দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণগুলি আলোচনা কর অথবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা কর বা,Discuss the causes of World War II

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণগুলি আলোচনা কর অথবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা কর

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণগুলি আলোচনা কর অথবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা কর

কোন একটি বিশেষ কারণে বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হয় না দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পশ্চাতে বহু কারণ বিদ্যমান ছিল ৷  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল বিশ্ব ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ানক যুদ্ধ এই যুদ্ধে একদিকে ছিল অক্ষশক্তিভুক্ত জার্মান ইটালি জাপান প্রভৃতি রাষ্ট্র এবং অন্যদিকে ছিল ইংল্যান্ড ফ্রান্স রাশি আমেরিকা প্রভৃতি রাষ্ট্র ৷ জার্মান কর্তৃক পোল্যান্ড আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে ইঙ্গ ফরাসি শক্তির ৩ সেপ্টেম্বরে পোল্যান্ডের পক্ষে জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় ৷

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য অনেকে ১৯১৯ সালে .ভার্সাই সন্ধিকে দায়ী করেন ৷ এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল জার্মানিকে চিরতরে পঙ্গু করে রাখা এবং এই চুক্তি দ্বারা জার্মানিকে নিরস্ত করে রাখা । জার্মানির উপনিবেশ কেড়ে নেওয়া । জার্মানির উপর অকল্পনীয় ক্ষতিপূরণের দাবি চাপিয়ে দেওয়া এই সন্ধির স্বাক্ষরের সময় জার্মানির সঙ্গে সৌজন্যমূলক ব্যবহার টুকু করা হয়নি তাই জার্মানরা এই সন্ধি মনেপ্রাণী গ্রহণ করতে পারেনি। ঐতিহাসিক ইএইচ কার থেকে জবরদস্তি মূলক চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন । তাই জার্মান জনগণ ভার্সাই সন্ধিকে শর্তাবলী লংঘন করতে বদ্ধপরিকর ছিল ৷



প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে কয়েকটি দেশে একনায়ক তান্ত্রিক শাসকের উদ্ভব ঘটে এদের মধ্যে অন্যতম ছিল ইটালির ফ্যাসিস শাসক মুসোলিনি জার্মানির নাৎসি শাসক হিটলার জাপানের শাসক তোজো প্রমুখ ও তাদের উগ্র সাম্রাজ্যবাদ ও যুদ্ধ বাদী নীতি বিশ্বে অশান্তি সৃষ্টি করে ৷ বিভিন্ন রাষ্ট্রের আদর্শগত সংঘাত বিশ্বযুদ্ধের পথকে প্রশস্ত করেছিল ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল গণতান্ত্রিক আদর্শ বনাম ফ্যাসিবাদী মতাদর্শের সংগতের ফল ৷



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংগঠনে ইংল্যান্ড ফরাসি শক্তি তোষণ নীতি কম দায়ী ছিল না জার্মানি রাশিয়ায় ইতালি প্রভৃতির শক্তি বৃদ্ধিতে ইংল্যান্ড ফ্রান্স প্রভৃতি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গুলিরভিত হয়ে পড়েছিল এদের কাছে রাশিয়া ছিল জার্মানির থেকেও বেশি বিপদজনক তাই ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স সর্বদা তুষার নীতির মাধ্যমে জার্মানিকে উপেক্ষা করতে থাকে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের বিশ্বাস ছিল ওই হিটলার রাশিয়ার সাম্যবাদকে ধ্বংস করবে এই দেশ গুলি বুঝতে পারেনি হিটলার মুখে বলতেন এক আর কাজ করতেন অন্য মিউনিখ চুক্তি ভঙ্গ করে হিটলার চেকোস্লোবিয়া গ্রাস করে নিলে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের তোষণ নীতির ব্যর্থতার স্পষ্ট হয়ে ওঠে, ইংল্যান্ডের ফ্রান্সের দুজন নীতি হিটলার কে অগ্রাসী করে তুলেছিল ৷



নাৎসি জার্মানির উগ্র জাতীয়তাবাদ প্রস্তুত সাম্রাজ্যবাদ নীতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ ছিল ৷ হিটলারের দৃষ্টিতে জার্মান জাতি আর্য জাতি, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি ৷ সুতরাং এই শ্রেষ্ঠত্বের বজায় রাখার জন্য ভার্সাই সন্ধিকে নস্যাৎ করে জার্মানির হিত মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা এবং সমগ্র জার্মান ভাষাভাষী অঞ্চলকে জার্মানির সঙ্গে যুক্ত করা হিটলারের কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল ৷ সেই কারণেই হিটলার আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করে এবং এর ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয় ৷



প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হলে জাতিসংঘ তার লক্ষ্য পূরণের বারবার ব্যর্থ হয় যেমন এক জাপান চীনের মাঞ্চুরিয়া দখল করলেও জাতিসংঘ জাপানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি দুই ইটালির এবিসিডিয়া দখল করলেও জাতিসংঘ তা প্রতিরোধ করতে পারেনি 3 জার্মানি জাতিসংঘ ত্যাগ করার পর একে একে লাইন ভূখণ্ড অস্ট্রিয়া চেকসিলোবিয়া প্রভৃতি দখল করেন কিন্তু এই রকম পরিস্থিতিতেও জাতিসংঘ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে



 জাতিসংঘের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল নিরস্তীকরণের মাধ্যমে যুদ্ধের সম্ভাবনাকে হাস করা সেই মতো জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে জেনেভাতে নিস্তারি করনে সম্মেলন শুরু হয় । জেনেভার নিস্তরণীকরণ সম্মেলনে বৃহৎ শক্তি গুলি জার্মানির অস্ত্রশক্তি হাসে অত্যন্ত উদ্ভিক হলেও তারা নিজেদের অস্তশক্তি হাস করতে রাজি ছিল না জার্মানির নিজের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির সুযোগ না পেয়ে সম্মেলন ত্যাগ করে নিজের ইচ্ছে মতো সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে ৷ এই নিরস্তিকরণ সম্মেলন সফল হলে অর্থাৎ অস্ত্রের প্রাচুর্য হাস পেলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এত সহজে শুরু হতে পারত না ‌৷



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ হলো উপনিবেশিক সমস্যা বিংশ শতকে শুরুতে বিশ্বের অধিকাংশ উপনিবেশ ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম,হল্যান্ড আমেরিকা প্রভৃতি দেশ এর দখলে চলে যায় ৷ পরবর্তীকালে ইটালি, জাপান প্রভৃতি দেশগুলি খুবই বেশি উপনিবেশ দখল করার সুযোগ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়  ৷ তাছাড়া ভার্সাই সন্ধির ফলে জার্মান তার সব উপনিবেশ নিত্য পক্ষের হাতে সমর্পণ করতে বাধ্য হয়। জার্মান শক্তি অর্জন করার পর পুনরায় হারানো ও উপনিবেশ গুলি ফিরে পেতে উদ্যোগী হয়ে ওঠে। অবশেষে জার্মানি পোল্যান্ড দখল করার জন্য পোল্যান্ড আক্রমণ ( ১৯৩৯খ্রিঃ ১লা সেপ্টেম্বর) করলে বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় ৷



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চূড়ান্ত ও যুদ্ধে মৃত্যু শক্তির কাছে জার্মান নেতৃত্বাধীন অক্ষশক্তি পরাজিত হয় ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে তিসরা সেপ্টেম্বর ইতালি ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ৭ই মে জার্মানি এবং 2 সেপ্টেম্বর জাপান আত্ম সমর্পণ করে । ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়া শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার পরিপ্রেক্ষিতে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ সৃষ্টি হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এশিয়া ও আফ্রিকার পরাধীন দেশ গুলিক্রমে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।



About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟