বিংশ শতকের প্রথম দিকে চীনের সমরনায়ক বাদের উত্থানের কারণগুলি আলোচনা কর
১৯১১ খ্রিস্টাব্দে চীনের বিপ্লবের পর চীন থেকে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটেছিল এবং ডঃ সান-ইয়াৎ- সেনের নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৷ কিন্তু চীনে গণতন্ত্রের কোন ঐতিহ্য না থাকায় প্রজাতন্ত্রিক সরকারকে বহুবিধ সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়েছিল ৷ এমতাবস্থায় সান শর্তসাপেক্ষে ইউয়ান-সি-কাই কে প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে মনোনীত করেন ৷ কিন্তু ইউয়ান-সি-কাই প্রজাতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পরিবর্তে সকল ক্ষমতায় করায়ত্ত করে প্রজাতন্ত্রকে দুর্বল করার কাজে মন দিয়েছিলেন ৷ ঐতিহাসিক এইচ.এম.ভিনাকে তার এই নাম দিয়েছেন"Phantom Republic" বা আলকে প্রজাতন্ত্র ৷ জেন্ট্রি শ্রেণীভুক্ত ইউয়ান উপলব্ধি করেছিলেন যে চীনে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব বজায় রাখতে সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি একান্তই প্রয়োজন ৷ তাই প্রথম থেকেই তিনি সামরিক একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সচেষ্ট হন ৷ তার চিন্তাধারা ও কর্মপদ্ধতির মধ্যে সমরবাদে বীজ লুকিয়ে ছিল তাই একে "দা ফাদার অফ দা ওয়ার্ল্ডেরস" বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে এবং তার সময় থেকে চীনের সমর শাসনের সূচনা হয় ।
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
ইউয়ান-সি-কাই কে বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মদত দিয়েছিল ৷ তারা প্রচুর অর্থ ঋণ চেয়েছিল ৷ তারা গণতান্ত্রিক কার্যাবলী কে বিদেশীদের প্রশংসা করেছিল ৷ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্রগুলো তাকে" a strong man in the situation" বলে অভিহিত করেছিলেন ৷ সান-ইয়াৎ সেনের নায়ক শাসন কে মনোনীত মানতে পারেননি ৷ অবশ্য মনে রাখা সম্ভব ছিল না ৷ তিনি সমরনায়ক তন্ত্রের অবসানের জন্য আবার বিপ্লবের ডাক দিলেও ব্যর্থ হয়েছিলেন ৷ কিন্তু তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি মৃত্যু তার সেই স্বপ্নপূরণের বাঁধা দিয়েছিল ৷
ইউয়ান-সি-কাই এর মৃত্যুর পর দেশেই আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছিল ৷ সারা দেশে নৈরাজ্যের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল ৷ চীনের বিভিন্ন প্রদেশ প্রভূত কায়েম করেছিল ৷ এই সময় সমর প্রভুদের নিজেদের মধ্যে বিবাদ ও পার্লামেন্টের সদস্যদের অভ্যন্তরীণ বিবাদ এবং সমর প্রভু রাজনীতিবিদদের মধ্যে বিবাদ , রাজনৈতিক ইতিহাসের গতিধারা কে নিয়ন্ত্রণ করেছিল ৷ এই বিধিত সংগ্রামের অনিবার্য পরিণতি হয়েছিল সংসদে দুর্বলতা ও রাষ্ট্রের খন্ডীকরণ ৷ ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে ইউ ওয়ানের মৃত্যুর পর চীনের শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে অস্থায়ী সংবিধানের প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে নেওয়া হয় এবং পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকা হয় ৷ সংবিধান পন্থী লি উইয়ান হাং প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় ৷ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন পেইয়াং সমর নেতা তুয়াং চি জুঁই কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পদত্যাগ করেন ৷ অন্য এক সমর নেতা চাং ক্ষমতায় এসেছিলেন ৷ তিনি পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়েছিলেন তিনি শেষ পদচ্যুত শাসক কে পুনরায় চীনের সিংহাসনে বসিয়েছিলেন ৷ কিন্তু এই পুরো স্থাপিত রাজতন্ত্রের মেয়াদ ছিল দু সপ্তাহ ৷ রাজতন্ত্রকে মানতে রাজি ছিল না ৷ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে তুয়ান আবার প্রধানমন্ত্রীত্ব ফিরে পেয়েছিলেন ৷ পার্লামেন্ট কে পুনঃগঠিত করা হয়েছিল ঠিকই কিন্তু সমর নায়কদের প্রভুত্বের জন্য চীনের প্রশাসন প্রহসনে পরিণত হয়েছিল ৷
সমর প্রভুদের প্রথম পর্বের সংঘাতের প্রকৃত ফল হল পার্লামেন্টকে উত্তরোত্তর সমর প্রভুদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা এবং চীনের দক্ষিণে প্রদেশগুলোকে বিচ্ছিন্ন করা ৷ সমর নায়কদের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংগ্রামে উত্তর ও দক্ষিণ চীনের সংঘাত বৃদ্ধি পায় ৷ ক্ষমতার খন্ডিকরন যার অনিবার্য পরিণতি রূপে অসাময়িক রাজনীতিদের জীবনে হতাশা নেমে এসেছিল ৷
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের দক্ষিণ চীনের গোষ্ঠীর পিকিং পার্লামেন্ট ত্যাগ করলে সমন নায়কদের গৃহযুদ্ধ এক নয়া মোড় নেয় ৷ কেননা এর ফলে সান-ইয়াৎ-সেনের সামনে আরেকটি সুযোগ আসে ৷ এই সময় তিনি পূর্ণ উদ্যমে সমর প্রভু বনাম পার্লামেন্টের লড়াইয়ের সামিল হন ৷ জুলাই মাসে তিনি তার পূর্বের কুয়োমিং তাং সদস্য ও চীনা নৌ বাহিনীর অধিকাংশদের নিয়ে ক্যান্টনে যান ৷ তার সর্বাধিনায়ক তত্ত্বের একটি সামরিক সরকার গঠিত হয় তবে স্থানীয় সমর প্রভুরাই এই সরকারের প্রকৃত শক্তি ছিল ৷ শাসনের সংবিধান সুরক্ষা আন্দোলনকে জোরদার করার জন্য তিনি স্থানীয় সমর প্রভুদের সংঘটিত করতে চান ৷ কিন্তু তার অসামরিক সরকার গঠনের প্রয়াস কার্যকরী হয়নি ৷
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ১৪ই আগস্ট জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর তোয়াং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য জাপানের কাছ থেকে ১৪৫ মিলিয়ন ইয়েন ধার করেন যা "নিশিহারা ঋন" নামে পরিচিত ৷ তিনি জাপানের সঙ্গে একটি সামরিক চুক্তি সম্পাদন করেন যার মূল উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ চীনে সামরিক শাসনের অবসান ঘটানো ৷ তিনি জাপানি সামরিক প্রশিক্ষকদের বেছে নিয়ে এসে জাপান পন্থী রাজনীতিবিদদের নিয়ে আন- হয়েই সাময়িক গোষ্ঠী গড়ে তোলেন ৷ এই গোষ্ঠী আনফু গোষ্ঠী নামে পরিচিত ৷ এই গোষ্ঠী কুয়ো-চাও এর নেতৃতা ধীন চিলি চক্রের বিরোধী ছিল ৷ এইভাবে পেয়াং সামরিক গোষ্ঠী দুটি দলের বিভক্ত হয়ে পড়ে ৷ অনেকে চীনা স্বদেশপ্রেমীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনেন যে তিনি দেশকে বিরোধী শক্তির কাছে বিকিয়ে নিজে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেন ৷"এদিকে হতাশ লিয়াং-চি-চাও শেষ পর্যন্ত রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন ৷
দক্ষিণ চীনে সান-ইয়াৎ-সেনের ক্যান্টন পার্লামেন্ট ও দুটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে যায় ৷ political study cligue" বা রাজনৈতিক পার্থক্য নামে একটি গোষ্ঠী সমর প্রদের সঙ্গে জোট বেঁধে স্থানের অনুগামীদের বিরুদ্ধে হত্যা লীলা চালায় এবং তাকে সাংহাইতে ফিরে যেতে বাধ্য করে ৷ অন্যদিকে কুয়াংসি চক্র নামে অপর সামরিক গোষ্ঠী উত্তরে আনফু চক্রের মত দক্ষিণ চীনে প্রাধান্য বিস্তার করে ৷ ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে সাংহাইয়ের দক্ষিণে এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তির স্থাপনের প্রয়াস ব্যর্থ হয় ৷ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে চীনের সমন নায়কদের এই ক্ষমতা দ্বন্দ্ব তথা বিভাজনের তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছায় ৷
১৯২২ খ্রিস্টাব্দে এরপর চীনের সমরক প্রভুদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘাত বাঁধে এই ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের তিন প্রধান কারণ হলে মাঞ্চুরিয়ান শাসক চাং সোলিন মধ্যচিনের শাসক উ-পেই-ফু এবং বিরোধী নেতা ফেং-ইউ-সিয়াং ৷ বিজয়ী চিলি চক্রের সমর প্রভুরা লি-ইয়ান-হাং রাষ্ট্রপতি পদে বসিয়েছিলেন,এই আশায় যে তিনি দক্ষিণ ক্যান্টন সরকারের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য স্থাপন করবেন ৷ এই গোষ্ঠীর একাংশের তীব্র বিরোধিতা এই প্রয়াস বাধা প্রাপ্ত হয় এবং ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভাগে গোষ্ঠীর বিভাজন শুরু হয় ৷ উ-পেই-ফুর নেতৃত্বে লো-ইয়ং গোষ্ঠী সমগ্র চীনের ওপর সামরিক কর্তৃত্ব কায়েম করতে চেয়েছিলেন এবং রাষ্ট্রপতি লি-কে সমর্থন জানিয়ে উই-পে-ফুর বিরোধী তিয়েনসিন দল অন্য দিকে সাওকুনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে চেয়েছিলেন ৷ শেষ পর্যন্ত লি- কে অত্যন্ত অসম্মানজনকভাবে রাষ্ট্রপতির পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং ১৯২৩ এর অক্টোবরের সাওকুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন ৷
১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরের রাষ্ট্রবাসী নির্বাচিত হওয়ার পর সাওকুনের ফেং-তিও বাহিনী মাঞ্চুরিয়া থেকে পিকিং এর দিকে অগ্রসর হন এবং দ্বিতীয় চিলি ফেং-তিও যুদ্ধের সূচনা করেন ৷ খুবই অপর্যাশ্চিত ভাবে এক লক্ষ ৭০ হাজার সেনা বিশিষ্ট সেনাবাহিনীর প্রধান যখন সামনের দিকে এগোচ্ছিল তখন তার তৃতীয় সেনা প্রধান ফেং-ইউ-সিয়াং পিকিং দখল করে চিলি বাহিনীর পতন ঘটায় ৷ ফেং তার national peobles Army"র সাহায্যে ক্যাবিনেট এর পুনর্গঠন করেন ৷ রাষ্ট্রপতি সাউ কুনকে ক্ষমতাচ্যুত করেন ৷ সান ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে 12ই মার্চ মারা যান তার বিপ্লব উপজাতন্ত্র চীনের কাঙ্ক্ষিত শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারেননি । উত্তর চীনে যখন সমর প্রভুদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই চলছিল বিপ্লবীদের প্রভাবাধীন দক্ষিণ চীন ও উত্তর চীন তখন উত্তর ও দক্ষিণ চীনের মধ্যেই ঐক্য সাধনের প্রয়াসী হন ৷ এই কাজে কুয়োমিং তাং দল এর প্রধান ভূমিকা পালন করে ৷ এই দল তাদের কুয়োমিং তাং বাহিনীর মাধ্যমে খন্ডিত চীনকে ঐক্যবদ্ধ করলে সমর নায়ক তন্ত্রের অবসান ঘটে ৷
ফেয়ার ব্যাঙ্কের মতে,"সমর শাসকদের আমলে চীন ছিল একই সাথে "বিশৃঙ্খিল ও সৃজনশীল" ৷ সমর নায় শাসনের চীনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে পড়েছিল ৷ চীনে বিভিন্ন সমর নায়কদের শাসনের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল ৷ চীনের রাজনৈতিক ঐক্য-বিপন্ন হয়ে পড়েছিল ৷ এমনকি চীনে তখন কেন্দ্রীয় শক্তি বলে কিছু ছিল না । সমর নায়কদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও প্রতিযোগিতা সর্বপ্রথম বলি হয় দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা ৷ সমগ্র দেশে যেন একটি অন্ততন্ত্রের ব্যারাকে পরিণত হয় ৷ এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে সমর শাসনের যুগকে মোটামুটি হিসাবে ১৯১৬ থেকে ১৯২৮ পর্যন্ত বিশৃঙ্খলত যুগ বলা চলে ৷
দেশের এই দুর্দিনে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল চীনে সাধারণ মানুষ ৷ করভারে জর্জরিত চীনের কৃষককুল সমর প্রভুদের নানাবিধ উৎপীড়নের শিকার হয়েছিল ৷ জমিতে স্বাধীনভাবে চাষ করে খাদ্যশস্য উৎপাদনের অধিকার তারা হারিয়েছিল ৷ শাসকদের অপশাসনে দেশের আফিম উৎপাদনের পুনরজীবনের ঘটার ফলে তারা চীনের কৃষক সম্প্রদায়কে আফিম উৎপাদনে বাধ্য করে ৷ সাম্রাজ্যবাদী পাশ্চাত্য শক্তি বর্গ চীনের এই রাজনৈতিক ঐক্য বিচ্ছিন্নতার এবং অরাজকতার পূর্ণ সুযোগ নেয় ৷
সমর প্রভুরদের শাসনকালে চীনের কনফুসিয়াদের প্রাচীন আদর্শ সংকটপূর্ণ হয় । সমরনায়ক তন্ত্রের জনক হিউয়ান-সি-কাই কনফুসীয় আদর্শ ও নীতিবোধ রক্ষার যত্নবান নেয় হয়নি । মাঞ্চু বংশের পতনের সাথে সাথে কনফুসীয় তত্ত্বের পূর্বের তেজ হারায় অন্যদিকে আধুনিক শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য গুলি তখনও চীনা জনমানুষে অধিষ্ঠিত হননি ৷
সমন্বয় তন্ত্রের যুগে সমর প্রভুদের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ফলে চীনের জাতীয় ঐক্য নষ্ট হয়েছিল ৷ অপশাসনের চীনা বাসিকে নৈতিক মূল্যবোধের অবনমন ঘটিয়ে নিয়মিত লুণ্ঠন ও করভারের জন্য সাধারণ জনগণকে জীবনে অবরনীয় কষ্ট ও অশেষ দুর্নীতি দেখা দেয় দেখা গিয়েছিল এবং রেলপথ ব্যবস্থা,বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও শেচ ব্যবস্থার মতো জনকল্যাণমূলক কাজে অবনতি লক্ষ্য করা যায় ৷
নেতিবাচক দিকের পাশাপাশি সমস শাসনের কল্যাণ কর দিকটি উল্লেখযোগ্য ৷ ফেয়ার ব্যাঙ্কের মতে," এই যুগে চীনের শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনীতি শক্তিশালী হয় ৷"
- প্রথমতঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে পাশ্চাত্য দেশগুলি থেকে চীনের পণ্য আমদানি হ্রাস পেয়েছিল ৷ ফলে দেশীয় শিল্পের বিকাশ ঘটে এবং দেশীয় শিল্পপতি ও বণিক সভা গুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে ৷ চীনের সুতো , জ্বালানি,তেল, সিগারেট,দেশলাই ইত্যাদি নিজেরা উৎপাদন করতে সমর্থ হন।
- দ্বিতীয়তঃ ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশের ফলে একদল নতুন শিল্প উদ্যোগী শ্রেণী আত্মপ্রকাশ করেন ৷ ব্যাঙ্ক ঋণের মাধ্যমে বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয় ৷ এই সূত্রে উল্থান ঘটে আধুনিক শিল্প শ্রমিক শ্রেণীর ৷ গ্রাম থেকে উৎখাত হয়ে আসা বহু ভূমির কৃষক শিল্প শ্রমিক রূপে জীবন শুরু করে ৷
- তৃতীয়তঃ সমর শাসনকালে শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটে, এই সময় প্রচুর সংখ্যক ছাত্র উচ্চ শিক্ষার জন্য আমেরিকা, ইউরোপ ও জাপানে যেত ৷ অবশ্য শিক্ষার ক্ষেত্রে এই অগ্রগতির সূচনা পূর্ববর্তী চীন শাসনকালেই শুরু হয়েছিল বলেই অনেকে মনে করেন।
- চতুর্থতঃ সমর শাসনকালে চীনের সামাজিক জীবনের দ্রুত পরিবর্তন ঘটে, গ্রাম থেকে কৃষকরা শহরে চলে আসার ফলে গ্রামে যৌথ পরিবার গুলিতে ভাঙ্গন দেখা যায় ৷ শহর অঞ্চলে চাকুরী সুযোগ বৃদ্ধির ফলে এক নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে ৷ পাশ্চাত্য জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা শিল্প শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বৃত্তজীবী বুর্জয়াদের উদ্ভব চীনে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে উদারন জাতীয়তাবাদী একটি প্রগতি ছিল আন্দোলনের পটভূমি তৈরি করে দেয় ৷ ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে চৌঠা মে আন্দোলনের বীজ সমর শাসনকালে রোপিত হয়েছিল বলা হয় ।
- (১). সমরবাদের ইতিহাস pdf
- (২). সমরবাদ কি
- (৩). সমরবাদ উত্থান