ঋক বৈদিক যুগের ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে যা জানো তা লেখ। অথবা ,পরবর্তী বৈদিক যুগে কি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়

ঋক বৈদিক যুগের ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে যা জানো তা লেখ। অথবা ,পরবর্তী বৈদিক যুগে কি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়

 ঋক বৈদিক যুগের ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে যা জানো তা লেখ। অথবা ,পরবর্তী বৈদিক যুগে কি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়

ঋক বৈদিক যুগের ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে যা জানো তা লেখ। অথবা ,পরবর্তী বৈদিক যুগে কি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়


ঋকবেদ মূলত একটি ধর্মগ্রন্থ ৷ তাই এই গ্রন্থ থেকে ঋক বৈদিক আর্যদের ধর্ম সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায় ৷ ঋকবেদের অন্তর্ভুক্ত  ১০২৮ টি স্বোত্রে ঋকবৈদিক আর্যদের ধর্মীয় ভাবনা বিবৃত হয়ে আছে ৷


আর্যরা নানা প্রাকৃতিক শক্তির উপাসনা করত ৷ তাদের কাছে বৃষ্টি,চন্দ্র, সূর্য, পাহাড়, সমুদ্র, বজ্রপাত ৷ ধাতুর বর্ণময় বৈচিত্র এবং বিচিত্র জগতের কোন ব্যাখ্যায় ছিল না । তারা বিশ্বাস করত যে প্রকৃতির অনন্তরনে কোন দেব শক্তি কাজ করে ৷ ঋক বৈদিক আর্যরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি ও দৃশ্যের ওপর দেবত্ব আরোপ করে পূজা আর্চনার মাধ্যমে তাদের সন্তুষ্ট রাখায় সচেষ্ট করত ৷



ঋক বৈদিক ঋষিরা বিশ্বভূবনকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছিলেন ৷ এই ভাগ গুলিকে বলা হয় স্থান,লোক ও মন্ডল ৷ তাদের কল্পনার সবার উপরে যে মন্ডল তার বিভিন্ন নাম ছিল যথা - দ্যালোক, আকাশ,আলো নিম্নে ছিল ভূলোক বা পৃথিবী মন্ডল । দৌ,বরুণ,সূর্য,বিষ্ণু , সাবিত্রী,ঊষা হলেন দ্যুলোকের দেব-দেবী ৷ অন্তর বৃক্ষের প্রধান দেবী হলেন -  ইন্দ্র,রুদ্ধ,মরুত ৷ ভূলোকের দেবদেবীর মধ্যে অগ্নি,সরস্বতী ছিলেন প্রধান ৷


ঋক বৈদিক যুগে মূর্তি পূজার কোন অস্তিত্ব ছিল না ৷ ধর্মচর্চা মূলত আচার অনুষ্ঠান, নির্ভর ও যোগ্য কেন্দ্রিক ৷ প্রার্থনার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হতো । ব্যক্তিগতভাবে "ক" গোষ্ঠীর সব মানুষ সমবেতভাবে প্রার্থনা করত ৷ এই যুগে দেবতাকে সন্তুষ্ট করার জন্য অগ্নিতে ধৃত আহুতি দিত ৷ এছাড়া গ্রাম বা উপজাতি বা রাজা মাঝে মাঝে যোগ্য অনুষ্ঠান করতেন ৷ ঋকবেদে ধর্মচিন্তা ছিল যজ্ঞ কেন্দ্রিক,জাগতিক উন্নতি ছিল এই যুগের মানুষের ধর্মচর্চার লক্ষণ ৷



পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যদের ধর্ম জীবনে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় এই পরিবর্তনের প্রধান দুটি কারণ ছিল --- (১) ঋক বৈদিক যুগের সমাজ ছিল মূলত যাযাবর ও পশুপালক (২) ধর্ম বিশ্বাস পরবর্তী বৈদিক যুগে কৃষি শিল্প ও বাণিজ্য বিকাশের যুগে অচেনা হয়ে পড়েছিল ৷


ঋক বৈদিক যুগ ছিল সংঘর্ষ ও সংঘাতে সেই যুগে ইন্দ্র অগ্নি ছিল গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু পরবর্তী বৈদিক যুগে কৃষি শিল্প ও বাণিজ্য সম্পদ সমাজে তাদের গুরুত্ব ধীরে ধীরে হ্রাস পায় । এ যুগে আগেকার বহু দেবতা ধীরে ধীরে লুপ্ত হয়ে যায় এবং বহু নতুন দেব-দেবীর আবির্ভাব হয় ৷ এ যুগে প্রজাপতি,ব্রহ্মা,রুদ্ধ,বিষ্ণু গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ৷ এই যুগের প্রধান দেবতা হলেন প্রজাপতি ব্রহ্মা । ঋক বৈদিক যুগের রুদ্রও ছিলেন ধ্বংসের দেবতা ৷ কিন্তু পরবর্তী বৈদিক যুগের শিব বা মহাদেব পরিলক্ষিত হন । পরবর্তী বৈদিক যুগে বিষ্ণুর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায় ৷


পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যরা মনে করতেন যে রুদ্র, শিব,বিষ্ণু সবাই প্রজাপতি ব্রহ্মার বিভিন্ন রূপ ৷ আগের মতই এই যুগেও আর্যরা একেশ্বর বাদে নিযুক্ত ছিলেন ৷ পরবর্তী বৈদিক যুগে যোগ্যনিষ্ঠানের গুরুত্ব ও জটিলতা ঋকবেদ্যের যুগ অপেক্ষা অনেক বেড়ে যায় ৷ সাধারণ পারিবারিক গ্রামীণ যাগ যজ্ঞের পাশাপাশি অশ্রমেধ রাজগুহ প্রভৃতির যোগ্য শুরু হয় ৷


পরিশেষে বলা যায় পরবর্তী বৈদিক যুগে কিছুটা হলেও ঋক বৈদিক যুগের তুলনায় জটিল হয়ে পড়েছিল ৷ আর এই যুগে জটিল ধর্ম বিশ্বাস ধর্ম চিন্তাকে যথেষ্ট পরিমাণে প্রভাবিত করেছিল ৷ জটিল ধর্মচিন্তা সাম্রাজ্য ব্যবস্থা বারে বারে বদলে গিয়েছিল ‌৷

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟