অগ্রাহার ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর

অগ্রাহার ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর

 অগ্রাহার ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর

অগ্রাহার ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর


অগ্রগ্রহার ব্যবস্থা।


গুপ্তযুগে জমির রাজকীয় এবং গোষ্ঠী মালিকানা হ্রাস পায় এবং ব্যক্তিগত মালিকানার প্রসার হয়। এই পরিস্থিতির মূল উৎস ছিল অগ্রহার ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য পরিচয়া হল ব্রাহ্মণদের উদ্দেশ্যে নিষ্কর ভূমিদান, খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে এই ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। তবে রাজাদের পাশাপাশি কোনো অর্থশালী ব্যক্তিবর্গ এই দানকার্য করতে পারতেন। ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পর শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি এই ধরনের দান পেতে থাকে এবং দাতা হিসেবে শাসকগোষ্ঠী ভূমিকা নেন। দান গ্রহীতারা প্রাপ্ত জমি ও গ্রাম থেকে আদায়কৃত রাজস্ব ভোগ করার পাশাপাশি গ্রামীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব ভোগ করতেন। এইভাবে দানগ্রহীতা ক্রমে প্রশাসন ও বিচারবিভাগের মুখ্য পরিচালকে পরিণত হয়। ধীরে ধীরে যোদ্ধাদেরও গ্রামদান ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।


অগ্রহার ব্যবস্থাকে গ্রামীণ সামন্ততন্ত্রের প্রধান উপাদান বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। কারণ, এখান থেকে ভূমিব্যবস্থার ব্যক্তিগত মালিকানার প্রসার ঘটে এবং ভূস্বামীদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।


সপ্তম ও অষ্টম শতকে অগ্রহার ব্যবস্থার বিকাশের ফলে স্বনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতির জন্ম হয়েছিল। প্রয়োজনের অতিরিক্ত উৎপাদনে কৃষকদের আদৌ আগ্রহ ছিল না। ফলে ব্যাপক উৎপাদন হত না। এই অবস্থা বাণিজ্যের পক্ষে প্রতিকূল ছিল। ড. রামশরণ শর্মা সমকালীন মুদ্রা ব্যবহারের স্বল্পতা দ্বারা বাণিজ্য হ্রাসের তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন। শিল্প ও বাণিজ্যের অবনতির ফলে বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে নগরের গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছিল। অর্থনীতি মূলত গ্রামকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল।


ঐতিহাসিক ড. দীনেশচন্দ্র সরকার আদি-মধ্যযুগীয় তাম্রশাসনগুলি বিচার করে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, 'অগ্রহার ব্যবস্থা' রাজার ক্ষমতা হ্রাস বা মুদ্রা অর্থনীতির অবক্ষয়ো ইঙ্গিত দেয় না। তাঁর মতে, অগ্রহার ব্যবস্থার ফলে রাজার অর্থ বা প্রতিপত্তি হ্রাস পেত  না, বরং তা বৃদ্ধির সম্ভাবনায় ছিল। ঐতিহাসিক রণবীর চক্রবর্তী সমকালীন রাজ অনুশাসনগুলি উল্লেখ করে দেখিয়েছেন যে, রাজা দানগ্রহণকারী ব্যক্তিদের রাজবিরোধী কোনো প্রকার কাজ থেকে বিরত থাকার স্পষ্ট ও কঠোর নির্দেশ জারি করতেন। ড. সরকারের মতে, অদ্রাহার ব্যবস্থা ও রাজকোষের দুর্বলতার মধ্যে যোগসূত্র খোঁজা অযৌক্তিক।


তবে অগ্রহার ব্যবস্থার প্রবর্তনের ফলে এমন একটি দানগ্রহীতা শ্রেণির সৃষ্টি হয়েছিল, যারা দানকৃত গ্রামের অধিবাসী এবং সম্পদের ওপর অধিকার এবং নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে সক্ষম হয়েছিল। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দানগ্রহীতা এবং অন্যান্য গ্রামীণ গোষ্ঠীগুলির মধ্যে সম্পর্ক চিহ্নিত ছিল প্রাধান্য এবং শোষণের দ্বারা। রাষ্ট্রীয় স্তরে শোষণ এবং নিয়ন্ত্রণের বিকল্পে আরো নিকটবর্তী ব্রাহ্মণদের উৎপীড়ন নিঃসন্দেহে সাধারণ কৃষকদের ওপর আরো উচ্চস্তরের দমননীতি কায়েম করা হয়েছিল।ধ

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ অগ্রাহার ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟