কাল্পনিক বা ইউটোপিও সমাজতন্ত্র সম্পর্কে আলোচনা কর অথবা, discuss imaginary or utopian socialism

 কাল্পনিক বা ইউটোপিও সমাজতন্ত্র সম্পর্কে আলোচনা কর

কাল্পনিক বা ইউটোপিও সমাজতন্ত্র সম্পর্কে আলোচনা কর

রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসে বিশেষ করে সমাজবাদী চিন্তা ধারার বিকাশের ইতিহাস এই ইউটোপীয় বা কাল্পনিক সমাজবাদ এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছে এই কাল্পনিক সমাজবাদের বৈশিষ্ট্য বা প্রকৃতি আলোচনা করতে গেলে প্রথমে তার সংজ্ঞা আলোচনা করা প্রয়োজন। 

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

কাল্পনিক সমাজবাদের কল্পনার আশ্রয় নিয়ে সমাজবাদের চিত্র আঁকা হয়েছে এখানে এমন এক আদর্শভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে যা একমাত্রই কল্পলকেই সম্ভব। কারণ এই মতবাদের বক্তব্য হল সমাজের যে বৈষম্য আছে তা দূর করতে বিপ্লবের প্রয়োজন নেই এমনকি ব্যক্তিগত মালিকও না আর অবসানেরও প্রয়োজন নেই আবেদন নিবেদনের মাধ্যমে সমাজবাদী সমাজ গড়ে তোলা যায় বাস্তবের দিকে তাকালে এটি কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয় কারণ বুর্জোয়া আসেনি সহজেই তাদের অধিকার ত্যাগ করতে রাজি হতে পারে না সে দিক থেকে বলা যায় যে মতবাদ কল্পনাভিত্তিক আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা প্রচার করে তাকে বলে কাল্পনিক সমাজবাদ



কাল্পনিক সমাজবাদের উৎসভূমি হল ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব ও ফ্রান্সের ফরাসি বিপ্লব থেকে শিল্প বিপ্লবের ফলে শ্রমিক সেনের শোষিত ও বঞ্চিত হতে থাকে এই শোষণের অবসান ঘটাতে সমাজবাদী চিন্তার জন্ম হয়। এই ব্যাপারে ফরাসি বিপ্লবের ভূমিকা ও আছে অনেক। এই বিপ্লবের উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষের শাসন প্রতিষ্ঠা করা কিন্তু বিপ্লবের ফলে সাধারণ মানুষের শোষণের শিকার হয় এই বাঞ্ছনার প্রেক্ষাপটেই কাল্পনিক সমাজতন্ত্রের জন্ম হয়।



কাল্পনিক সমাজবাদের বিশিষ্ট সমর্থক হলেন ফ্রান্সের  সা সি মো তিনি বলেছেন পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় শ্রমিকদের শোষণের জন্য দায়ী তারা সমাজের সংকট সৃষ্টি করেছে ব্যক্তিগত মালিকানার অবসান ঘটিয়ে সমাজবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা করলে এই সংকট দূর হবে আরেকজন সমর্থক হলেন চার্লস ফুরিয়ে তিনি বলেছেন সমাজের অবক্ষয় ও দুর্নীতির জন্য পুঁজিবাদী দায়ী তবে বিপ্লব নয় পুজাপতিদের মধ্যে শুভ বুদ্ধি জাগানোর মাধ্যমে সমাজের কল্যাণ সম্ভব ৷



কাল্পনিক সমাজবাদের বৈশিষ্ট্য গুলি হল --

  1. কাল্পনিক সমাজবাদ পুঁজিবাদের স্বরূপ উপলব্ধি করতে পেরেছে কারণ কাল্পনিক সমাজবাদীরা বলেছে সাধারণ মানুষের শোষণের জন্য পুঁজিবাদী দায়ী মাঝে ব্যক্তিগত মালিকানার জন্য শোষণের সুযোগ তৈরি হয়েছে তাই ব্যক্তিগত মালিকানা অবসান না হলে মুক্তি আসবে না ৷
  2. কাল্পনিক সমাজবাদীরা মনে করেন সমাজবাদ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে বিপ্লবের প্রয়োজন নেই সমাজের দুর্দশা আর মূল কারণ হলো অর্থনীতি সুতরাং অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে শ্রমিকদের দুর্দশা দূর করা যেতে পারে ৷
  3. কাল্পনিক সমাজবাদীরা পুঁজিবাদের পাশাপাশি সাম্যবাদী সমাজ গড়ে তুলতে চেয়েছেন তারা মনে করেন দুটি সমাজ পাশাপাশি থাকলে সাম্যবাদী সমাজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হবে তখন পুঁজিবাদী সমাজ আপনা আপনি সরে যাবে।
  4. কাল্পনিক সমাজবাদ শেষ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সেখানে এমন এক তৈরীর পরিবেশ তৈরি করা হবে যেখানে বৈষম্য থাকবে না প্রত্যেকে সমান অধিকার ভোগ করতে পারবে। ব্যক্তিগত মালিকানার অবসান ঘটবে ফলে শ্রেণীবৈষম্য লোপ পাবে।


কাল্পনিক সমাজবাদ বিভিন্ন দিক থেকে সমালোচিত হয়েছে যথা প্রথমত সমালোচকরা বলেছেন পূজোপজিদের কাছে আবেদন নিবেদন করলে তারা শোষণ বন্ধ করবে এটি বাস্তবে সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত সমালোচকরা বলেছেন কাল্পনিক সমাজবাদ ব্যক্তিগত মালিকানার অবসান চাইনি। তৃতীয়ত সমালোচকেরা বলেছেন কাল্পনিক সমাজবাদ অস্পষ্ট ৷



সমালোচিত হলেও কাল্পনিক সমাজবাদের অবদানকে অস্বীকার করা যাবে না । কোন মতবাদ কে সেই যুগের প্রেক্ষাপটে বিচার করতে হবে । সে যুগের বিপ্লবের পরিবেশ ছিল না তাই কাল্পনিক সমাজবাদ বিপ্লবের কথা বলেনি । কাল্পনিক সমাজবাদ যুক্তি ও ন্যায় বিচারের আলোকে সমাজ পরিবর্তনের কথা বলেছে ৷ কাল্পনিক সমাজবাদ বৈজ্ঞানিক সমাজবাদের অন্যতম উৎস ৷

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟