টীকা লেখ :- ইউরোপীয় অর্থনীতিতে মার্কেন্টাইল বাদের প্রভাব
ষোড়শ শতক থেকে অষ্টাদশ শতকের মধ্যে পশ্চিম ইউরোপের এক সংরক্ষিত বাণিজ্যিক সমৃদ্ধির প্রসার ঘটে যা মার্কেন্টাইলিজম নামে পরিচিত ৷ এই উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপীয় ক্ষেত্রে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে ঐক্য স্থাপন ৷ এককভাবে এই মতবাদের সংজ্ঞা নির্দেশ করা যায় না ৷ রাষ্ট্রকে আর্থিকভাবে বৃত্তশালী করতে এক উচ্চ অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক নীতিকে মার্কেন্টইলিজম নামে অভিহিত করা যাই ৷ এর মূল কথা হলো সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের উপর ব্যক্তিগত মালিকানা থেকেই অর্থের উৎপত্তি এবং সম্রাট বা রাষ্ট্রকে বিত্তশালী করার জন্য এই ধরনের অর্থনৈতিক ক্রিয়া-কলাপ ব্যবহৃত হওয়া উচিত ।
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
প্রাথমিকভাবে মানুষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে উদাসীন ছিল ৷ তারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে সম্পদ বিনিময় করে নিত ৷ কিন্তু রাজারা উপলব্ধি করেন যে এই কাজের মধ্যে এক মুদ্রা অর্থনীতি আব্যশিক যার ফলে তাদের পক্ষে এক বিশাল সেনাবাহিনী গড়ে তোলা সম্ভব ৷ তাই তারা সেনার বিনিময় মূল্য ভিত্তিক এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলেন ৷ ষোড়শ শতক থেকে শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠনের প্রতিযোগিতায় ইংল্যান্ড ফ্রান্স এবং স্পেন অবতীর্ণ হন ৷ তাই ষোড়শ শতকে এই প্রতিপত্বশালি রাষ্ট্র গঠনের ইতিহাসকেও মার্কেন্টাইলিজম এর উত্থানের প্রেক্ষাপট বিচার করা জরুরী ৷
মার্কেন্টাইলিজমের তত্ত্ব অনুসারে বলা যায় যে কোন এক ব্যক্তির কাছে যে পরিমাণ সম্পদ থাকবে তা স্বাভাবিকভাবে অপর কোন ব্যক্তি যে পরিমাণ সম্পদ হারিয়েছেন তা সমানুপাতিক । কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে অসীম হওয়ায় এই সম্পদের বিভাজন সমানুপাতিক হয় না ৷ তাছাড়া মার্কেলটাইলবাদের বর্ণিত সম্পদের চরিত্র অনুধাবনের ক্ষেতে এক বিরাট গলদ দেখা যায় । এখানেও প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে সব যুগেই একক ধরনের সম্পদের কথা বলা হয়েছে । মার্কেন্টাইল বাদের সফল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসাবে নিজের আসন হারায় এবং ইউরোপীয় ক্ষেত্রে এই নীতির ব্যর্থতা প্রমাণিত হয় ।
