স্বরাজ্য দলের উদ্ভব সম্পর্কে টীকা লেখ? অথবা,স্বরাজ্যদল কেন গঠিত হয় -আলোচনা করো।

স্বরাজ্য দলের উদ্ভব সম্পর্কে টীকা লেখ? অথবা,স্বরাজ্যদল কেন গঠিত হয় -আলোচনা করো।

স্বরাজ্য দলের উদ্ভব সম্পর্কে টীকা লেখ? অথবা,স্বরাজ্যদল কেন গঠিত হয় -আলোচনা করো।


স্বরাজ্য দলের উদ্ভব সম্পর্কে টীকা লেখ? অথবা,স্বরাজ্যদল কেন গঠিত হয় -আলোচনা করো।

স্বরাজ্য দলের উদ্ভব সম্পর্কে টীকা লেখ? অথবা,স্বরাজ্যদল কেন গঠিত হয় -আলোচনা করো।

গান্ধিজি পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহৃত হলে জাতীয় আন্দোলনে এক শূন্যতা ও হতাশার সৃষ্টি হয় । এ ছাড়া এই সময় গান্ধিজি সহ কংগ্রেসের অনেক নেতাই কারাবন্দী ছিলেন । ফলে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনে ভাটা পড়ে । রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও দেখা দেয় এক অনিশ্চয়তা । ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনকে গতিশীল রাখার পরিস্থিতিতে এক বিকল্প পথের সন্ধানে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, মতিলাল নেহরু প্রমুখ গড়ে তোলেন স্বরজা দল (1923খ্রি:, 1 লা জানুয়ারি) যার সভাপতি হন চিত্তরঞ্জন দাস ও সম্পাদক হন মতিলাল নেহেরু ৷

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহারের পর জাতীয় রাজনীতি গতিহীন হয়ে পড়ে।  ফলে ভারতীয়দের মনে যে জাতীয়তাবাদী ভাবধারার প্রসার ঘটেছিল এই আন্দোলন প্রত্যাহর হলে তাহা থমকে যায় । এই নবজাগ্রত জাতীয়তাবাদী ভাবধারার প্রসারকে অক্ষুন রাখতে কংগ্রেসের একদল নেতা এক নতুন দল গঠনের কথা চিন্তা করেন । এর ফলে ভারতবাসীর স্বাধীনতার স্বপ্ন যখন অনেকটাই ফিকে হয়ে আসে ঠিক তখন স্বরাজ্য দল ভারতবাসীকে নতুনভাবে স্বাধীনতার চেতনা ও আকাঙ্খায় জাগিয়ে তোলে।


ব্রিটিশের কাছ থেকে বিশেষ কোনো সুযোগ সুবিধা আদায় করতে না পারলেও শাসনব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করে এই দলের সদস্যরা সরকারের বাজেট সহ বিভিন্ন দমনপিড়ণমূলক আইনের বিরোধিতা করেছিল।  স্বরাজ্য দলের নেতারা জাতীয় কংগ্রেসের গঠনমূলক পরিকল্পনাগুলি সামনে রেখে নিজেদের কর্মসূচি নির্ধারণ করেন এই কর্মসূচির বাস্তবায়নের জন্য স্বরাজ্যরা বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে এক সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করেন।


 চিত্তরঞ্জন দাশ এ সময় প্রস্তাব দেন যে, আইনসভাও অন্যান্য নির্বাচিত সংস্থাগুলিতে প্রবেশ করে গঠনমূলক কাজে অংশ নিতে হবে এক বিরোধীতার মাধ্যমে সরকারের কাজকর্মকে অচল করে দিতে হবে। তাঁর উদ্দেশ্য ফিজ ভিতর থেকে শাসন-সংস্কারে অংশ নেওয়া। চিত্তরঞ্জনের এই নীতি ছিল গান্ধিজির অসহযোগ নীতির পরিপন্থী । বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদ, বল্লভভাই প্যাটেল, চক্রবর্তী রাজাগোলাপাচারি প্রমুণ গান্ধিজির নীতির পরিবর্তনের বিরোধী ছিলেন । এরা পরিচিত ছিলেল পুরাতন পরী নামে । আর মতিলাল নেহরু, বিঠলভাই প্যাটেল প্রমুখ চিত্তরঞ্জনের প্রস্তাবের সমর্থন ছিলেন । এরা পরিচিত ছিলেন পরিবর্তন পন্থী নামে। স্বাভাবিকভাবে কংগ্রেসের মধ্যে দুটি গোষ্ঠীর উদ্ভব হয়। ১৯২২ খ্রিঃ ডিসেম্বরে গয়াতে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতি হিসাবে চিত্তরঞ্জন দাশ আইনসভায় প্রবেশ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য পেশ করেন । অনেক বিতর্কের পর ১৭৪০-৮৯০ ভোটে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যাত হয় ।

 এই ঘটনা চিত্তরঞ্জনকে হতাশ করে এবং তিনি কংগ্রেস সভাপতির পদ ত্যাগ করেন । এরপর তিনি মতিলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র, বিঠলভাই প্যাটেল প্রমুখের সাহায্যে ১৯২৩ সালে ১জানুয়ারী কংগ্রেস-খিলাফৎ স্বরাজ্য দল গঠন কবে, যা পরবর্তীকালে স্বরাজাদল নামে পরিচিত হয়। পৃথক দল হলেও এটি কংগ্রেসের মধ্যেই থেকে যায়। চিত্তরঞ্জন দাশ হলেন এই স্বরাজা দলের সভাপতি এবং মতিলাল নেহরু হন সম্পাদক।


অর্থাৎ স্বরাজ্য দল জাতীয় আন্দোলনকে গতিশীল ও প্রাণবন্ত করে তোলার পাশাপাশি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা, দেশীয় শিল্প সংরক্ষণ নীতি, ডাক টিকিট, রেল ভাড়া, লবণ শুল্ক হ্রাস সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করে। স্বরাজ্য দল মূলত প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের অধিকারের দাবি অর্জনের লক্ষ্যে চাপ সৃষ্টি এবং ব্রিটিশের বিভিন্ন দমনমূলক আইন ও প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল। পরবর্তী গণআন্দোলন আইন অমান্যের ওপরেও স্বরাজ্য দলের কার্যাবলীর প্রভাব পড়েছিল।

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟