সত্যাগ্রহ ও অহিংসা বলতে কী বোঝো অথবা, অহিংসা ও সত্যাগ্রহ' সম্পর্কে গান্ধিজির ধারণা আলোচনা করো।

সত্যাগ্রহ ও অহিংসা বলতে কী বোঝো অথবা, অহিংসা ও সত্যাগ্রহ' সম্পর্কে গান্ধিজির ধারণা আলোচনা করো।

সত্যাগ্রহ ও অহিংসা বলতে কী বোঝো অথবা, অহিংসা ও সত্যাগ্রহ' সম্পর্কে গান্ধিজির ধারণা আলোচনা করো।

সত্যাগ্রহ ও অহিংসা বলতে কী বোঝো অথবা, অহিংসা ও সত্যাগ্রহ' সম্পর্কে গান্ধিজির ধারণা আলোচনা করো। 


 সত্যাগ্রহ ও অহিংসা



গুজরাটের জৈন ধর্মীয় পরিবেশে জন্ম এবং বৈষ্ণব পরিবেশে বেড়ে উঠায় গান্ধীজী সত্যাগ্রহ আদর্শের প্রতি অফুরন্ত হন ৷ এছাড়াও,গান্ধিজি তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেখানে তিনি প্রবাসী ভারতীয়দের ওপর সেখানকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের বর্ণবৈষম্য নীতি ও অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন । গান্ধিজি প্রবর্তিত এই প্রতিবাদী আন্দোলন 'সত্যাগ্রহ আন্দোলন' নামে পরিচিত ছিল এবং তাঁর নীতি ছিল অহিংসার ওপর প্রতিষ্ঠিত। শান্ত ও নিরস্ত্রভাবে এবং সত্যের পথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামই হল সত্যাগ্রহ আন্দোলন ।


 এই সত্যাগ্রহের উৎস পান তিনি বাইবেল, গীতা, ব্রিটিশ লেখক রাসকিনের "Unto the Last",খ্যাতনামা রুশ লেখক লিও টলস্টয়ের 'The Kingdom of God" ইত্যাদি রচনা ও গ্রন্থ পাঠ করে গান্ধীজীর মনে সত্যাগ্রহের আদর্শ গড়ে ওঠেন ৷ সত্য ও আগ্রহ এই দুই শব্দ মিলিয়ে সত্যাগ্রহ গ্রহ শব্দটি গঠিত ৷ অহিংসার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই আদর্শ ছিল ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর প্রবর্তিত ও এক অভিনব কৌশল ৷ গান্ধীজি মনে করতেন বিরোধী পক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ের অহিংস, অসহযোগ ও আইন অমান্য হলো সত্যাগ্রহ আদর্শের দুই মূলধারা ৷ গান্ধীজী বলেন," রোজ সকালে উঠে আমাদের এই বলে শপথ দিতে হবে যে আমি বিশ্বের কাউকে ভয় করব না শুধু ভয় পাব ঈশ্বরকে ৷"

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
গান্ধিজির 'সত্যাগ্রহ' অন্যায়-অত্যাচার, শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে এক অহিংস প্রতিরোধ আন্দোলন। সত্যাগ্রহের দুটি প্রধান আদর্শ হল- 'সত্যের প্রতি নিষ্ঠা' এবং 'অহিংসা'। গান্ধিজি বলেছেন, সত্যাগ্রহ হল 'আত্মার শক্তি' ব 'প্রেমের শক্তি' ৷ সত্যাগ্রহীর কষ্ট স্বীকার করার ক্ষমতার কোন সীমা নেই ৷ তাই সত্যাগ্রহে পরাজয় বলে ও কিছু থাকে না ৷ শান্ত ও নিরস্ত্রভাবে পরিচালিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামী ছিল সত্যাগ্রহ । আত্মকষ্টের দ্বারা এবং অহিংস পদ্ধতিতে প্রতিপক্ষের মন জয় করা না বা তার অন্তরের শুভ বুদ্ধি কে জাগানোই হলো সত্যাগ্রহে ভাইয়ের উদ্দেশ্য ৷ গান্ধীজি জাতির সামনে সত্যাগ্রহের মূল দুটি লক্ষ্য তুলে ধরেন যথা স্বরাজ্য অর্জন এবং দেশের সকল শ্রেণীর আর্থিক ও সামাজিক মুক্তি ৷ সত্যাগ্রহীর লক্ষ্য আদায়কারী শতকে পরিবর্তন করা তাকেই পিরন বা যন্ত্রণা করা নয় ৷


ভয়কে জয় করার প্রতিপক্ষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য বরাবর চেষ্টা করাই সত্যাগ্রহের মূল বিধি ৷ সত্যাগ্রহের আদর্শে বিশ্বাসকারীকে সাদা মানসিক লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সমানভাবেই উদ্বিগ্ন থাকতে হবে ৷ সত্যাগ্রহের আদর্শ  অনুসারী কে এক সত্যতা ও অহিংসার আদর্শ এবং  ঈশ্বরের বিশ্বাস রাখতে হবে দুই পবিত্র ভাবে জীবন যাপন করতে হবে এমনকি প্রয়োজনে আদর্শ রক্ষার জন্য নিজের জীবন ও সম্পদ বিসর্জন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ও  উদ্বৃত্ত থাকতে হবে


গান্ধীজীর সত্যাগ্রহ এই আদর্শ ও অনুসরণের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা আনতে চেয়েছিলেন এই প্রসঙ্গে হরিজন পত্রিকায় তিনি লেখেন আমার উপদেশ হলো প্রথমে ও সত্যাগ্রহ এবং শেষে ও সত্যাগ্রহ স্বাধীনতার আর অন্য কোন ভালো রাস্তা নেই ৷সত্যাগ্রহীকে কয়েকটি অবশ্য পালনীয় নিয়ম মেনে চলতে হবে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- 
  1. সত্যের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা। 
  2. সর্বর অহিংস ধর্ম পালন করা। 
  3. ঈশ্বরে ভক্তি রাখা। 
  4. পবিত্র জীবন-যাপন করা। 
  5. সত্যাগ্রহের আদর্শ রক্ষার্থে নিজের জীবন ও সম্পদ বিসর্জন দেওয়ার জন্য সর্বদা তৈরী থাকা। 
  6. খাদি বস্ত্র পরিধান করা। 
  7. সকল প্রকার নেশা থেকে দূরে থাকা।


সত্যাগ্রহ ছিল গান্ধিজির একান্ত নিজস্ব সৃষ্টি। সত্যাগ্রহের মাধ্যমেই তিন্নিয ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অর্জন করতে চেয়েছিলেন। একই সাথে তিনি দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থারও উন্নতিসাধন করতে চেয়েছিলেন।


About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟