সাঁচি স্তুপ সম্পর্কে আলোচনা কর
মৃত্তিকা অথবা ইট পুঞ্জীভূত হয়ে অতি স্বাভাবিক রূপে যেসব প্রাকৃতিক পরিগ্রহ করে তাকে স্তুপ বলা হয় ৷ সাধারণভাবে স্তূপ বলতে বোঝায় ডীপি ৷ স্তূপ স্থাপত্যের মৌলিক বৈশিষ্ট্য গুলি হল চতুষ্কোণ বেদিকার উপরের স্তুপ প্রতিষ্ঠিত হয় ৷ এর উপর থাকে মেদি ৷ মেদির উপর স্থাপিত অর্থ গোলাকার অংশটিকে বলা হয় অন্ড ৷ অন্ডের ওপরে থাকে ধর্মিকা ৷ ধর্মিকা থেকে উপস্থাপিত হয় ছত্রাবলী ৷ সাঁচি একমাত্র স্তুপ সর্বাপেক্ষা সংরক্ষিত৷ সাঁচি স্তূপটির শীর্ষবিন্দুতে রয়েছে একটি ছত্র।
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
সাঁচি স্তুপ মৌর্য সম্রাট অশোক দ্বারা খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় অব্দে নির্মিত হওয়ার এটি ভারতের পাথর নির্মিত প্রাচীনতম স্থাপত্য হিসাবে গণ্য করা হয় ৷ অশোকের স্ত্রী দেবী এই স্তূপ নির্মাণে দেখাশোনা করেন ৷ গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের ওপর অর্ধগোলাকারে এই স্তূপ নির্মিত হয়েছে ৷ তবে চারপাশে সুন্দরভাবে অলংকৃত তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে ৷ এই স্তম্ভে ব্রাহ্মী ও শঙ্খলিপিতে খোদাই করা হয়েছে ।
খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে পুষ্যমিত্র শুঙ্গ রাজনৈতিক উত্থানের সময় স্তূপ টির অনেকাংশ বিনষ্ট করা হয় ৷ পুষ্যমিত্র শুঙ্গের পুত্র অগ্নিমিত্র স্তূপটির পুনঃনির্মাণ করেন ৷ পরবর্তীকালে পাথর দিয়ে স্তূপটির আয়তন দ্বিগুণ করা হয় । স্তূপের উপরিভাগের চ্যাপ্টা করে তিনটি ছত্র স্থাপন করা হয় ৷
১৮২২ সালে ভোপাল দরবারে প্রথম নবাব কুষ্টিয়া বেগমের আমলের ব্রিটিশ সরকারি ক্যাপ্টেন জনসন খুঁড়ে ফেলেন এবং লুকানো ধন রত্নের খোঁজে ৷ ১৮১১ সালে আলেকজান্ডার কানিংহাম তিনটি স্তূপ আবার খোঁজেন ৷ অবশেষে ধর্মপান মানুষেরা এই স্তূপ খোড়ার বিরোধিতা শুরু করেন ৷
১৯১৩ সালে জন হুবাট মার্শাল ছিলেন ভারতীয় প্রত্নতত্ব বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল ৷ সাঁচীর প্রত্নতক্ষেত্রের পেছনে মার্শাল এর ভূমিকায় সব থেকে বেশি ৷ নিঃসন্দেহে মার্শালই সাঁচির গৌরব পুনরুদ্ধার করেন ৷ মাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা স্তূপ মন্দির ছাড়াও আশপাশের এলাকার উৎখনন চালিয়ে খুঁজে বের করা হয় যাবতীয় স্থাপত্যের সংস্কার এবং ভাস্কর্য গুলি সংরক্ষণের জন্য আলাদা সংগ্রহশালা গড়ে তোলা সবই সম্পন্ন হয় তার সময় ।
মার্শালের "A guide to sanchi" প্রকাশিত হয় ১৯১৮ সালে ৷ জন মার্শাল সাঁচি স্তুপ মিউজিয়ামের সংরক্ষণ করে রাখে ৷ সাঁচি স্তুপ নিয়ে জীবিত কালে তার কোন বই প্রকাশিত হয়নি ৷ ১৯৩০ সালে মাত্র ৫০ বছর বয়সে প্রয়াত হন এই বাঙালি পত্নানুরাগী ৷ আরো দশ বছর পর তার তিন খন্ডে প্রকাশ পায় মার্শালের "The monument of sanchi" .