন ৷ বলবনের পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে তা ইক্তা বিলি বণ্টনের ব্যাপারে সুলতানের মতামত চূড়ান্ত হতে থাকে । আবার ফিরোজশাহীর রাজত্বকালে ইক্তা ব্যবস্থা বংশানুক্রমিক লোপ পায় । তবে জায়গির প্রথা কখনোই বংশানুক্রমিক লোপ পায়নি ।

বাবর ভারতে এসে ইক্তা প্রথার সঙ্গে পরিচিত হন । তিনি বুঝে ছিলেন আফগান দল পতিদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় লিপ্ন হওয়া সম্ভব নয় ৷ তাই তিনি আফগানদের ভূমির অধিকার কেড়ে নেন নি ৷ তিনি উজবকদের ভূমিরাজস্বকে ভোগের অধিকার পেতেন । বাবরের এই ভূমি বন্দোবস্ত ইক্তার অনুকরনেই গড়ে উঠেছিল । যদি ও এই বন্দোবস্তকে বলা হয়া 'ওয়াঝ' জমির প্রাপককে বলা হত 'ওয়াঝদার' তবে ইক্তা ও জায়গির প্রথার সঙ্গে পার্থক্য রয়েছে ৷ যেমন ইক্তা পূর্ণরবণ্টন করা যেত, কিন্তু ওয়াঝ পুনরায় পূর্ণরবণ্টন করা যেত না, আবার যিনি জায়গিরদার তিনি বেতনের সমতুল্য পরিমান রাজস্ব নিতে পারতেন ।

সাধারনভাবে সুলতানি আমলে প্রচলিত ইক্তা ব্যবস্থা মোঘল জায়গির ব্যবস্থার পূর্ববর্তী বলে মনে করা হত । ইরফালা হাবিব বলেছেন যে, জায়গির ব্যবস্থার মধ্যে ইক্তা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য গুলো আংশিক এবং কিছুটা পরিবর্তিত রূপে বজায় ছিল ‌৷ এছাড়াও জায়গির প্রশাসনের সঙ্গে 'সরকার এবং পরগনা কোনো সমর্থ ছিল না । জায়গিরদারদের স্থায়ী শর্ত ছিল না । সাধারণত তিন বা চারবছর অন্তর জায়গির হস্তান্তরিত হত । জায়গির গুলোকে তিনটি শ্রেনিতে ভাগ করা হত, ১) জোর তলব, ২) ঔষধ, 3) রায়তি । ইক্তা এবং জায়গিরদারি পদ্ধতির মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য ছিল, কিন্তু ইক্তা পদ্ধতিতে এ ধরনের কোনো বিভাজন ছিল না ৷ সুতরাং মূলগত ভাবে ইক্তা ও জায়গিরর মধ্যে বহুবিধ পার্থক্য বিদ্যমান ।

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ইক্তা ও জায়গিরের মধ্যে তুমি কীভাবে পার্থক্য করবে এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟