ত্রিপুরী কংগ্রেসের অধিবেশনের তাৎপর্য লেখ?

ত্রিপুরী কংগ্রেসের অধিবেশনের তাৎপর্য লেখ?

 ত্রিপুরী কংগ্রেসের অধিবেশনের তাৎপর্য লেখ?


ত্রিপুরী কংগ্রেসের অধিবেশনের তাৎপর্য লেখ?

 ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশন বসে মধ্যপ্রদেশের ত্রিপুরি গ্রামে। এই অধিবেশনে সুভাষচন্দ্রকে পুনরায় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতির পদে মনোনয়নের দাবি ওঠে। এই দাবি তোলেন নাম্বুদিরিপাদ, সুন্দরাইয়া সহ আট জন বিক্ষুব্ধ বামপন্থী নেতা। এই সময় সুভাষচন্দ্রের বিভিন্ন রচনা ও বক্তৃতায় বামপন্থী আদর্শের প্রভাব এবং অপসহীন সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব গান্ধীজি ও তার একনিষ্ঠ অনুগামীদের ভাবিয়ে তুলেছিল। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র গঠন, পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন ইত্যাদি আদর্শ কংগ্রেসের অধীনে শ্রমিক কৃষকদের সংগঠিত করে।






জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে সুভাষ পান ১৫৮০ টি ভোেট সীতারাম মাইয়া পান ১৩৭৭টি ভোট। সুভাষচন্দ্র ২০৩ টি ভোটে পরাজিত করেন গান্ধীগোষ্ঠী সমর্থিত প্রার্থী পট্টোভি সীতারাম মাইয়াকে।পট্টোভি পরাজয় গান্ধীজিকে মর্মাহত করে। তিনি বলেন,” সীতারাম মাইয়ার পরাজয়, আমার পরাজয়", সুভাষ সভাপতি মনোনীত হওয়ায় গান্ধী গোষ্ঠীর চূড়ান্ত অসহযোগিতা শুরু হয়। গান্ধীজীর সমর্থন ছাড়া সুভাষ চন্দ্রের পক্ষে সভাপতি হিসেবে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। দু মাস ধরে চেষ্টা করেও একটি পছন্দ সই কার্যকরী সমিতি গঠন করতে তিনি ব্যর্থ হন বরং পুরাতন কার্যকরী সমিতিকে পূর্ন মনোনয়ন দেওয়া হয় ও গান্ধী নীতি বিপুলভাবে সমর্থিত হয়।


 




গান্ধীজীর গোপন নির্দেশে কংগ্রেস কার্যকরী সমিতির ১৩ জন সদস্যের সকলেই পদত্যাগ করলেই সুভাষচন্দ্র বাধ্য হয়ে সভাপতির পদে ইস্তাফা দেন (১৯৩৯খ্রি:, ২৯শে এপ্রিল) । তবে কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই বামপন্থী অনুগামীদের নিয়ে তিনি ৩ই মে ফরওয়ার্ড ব্লক নামে একটি গোষ্ঠী গঠন করেন। ফলের সুভাষচন্দ্র প্রবলভাবে সমালোচিত হন এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১১ই আগস্ট তিন বছরের জন্য কংগ্রেসের কোন পদ গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। বাধ্য হয়ে সুভাষচন্দ্র কংগ্রেস ত্যাগ করেন এবং ফরওয়ার্ড ব্লককে একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। 






ত্রিপুরী কংগ্রেসের গুরুত্ব গুলি হল----1) গান্ধীজীর ও লিখিত নির্দেশ মেনে কংগ্রেস কার্যকরী সমিতির সকল সদস্য পদত্যাগ করেন। ফলি সুভাষ বাধ্য হয়ে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতির পদে ইস্তফা দেন ও আলাদা ফরোয়ার্ড ব্লক দল গঠন করেন।2) সুভাষ চন্দ্রের পদত্যাগের পরিণতি হিসেবে কংগ্রেসের দক্ষিণপন্থীরা ধীরে ধীরে ক্ষমতাশালী হন ও বামপন্থীরা দুর্বল হতে থাকেন।3) সুভাষচন্দ্র ও গান্ধীজীর মতো দেশের দুই শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যকার দ্বন্দ্ব পরোক্ষভাবে দেশের জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকে দুর্বল করে।4) ত্রিপুরী কংগ্রেসের সুদূরপ্রসারী প্রভাব হিসাবে সুভাষচন্দ্র অনুভব করেন যে ভারতের মধ্যে থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ সম্ভব নয় তাই তিনি বিদেশি শক্তির সাহায্য নিয়ে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।






ত্রিপুরী কংগ্রেসের কেন্দ্র করে কংগ্রেসের মধ্যে বামপন্থী মানসিকতাকে নির্মূল করতে চাওয়া হয়। সুভাষ নিজের পরাজয় প্রসঙ্গে যে তিনটি কারণের উল্লেখ করেছিলেন সেগুলি ছিল জহরলালের অসহযোগিতা, কংগ্রেসের সমাজতন্ত্রী দলের বিশ্বাসঘাতকতা এবং নেতৃত্বের প্রশ্নে তার ও গান্ধীজীর দ্বন্দ্বকে ব্যক্তিগত সংঘর্ষের রূপদান। কংগ্রেসের ত্রিপুরী অধিবেশনে গান্ধী গোষ্ঠী সুভাষের এই জয় কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছিলেন বলেই সুভাষকে দল থেকে বহিষ্কৃত হতে হয়েছিল। ব্রিটিশ গবেষক টমলিনসনের মতে- সভাপতি নির্বাচনে সুভাষ চন্দ্রের জয় ছিল নেতিবাচক|



তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ত্রিপুরী কংগ্রেসের অধিবেশনের তাৎপর্য লেখ? এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟