মেটারনিখ তন্ত্র বলতে কী বোঝো? ইউরোপের ইতিহাসে মেটানিক তন্ত্র বলতে কী বোঝো ?

ইউরোপের ইতিহাসে ১৮১৫ থেকে ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অস্ট্রিয়ার চ্যালেন্সার প্রিন্স মেটারনিক ছিলেন ইউরোপীয় কূটনীতির প্রধান ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ ৷ যার অংগুলি হেলনে ইউরোপীয় রাজনীতি আবর্তিত হতো ৷ এই কারণে ঐতিহাসিক ফিসার ও প্রমুখরা ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ অন্তবর্তী সময়কালকে মেটারনিক যুগ বলে অভিহিত করে থাকেন ৷ ইউরোপের পাক বিপ্লব রাজনৈতিক ব্যবস্থার পুনর প্রবর্তন,ফরাসি বিপ্লব প্রস্তুত উদারতন্ত্র,গণতন্ত্র , জাতীয়তাবাদী ভাবধারার প্রতিরোধে অস্ট্রিয়ার স্বার্থকে সবোত ভাবে বজায় রেখে ইউরোপীয় রাজনীতিতে তার নিরঙ্কুশ প্রাধান্য রক্ষা প্রভৃতির উদ্দেশ্যে প্রিন্স মেটারনিক যে নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন তাই মেটারনিক তন্ত্র নামে পরিচিত ৷
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
উনিশ শতকের ইউরোপে পুরাতন তন্ত্র ও রক্ষণশীলতা এবং আধুনিকতা ও প্রগতিশীলতার মধ্যে যে সংবাদ বেঁধেছিল তাতে সাধারণত মেটারনিককে পুরাতনতন্ত্র রক্ষণশীলতা ধারক ও বাহক বলে অভিহিত করা হয় ৷ তিনি ফরাসি বিপ্লব প্রস্তুত নবজাতক ভাবধারা অর্থাৎ উদারতন্ত্র,জাতীয়তাবাদ,গণতন্ত্রের ঘোর বিরোধী ছিলেন ৷ তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে বিপ্লবের ভাবধারায় ইউরোপের পুরাতন তন্ত্রের ফাটল ধরেছে ৷ তার কাছে,"বিপ্লব একটি আগ্নেয়গিরি যা নির্যাতিত করা প্রয়োজন বিপ্লব ,এটি একটি ব্যাধি যার প্রতিকার করা প্রয়োজন,বিপ্লব বহুমুখো বিশিষ্ট এক দানব যা গোটা সমাজ সভ্যতা কে গ্রাস করতে উদ্যত ।" তাই তিনি ঘোষণা করেন যে,"এই দুষ্টু ক্ষতকে উত্তপ্ত লৌহ শালাকা দ্বারা দগ্ধ করতে হবে।" তার মতে,"গণতন্ত্র প্রকাশ্য দিবালক কে অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত্রিতে পরিণত করে ৷"
যাইহোক মেটারনিক এর বিভিন্ন কাজের পশ্চাতে ঐতিহাসিকরা তিনটি মুখ্য উদ্দেশ্য লক্ষ্য করেছেন প্রথমত, তিনি প্রাক ফরাসি বিপ্লব সমাজ ব্যবস্থা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর ছিলেন ৷ অর্থাৎ তিনি বিপ্লব পূর্বে ইউরোপে যে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র অভিজাতন্ত্র সমাজতন্ত্র ও ক্যাথলিক গির্জার প্রাধান্য ছিল ওটা পুনর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন ৷ দ্বিতীয়ত ভিয়েনা সম্মেলনের পরবর্তীকালে মেটারনিকের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল তা রক্ষণশীল নীতিকে বজায় রাখার জন্য ভিয়েনা সম্মেলনের শর্তগুলিকে নিজস্ব স্বার্থে ব্যবহার করা ৷ তাই মেটারনিক সর্বত্র ভিয়েনা সম্মেলনের দ্বারা স্থাপিত স্থিতিস্থাকে রক্ষা করার নীতি গ্রহণ করেছিলেন ৷ ঐতিহাসিক কেটেলভী বলেছেন,"মাছ যেমন ঘূর্ণি হলে অবাধে বিচরণ করে তেমনি ভিয়েনা সম্মেলনের ঘূর্ণি হলে তিনি অবাধে বিচরন করেন ৷" তিনি ইউরোপের রাজশক্তিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে রাজত্ব করুন কিন্তু কোনোরুপ পরিবর্তন বা সংস্কার সাধন করবেন না ৷"
কোন কোন ঐতিহাসিক মেটারনিকের আরেকটি উদ্দেশ্য লক্ষ্য করেছেন সেটি হল যেভাবেই হোক একটি ইউরোপীয় যুদ্ধকে এড়ানো ৷ তাদের মতে এ কারণেই তিনি প্রাশিয়ার ও রাশিয়ার সঙ্গে পবিত্র চুক্তি মিলিত হয়েছিলেন ৷ ঐতিহাসিক সিমেন প্রমুখের মতে বিপ্লবের থেকেও যুদ্ধ অস্ট্রিয় সাম্রাজ্যের পক্ষে ক্ষতি ছিল তাই তিনি যুদ্ধকে নানাভাবে এড়াতে চেয়েছিলেন ৷"
তবে মেটারনিকের নীতির মূল কথাই ছিল অস্ট্রিও হ্যাবসবার্গ সাম্রাজ্যের ঐক্য এবং ইউরোপে অস্ট্রিয়ার নিরঙ্কুশ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা ৷ তিনি এটা উপলব্ধি করেছিলেন যে গণতাত্ত্বিক ভাবধারাকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক সীমান্তের বাঁধ দিয়ে রোধ করা যাবে না ৷ তাই এই স্বার্থে অন্য প্রতিবেশী দেশ বৈপ্লবিক ভাবধারা আত্মপ্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে তাকেও দমিয়ে দেওয়া প্রয়োজন ৷
বস্তুত অস্ট্রিও সাম্রাজ্য মেটারনিক এর হাতের মুঠোয় থাকায় তার রক্ষণশীল নীতি পুনঃপ্রকাশ হ্যাপসবার্গ সাম্রাজ্য সর্বপ্রথম পরিলক্ষিত হয় ৷ এই সময় অস্ট্রিয়ার সকল প্রকার সংস্কার ও প্রগতিশীল ভাবধারা নিষিদ্ধ করা হয় ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন নিষিদ্ধ করা হয় এবং ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ নিষিদ্ধ বলে ঘোষিত হয় ৷ শিক্ষার প্রতিষ্ঠানে ক্যাথলিক গির্জার আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করা হয় ৷ অস্ট্রিয়ার মধ্যে কোন প্রকৃতিশীল মতাদর্শ প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য ছাত্রদের বিদেশে অধ্যায়ন বা বিদেশি অধ্যাপকদের অস্ট্রিয়ায় অধ্যাপনা নিষিদ্ধ করা হয় ৷ সংবাদপত্রে স্বাধীনতার হরণ করা হয় ৷ ঐতিহাসিক হেইজের মতে,"কেবলমাত্র সংগীতের ওপর মেটারনিক নিয়ন্ত্রণ খাটাতে পারেননি।" এক কথায় বলা যায় অস্ট্রিয়ার স্বাধীনতা চিত্র ও যুক্তিবাদী মননশিলতার কন্ঠ রোধ করা হয় ৷
জাতীয়তাবাদী চেতনা বিভিন্ন জাতি সম্মিলিত সাম্রাজ্য পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর এ কথা বিবেচনা করে মেটারনিক দেশপ্রেমিক জাতীয়তা বাদীদের অস্ট্রিয়ায় কারাগারে নিক্ষেপ করেন ৷ ইচ্ছামত গ্রেফতার,গোপন বিচার দন্ড দান ইত্যাদি এই সময়ে অষ্ট্রিয়ার প্রশাসনের অন্যতম প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়ায় ৷ বিভাজন ও শাসন নীতি প্রয়োগ করে তিনি এই সময় অস্ট্রিয়ার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে বিচ্ছিন্ন করে রাখেন ৷ তার পেছনে বসে রাখার জন্য জার্মান সেনা মোতায়ন,ইতালির লম্বা ব্রিকে শায়েস্তা করার জন্য হাঙ্গেরিয়ান সেনাবাহিনীর নিয়োগ করেছিলেন ৷ এক কথায় তিনি বিভিন্ন জাতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ ও বিদ্বেষকে মূলধন করে প্রত্যেককে অস্ট্রিয়ার কাছে নত শিকার করতে বাধ্য করার নীতি গ্রহণ করেছিলেন ৷
মেটারনিকের অস্ট্রিও নীতি বা পরিকল্পনার সম্প্রসারিত রূপ জার্মানিতেই পরিলক্ষিত হয়। জার্মানিতে উদারপন তার প্রভাব অস্ট্রিয়ার থেকেও বেশি ছিল ৷ ফরাসি বিপ্লবের আদর্শ জার্মানির অনেক স্থানে তুলনামূলকভাবে গভীর শিকড় বিস্তার করেছিল ৷ জাতীয়তাবাদের আদর্শ জার্মানিতেই শক্তিশালী ছিল ৷ তাই ভিয়েনা কংগ্রেসের প্রথমেই তিনি জার্মানির ঐক্য করনের পরিকল্পনা বাতিল করে দেন ৷ মূলত তারই উদ্যোগে জার্মানিতে ৩৯ টি রাজ্য বিভক্ত করে একটি 'বুল্ড' বা 'রাষ্ট্র সংঘ' গঠন করা হয় ৷ অর্থাৎ মেটারনিক রাষ্ট্র সংঘ বুল্ডের ওপর অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করেন ৷ তিনি জার্মানিতে সর্বপ্রকার জাতীয়তাবাদী ও উদারনৈতিক সংস্কারের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন ৷ বস্তুত মেটানিকের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল জার্মানিকে দুর্বল ও খন্ডিত রেখে জার্মানির ঐক্য সাধনের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করা ৷
মেটারনিক জানতেন যে জার্মানির শিক্ষিত ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় বিশেষত বিদ্যালয়ের ছাত্র ও অধ্যাপক গন ছিলেন আধুনিক প্রগতিশীল মতাদর্শের সমর্থক ৷ এই সময় আবার বুনমোনশাফট প্রভৃতি জাতীয়তাবাদী ছাত্র সংগঠন গুলির ও সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন ৷ জাতীয়তাবাদ ও ছাত্র আন্দোলনকে দমনের জন্য জার্মানি শাসকদের 'কর্লস বাদ ডিগ্রী' বা হুকুমনামা প্রয়োগে বাধ্য করেন ৷ এই ডিগ্রীর দ্বারা ছাত্র ইউনিয়ন গুলিতে বাতিল করে দেওয়া হয় । তাছাড়া বহু ছাত্রদের কারারুদ্ধ ও সংবাদপত্রে স্বাধীনতা হরণ করা হয় ৷ রাজনৈতিক দলগুলিকে নিষিদ্ধ করা হয় । এছাড়াও মেইনজ একটি কেন্দ্রীয় কমিশন গঠন করা হয় যার কাজ ছিল গুপ্ত সমিতিগুলির কার্যকলাপ কে তদন্ত করা ৷
মেটারনিকের রক্ষণশীল নীতি কেবলমাত্র অস্ট্রিয়া ও জার্মানির সংকীর্ণ সীমারেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না ৷ তিনি মনে করতেন যে ভারসাম্য নীতি সমগ্র ইউরোপ জুড়ে প্রয়োগ করতে না পারলেও অস্ট্রিয়াতেই তা ব্যর্থ হবে । ইউরোপের স্থিতিস্থাকে বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর মেটারনিখ প্রর্শিয়া,রাশিয়া ও ব্রিটেনের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলেন ৷ ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের আইল্যাস্যাপ্যালে এই চতুর শক্তি মিশ্রিত হয়ে মেটারনিক প্রস্তাব দেন যে ভিয়েনা কংগ্রেস কৃত রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠন ইউরোপের ক্ষেত্রে বজায় রাখা হবে ৷ ব্রিটেনের বিরোধিতায় এই প্রস্তাব বাতিল হয়ে গেলেও ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে ট্রপো কংগ্রেস এবং প্রটোকল অফ ট্রপোর ঘোষণা দ্বারা ব্রিটেনের আপত্তি সত্ত্বেও আইল্যাস্যাপ্যালে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এই ঘোষণার দ্বারা বলা হয় যে, যদি কোন দেশে বিপ্লব ঘটে বা রাজাকে কোন উদারনৈতিক শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করতে বাধ্য হয় তাহলে শক্তিবর্গ তা কখনো মেনে নেবে না এবং যৌথ হস্তক্ষেপে দ্বারা তার দমন করা হবে ৷
টপা প্রটোকল ঘোষণার দ্বারা অস্ট্রিয়ার সেনাদল কে ইতালির নেপলস্ ও মধ্য ইটালির পিডয়টের উদারনৈতিক বিপ্লব দমনে দায়িত্ব দেওয়া হয় ৷ মেটারনিকের আচরণের এবং শক্তি সমবায়ের নির্দেশে ফরাসি সেনাদল বেনে উদারপন্থী বিরোধী বিদ্রোহ দমন করেন ৷ স্পেনের শক্তি সমবায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইংল্যান্ড শক্তি সমবায় সংখ্যা পথ ত্যাগ করেন ৷ এত সত্বেও মেটারনিক তার নীতি থেকে একটুও বিচ্যুতি হয়নি ইউরোপের সর্বোচ্চ শক্তিভাগী অগণিত মানুষকে বন্দী, হত্যা ও নির্বাচিত করা হয় এবং সর্বোচ্চ নির্মম স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের প্রতিষ্ঠা করা হয় ।
মেটারনিক এর জাতীয়তাবাদ বিরোধী নীতির একটি বড় দৃষ্টান্ত হলো,"গ্রিক স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রশ্নে আর অসমনীয় মনোযোগ গ্রীক তুরস্কের অধীনতা বাদ বিঘ্ন করে স্বাধীনতা লাভের জন্য উদ্ধত হলে মেটারনিকের তীব্র বিরোধিতা করেন অর্থাৎ বলপূর্বক জাতীয়তাবাদ থেকে তিনি দমন করেন ৷
এইভাবে দেখা যায় যে ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ মেটারনিক ব্যবস্থা মোটামুটি সাফল্য লাভ করেছিল,এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় ৷ বস্তুত ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লবের পর থেকে মেটারনিক তার ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ধাক্কায় তার ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে ৷ মেটারনিকের এ ব্যর্থতার পেছনে ছিল একাধিক কারণের সমাবেশ --
প্রথমতঃ মেটারনিক ছিলেন একজন প্রতিক্রিয়াশীল সংস্কার বিমুখ ও শাসক ৷ কিন্তু 'পরিবর্তনই যে ইতিহাসে ধর্ম' এটা তিনি ভুলে গিয়েছিলেন বস্তুত কালের অনিবার্য গতিময় তাকে অস্বীকার ও আগ্রহ করার রাষ্ট্রীয় কারণে তার পতন ঘটেছিল ৷
দ্বিতীয়তঃ মেটারনিকের নীতির মূল কথা ছিল ভারসাম্য কিন্তু অষ্টাদশ শতকের ভারসাম্য উনিশ শতকের অচল হয়ে পড়েছিল, যা তিনি উপলব্ধি করেননি ৷ তিনি দমননীতির মধ্যাঙ্গে তার নীতি ইউরোপের ওপর জোর করে চাপিয়ে দিতে বসেছিলেন ৷
তৃতীয়তঃ মেটারনিকের নীতির মূল ত্রুটি ছিল যে তিনি গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী আদর্শকে বল প্রয়োগের দ্বারা দমন করতে চেয়েছিলেন ৷ কিন্তু এই সত্য উপলব্ধি করতে পারেননি যে বিপ্লবকে দমন করা গেলেও বিপ্লবী আদর্শকে দমিয়ে রাখা যায় না ।
চতুর্থতঃ মেটারনিক এক যুগসন্ধিক্ষণের আবির্ভূত অবঙ্গিত হয়েছিলেন তিনি যুগের দাবিকে সঠিকভাবে বুঝতে পারেননি বা অন্যভাবে বলতে গেলে বোঝার চেষ্টা করেননি ৷ ইতিহাসের গতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বেশি দিন সফল হওয়া সম্ভব নয় ৷ সেই মুহূর্তে তার উচিত ছিল নতুনকে স্বাগত জানানো কিন্তু তিনি ভুলে গিয়েছিলেন যে তিনি বাধ্য দশা গ্রস্থ হলেও পৃথিবীর প্রতিদিন নবজোয়ার লাভ করেছিল ৷ তাই অপেক্ষার সঙ্গে তিনি একদা মন্তব্য করেছেন," এই পৃথিবীতে আমার কিছু আগে বা কিছু পরে আসা উচিত ছিল কিছু আগে এলে আমি পৃথিবীকে উপভোগ করতে পারতাম, পরে এলে নতুন বিশ্ব গঠনের শরিক হতাম ৷ কিন্তু বর্তমানে খবিষ্ণু সমাজের অস্তিত্ব বজায় রাখতে আমি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছি । তবে একথা সত্য যে ফরাসি বিপ্লবের সময় ইউরোপে যে অরাজকতা এবং নেপোলিয়নের যুগ যে যুদ্ধ বিগ্রহ দেখা গিয়েছিল মেটারনিকের স্মৃতি বস্তার নীতি তা থেকে ইউরোপকে রক্ষা করতে অন্তত 30 বছরের জন্য শান্তি ও সুস্থ স্মৃতি এনে দিয়েছিল ৷