১৯৬০ এর দশকে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের ইতিহাস সংক্ষেপে আলোচনা কর

১৯৬০ এর দশকে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের ইতিহাস সংক্ষেপে আলোচনা কর

১৯৬০ এর দশকে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের ইতিহাস সংক্ষেপে আলোচনা কর

১৯৬০ এর দশকে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের ইতিহাস সংক্ষেপে আলোচনা কর 

 ১৯৬০ এর দশকে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের ইতিহাস সংক্ষেপে আলোচনা কর



প্রাচীন জাতি বর্ণগত বৈষম্যের মধ্যে সমাজ প্রতিনিয়ত নানা বাধা বিপত্তির মধ্য শ্রেণিগত ঘটেছে ও ঘটে চলেছেন। এই বৈষম্য ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়া এবং জাতিগত দিক থেকে নিম্ন বর্ণের মানুষ নিজেদের দাবি-দাওয়া, অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। তাদের এই প্রচেষ্টা পরবর্তী সময়ে ঔপনিবেশিক যুগে ভারত তথা বিশ্বের অন্যান্য দেশে আন্দোলনের সূচনা ঘটেছে। আফ্রিকার আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গদের সামাজিক সাধীকারের দাবিতে কয়েক শতাব্দী ধরে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ঘটেছে। বহু ক্ষেত্রে সাফল্য ঘটেছে আবার অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থতা এসেছে।। অনেক অত্যাচার, নিপীড়ন, নিগ্রহের শিকার হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গরা, অনেকের প্রাণহানিও ঘটেছে। আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ সংগ্রামের ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যায় যে, ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ড্রেট স্কট প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ যিনি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার জন্য আবেদন করেছিল। 


 স্বেতাঙ্গরা কৃষ্ণাঙ্গদের উপর জোর করে অন্যায় ভাবে বিচারের নামে প্রহসন করে ,শান্তি বিধান করেন ৷ ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দের কৃষ্ণাঙ্গ রমণী রোজা মার্কস আলকমার মন্টেগোমারীতে প্রচলিত আইন ভঙ্গ করে পাবলিক বাসে শ্বেতাঙ্গদের সিটে গিয়ে বসে পড়েন । ফলে শ্বেতাঙ্গরা খুবই ক্ষেপে গিয়ে রোজা মার্কস ভীষণভাবে মারধর ও অপমান করেন এমনকি গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয় ৷ মাটির লুথার জুনিয়র কিং এই অন্যায় কে সহ্য করতে পারেননি ৷ NAACP পার্টির সভাপতি হিসেবে তিনি সর্বদা বর্ণবৈষম্যবাদ এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে ডাক দেন ৷ কৃষ্ণাঙ্গরা আর মন্টেগোমারীর পাবলিক সিটি বসে আরোহন করবে না ৷ বয়কট করবে বাসে চড়া ৷ পরে বাস কোম্পানিগুলো নিজেরাই ক্ষমাপ্রার্থনা করে কৃষ্ণাঙ্গদের সাথে মীমাংসা করে বাসে শ্বেতাঙ্গদের জন্য সিট রিজার্ভেশন প্রথা তুলে দেওয়া হয় ।


১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয় কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্রদের আন্দোলন ৷ তারাও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শ্বেতাঙ্গ ছাত্রদের পাশাপাশি সমান অধিকার চাই । ক্রমে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা উত্তর ক্যারোলিনা থেকে দক্ষিণ ক্যারোলিনা এবং ভার্জিনিয়া পর্যন্ত ৷ লুথার কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্রদের প্রতি দাঙ্গা হাঙ্গামা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবার আহ্বান জানান ৷ আটলান্টার একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ছিল যেখানে খাবার টেবিলে পৃথক আসন পদ্ধতি কড়াকড়িভাবে মেনে চলা হতো ৷ একদিন মাটির লুথার কিং জুনিয়র তার সাথে ৭৫ জন ছাত্র নিয়ে প্রবেশ করলে সেই অভিজাত হোটেল কক্ষে ৷ তারপর শ্বেতাঙ্গদের জন্য নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসে পড়লে সবাইকে নিয়ে ৷ শ্বেতাঙ্গ কাস্টমার ও হোটেলের  শ্বেতাঙ্গ কর্মচারীরা এসে আক্রমণ করে বসলো মার্টিন লুথারের দলকে ৷ গোল যোগে ৩৬ জন কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্র সহ মার্টিন লুথার কিং কেউ গ্রেফতার করা হলো ৷


১৯৬১ খ্রিস্টাব্দের Student non-violent coorination committe এর সংঘটিত রবার্ট মোজেস একটা পরিকল্পনা করেন যাতে কৃষ্ণাঙ্গদের নামে নথিভুক্ত করা হয় । এর ফলে শ্বেতাঙ্গরা ক্ষুদ্র হয়ে তেড়ে আসেন কৃষ্ণাঙ্গ ভোটাধিকারের লড়াকু কর্মী হার্বাট-লি কে হত্যা করার হয় । এই ঘটনার পরবর্তী সময়ে কৃষ্ণাঙ্গ স্বাধীনতা আন্দোলনকারীরা অনুভব করেন যে নাগরিক অধিকারের সব সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে ৷ ১৯৬২ এর ফেব্রুয়ারি মাসে উক্ত দুটি সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে Councill of federated organisation"  গঠন করে পরবর্তী সময়ে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন south christian leadership conference কৃষ্ণাঙ্গদের ভোটাধিকারের দাবির প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে শ্বেতাঙ্গরা তাদের অধীনে কর্মরত কৃষ্ণাঙ্গদের ছাটাই করতে থাকে ৷ এমনকি কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের বাড়ি থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও কৃষ্ণাঙ্গদের ভোটার নথিভুক্ত করুন আন্দোলন দমন করা সম্ভব হয়নি ৷ ধীরে ধীরে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ-পশ্চিম জর্জিয়া,লুইসিয়ানা, আলকামা এবং দক্ষিণ ক্যারোলিয়ায় ।


১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে কামিংহামে 6 হাজার কৃষ্ণাঙ্গ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে পৃথক সিটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ৷ এদের মধ্যে ৯৫৯ জন ছাত্রছাত্রীকে গ্রেফতার করা হয় ৷ শ্বেতাঙ্গ পুলিশ ও জনতা এই বিক্ষোভের শিশু-কিশোরদের ওপরও চালায় অকথ্য অত্যাচার ৷ একটি কৃষ্ণাঙ্গ গির্জার শ্বেতাঙ্গ বা বোমা হামলাও চালিয়ে চারজন নিষ্পাপ কৃষ্ণাঙ্গ কিশোরীকে হত্যা করেন ৷ জেল থেকে বেরিয়ে এসে লুথার আবার প্রবল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েন সংগ্রামে ৷ তিনি এক লক্ষ পঁচিশ হাজার লোকের এক বিশাল জনতা নিয়ে শুরু করেন মুক্তি পথযাত্রা ৷ ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে ২৭ আগস্ট তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে আড়াই লক্ষ লোকের এক সম্মেলন অনুষ্ঠান করেন ৷ এই সম্মেলনে কৃষ্ণাঙ্গদের পাশাপাশি মানবজাতির অনেক শ্বেতাঙ্গ যোগদান করেন ৷ পরের বছর ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক কৃষ্ণাঙ্গ বিরোধী শহর বলে খ্যাত হয় ৷ তিনি আন্দোলন পরিচালনা করেন কৃষ্ণাঙ্গদের স্বাধিকার ও স্বাধীনতার আন্দোলনে ভোটাধিকারের দাবি প্রধান হয়ে ওঠে ৷ অবশেষে ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের "Civil right Act" পাস হলে সকলের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয় ।

১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে লস অঞ্জলেস এর ওয়ার্ল্ডস হাউসিং প্রজেক্ট একটি রুটিন মাফিক মার্টিন লুথার যান ৷ সেখানে পুলিশ এবং পথচারীদের মধ্যে খন্ড যুদ্ধ বাদে পরিণতে ছয় দিন যাবত দাঙ্গা চলে মৃত্যু হয় ৩৮ জনের ৷ আমেরিকায় গৃহযুদ্ধের অবসানের পর কৃষ্ণাঙ্গ বনগত বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করে ৷ নাগরিক অধিকার ভোটাধিকার স্বাধীন তার দাবি মেনে নেওয়া হয় ৷ ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে নাগরিক অধিকার করা রক্ষার আইনজীবী থারগুড মার্শাল প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ যিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান প্রথম বিচারপতি নিযুক্ত হন । ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে নাগরিক অধিকার রক্ষার আন্দোলনে সব থেকে খ্যাত প্রথম নোবেল প্রাপক মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র আততায়ীর গুলিতে নিহত হন ৷ তবে কৃষ্ণাঙ্গদের আন্দোলন অব্যাহত থাকে ৷



আমেরিকার বর্ণবিদ্বেষী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে কৃষ্ণাঙ্গরা তাদের অধিকার আদায়ের চেষ্টা অব্যাহত রাখে। ২০০০ খ্রিস্টাব্দে রাষ্ট্রপতি জর্জ বুশ আফ্রিকান আমেরিকানকে তার মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছিলেন । কৃষ্ণাঙ্গ পাওয়েল হন সেক্রেটারি অফ স্টেট, কন্দলিজা রাইস বিদেশ দপ্তরের পরামর্শদাতা এবং রভারিক পেইগ হন শিক্ষা সচিব । কেবল কৃষ্ণাঙ্গরা আমেরিকার মন্ত্রিসভার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি । ২০০৮ সালে আমেরিকায় প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি হন বারাক হোসেন ওবামা। তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য ২০১২ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভ করেন । এইভাবে আফ্রিকান আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গরা তাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নিজেদের স্বাধীনতা আদায় সচেষ্ট হন । 



About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟