জাতীয় কংগ্রেসের নরমপন্থী নেতাদের কর্মসূচী ও ব্যর্থতা লেখো।
১৮৮৫ খ্রিঃ জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯০৫ খ্রিঃ পর্যন্ত কুড়ি বছর সময়কালকে জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম যুগ বলে অভিহিত করা হয়। এই সময়ের কংগ্রেসের নেতৃত্ব ছিল উদারপন্থী নেতাদের হাতে। তাঁরা আবেদন-নিবেদনের মাধ্যমে তাঁদের দাবী ইংরেজ সরকারের নিকট পেশ করত। এজন্য জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম পর্বের নেতারা নরমপন্থী নেতা রূপে পরিচিত ছিলেন। তাদের কার্যকলাপ আবেদন-নিবেদন নীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম পর্বের নেতাদের কর্মসূচীঃ
জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম কুড়ি বছরে কার্যসূচীর প্রধান অঙ্গ ছিল ভারতবাসীর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উত্থাপন করা।-
প্রথমতঃ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী অর্থনীতি কিভাবে ভারতের হস্তশিল্প ধৃৎস করে শিল্প-বিকাশের পথ বন্ধ করছে এবং ভারতে অর্থনীতিকে ধবংস করছে, কংগ্রেসের নেতারা তাহা আলোচনা করেন।
দ্বিতীয়তঃ প্রশাসনের উচ্চ-পদে নিয়োগ এবং বেতন-বৃদ্ধির দাবীকে কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত করেন। জনশিক্ষা, জনস্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার সুবন্দ্যোবস্তের দাবীর কর্মসূচী গ্রহন করা হয়।
তৃতীয়তঃ স্বাধীনচিন্তা, মাতাপ্রকাশ, সলবদ্ধ হনার স্বাধীনতাকে কেপা কবে নাগদির অধিকার রক্ষার কর্মসূচী কংগ্রেস গ্রহন করেছিল।
চতুর্থতঃ অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে ব্রিটিশ দ্রব্য বয়কট করে আরতীয় কা ব্যবহারের পারী উত্থাপন করা হয়। নেশের সারিদ্রা, শিল্প ও কৃষির দূরাবস্থার জন ব্রিটিশ শাসনকে দায়ী করা হয়।
প্রথম পর্বের জাতীয় কংগ্রেসের সীমাবদ্ধতাঃ ক) প্রথম পর্বের জাতীয় কংগ্রোদের নেতৃবৃন্দ প্রায় সকলেই ছিলেন উচ্চ-শ্রেণীর এবং অতিরিক্ত পাশ্চাত্য মনোয়ারা তাঁরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষপাতী ছিলেন। স্বভাবতই তারা স্বাধীনতা এমনদি পূর্ন স্বায়ত্তশাসনের কথাও ভাবতে পারেন নি। খ) জাতীয় কংগ্রেসের আন্দোলন প্রধানত। উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। গ) শ্রমিক ও কৃষকদের সুখ-সুম দুরীকরণে কংগ্রেস কোনো সদর্থক ভূমিকা গ্রহন করতে পারেনি। ঘ) বৃহত্তর মুগরিয় সমাজের উপর কংগ্রেসের তেমন কোনো প্রভাব ছিল না। ৬) কংগ্রেসের মূল ত্রুটি ছিদ সংকীর্ণ সামাজিক ভিত্তি।
ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম যুগের নেতৃবৃন্দের কার্যকলাপাত অনেকে 'রাজনৈতিক ভিক্ষাবৃত্তি' বলে অভিহিত করেছেন। অশ্বিনীকুমার দত্ত কংগ্রেদে বার্ষিক অধিবেশনকে 'তিন দিনের তামাসা' বলে অভিহিত করেছেন। তবে জারীর কংগ্রেসের এই কুড়ি বছরের ইতিহাসে কংগ্রেস ব্রিটিশদের থেকে কোনো দাবি আদায় করতে না পারলেও জনসাধারণের কাছে ব্রিটিশ শাসনের প্রকৃত স্বরূপ উদঘাটিনে ব জাতীয়তাবাদী চেতনা সঞ্চারে সমর্থ হয়েছিল।