সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের জন্য মিথাইল গর্ভাচেভ কতখানি দায়ী ছিল আলোচনা কর

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের জন্য মিথাইল গর্ভাচেভ কতখানি দায়ী ছিল

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের জন্য মিথাইল গর্ভাচেভ কতখানি দায়ী ছিল আলোচনা কর

১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের রাশিয়ার মহান নেতা ভ্লাদিমির ইলিচ উইলিয়ব লেনিনের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রমাণ বিশ্ব ইতিহাসে ছিল এক বিস্ময়কর্য ৷ কাল মার্কস তার "ম্যানিফোস্ট  অফ দা কমিউনিস্ট পার্টি দাস ক্যাপিটাল" এর মধ্য দিয়ে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের রূপরেখা প্রদান করেছিলেন ৷ সেই রাষ্ট্র দর্শনের সামনে রেখে রাশিয়া মাটিতেই প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে ওঠে ৷ এরপর প্রেসিডেন্টস স্ট্যানিল, বুলগিরিয়া, ক্রুশ্চেভ  ব্রিজেন প্রমুখর রাষ্ট্র প্রধানরা রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে অতি দ্রুত বিকশিত করে এবং পৃথিবীর দুই সুপার পাওয়ার একটি সুপার পাওয়ার এ পরিণত হয় । রাশিয়ার এই দ্রুত উন্নয়নে বিশ্ব ইতিহাসে যতটা আলোচিত তেমনি, প্রেসিডেন্ট মিথাইল গর্ভাচেভবের সময় ১৯৯১ সালের সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার ভাঙ্গন এটিও ইতিহাসে এক বড় বিস্ময় বলে বিশেষ বিশ্লেষিত হয়ে আছে ৷

এখন প্রশ্ন হল পৃথিবীর বৃহৎ অতি দ্রুত বিকশিত সামরিক শক্তিতে বলিয়মান রাশিয়ার এই ভাঙ্গনের কারণ কি ছিল? এই পাষাঙ্গিকায় ঐতিহাসিকরা বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন ৷ তবে 1991 এর সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার পতনের কারণ নিহিত ছিল তার ব্যবস্থার মধ্যেই ৷ কিছু ঐতিহাসিক বলে রাশিয়া দ্রুত বিকাশের মধ্যে তার দুর্বল নিহিত ছিল ‌৷ তবে যে কারণগুলি সম্পর্কে অধিকাংশ ঐতিহাসিক একমত হয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো উৎপাদন ব্যবস্থাপন, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সমাধিত উৎপাদন ব্যবস্থায় একটি পর্যায়ে নিয়ে বিকশিত হয়ে পড়েছিল ৷ চাহিদার সাথে উৎপাদন সামঞ্জস্য রাখতে না পারায় রাশিয়ার অর্থনীতির পরিবর্তন সৃষ্টি হয়েছিল ৷

একদলীয় ব্যবস্থা গণতন্ত্রের কেন্দ্রীকতার নামে ক্ষমতার অপব্যবহারে এবং কমিউনিস্ট পার্টির কিছু নেতার অধিক ক্ষমতালো হয়ে ওঠার ফলে মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতার আখ্যা প্রাপ্ত হয় ৷ সমাজতন্ত্রের লক্ষ্য শ্রেণি বাপন হলেও ক্ষমতাশালী কমিউনিস্ট পার্টির কিছু নেতৃত্ব তারা ক্রমাগত নীরবত শ্রেণীতে নিপীড়ন হয় ৷ ফলে নেতৃত্ব এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে দূরত্ব করে রাষ্ট্রের উদ্যোগে সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে । ফলে সামন্ততন্ত্র অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে ওঠে ফলে রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপে জনগণের ভূমিকা ক্রমশ কমতে থাকে ৷

সাম্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন যতটা কঠিন তার থেকেও অনেক বেশি কঠিন হলো সমাজতান্ত্রিক মনের নাগরিক তৈরি করা ৷ নাগরিক তার সামর্থ্য অনুযায়ী রাষ্ট্রের উৎপাদনে অংশগ্রহণ করবেন ৷ এরা কেবল প্রয়োজন মতো ভোগ করবে এটি হলো সামন্ততান্ত্রিক কাঠামোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ৷ আর এই নতুন আদর্শ ভুক্ত নাগরিক মনোনীত জন্য রাজনৈতিক সংগঠন মার্কসবাদী রাষ্ট্র দর্শন বা মতাদর্শের ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন ছিল ৷ রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি ক্রমশ তা থেকে দূরে সরে যেতে থাকে ৷ ফলে সমাজতান্ত্রিক আর্দশ হীনতা রাশিয়ার মধ্যে প্রবল আকার ধারণ করে ফলের সমাজতান্ত্রিক নাগরিক গঠনের কাজে ঠিক থেমে যাওয়ার ফলে ক্ষমতা কেন্দ্রীয় রাজনীতির প্রবণতা বাড়ে যারা রাশিয়াকে দুর্বল করে তোলে ৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিঘাত রাশিয়ার ভীষণভাবে আঘাত করে ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোট প্রান হারায় ছয় কোটির মানুষ এর মধ্যে একা রাশিয়া হারায় ২ কোটি ৯ লক্ষ ৪৭ হাজার মানুষ ৷ রাশিয়ার অর্থনীতি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ঠান্ডা লড়াই ও রাশিয়া ছড়িয়ে পড়ে এই সময়ই বিশ্বের পুঁজিবাদের প্রসার রোধ করতে গিয়ে পূর্ব ইউরোপ এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা একাধিক রাষ্ট্রে আর্থিক সামরিক সাহায্য প্রেরণ করে তার অর্থনীতির কে চাপ সৃষ্টি করে ৷

স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর 1956 সালে রাশিয়ার বিশিষ্ট পার্টি বিংশতম রাশিয়াকে স্ট্যালিনের কর্মসূচি থেকে কমিউনিস্ট পার্টি সরে আসে ৷ কমিউনিস্ট পার্টিকে সরবরাত্রি করে মধ্যে বিক্ষিপ্ত করার জন্য উদ্যোগী হয় ৷ ফলে পার্টির শৃঙ্খলা শিথিল হয়ে পড়ে ৷ জাপানের স্বাধীনতার দাবি সোভিয়েত হতে থাকে ৷ এমন অবস্থায় রুশ মিথাইল গর্ভাচেভ গ্লাসনস্ত অর্থাৎ মুক্তকন্ঠ এবং পেরেস্ত্রইকা অর্থাৎ পুনর্গঠন ৷ ফলে রাশিয়ার সমাজ জীবনে পার্টির নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে গণতান্ত্রিক ভাবের বিকাশ ও ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন ফলে মানুষ আরো বেশি গণতন্ত্রের দাবিতে সোচ্চারিত হয় ৷ ফলে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরের দ্বন্দ্ব বৃহৎ আকার ধারণ করে ৷

এমতাবস্থায় ধারাসা ইয়েলিৎমিশ এক অভুতান ঘটায় এই প্রেক্ষাপটে ১৯৯১ এর ২৬ এ জুলাই কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটি এক বেনামের মাধ্যমে রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টিকে ভেঙে দিয়ে সোশিয়াল পার্টিতে পরিণত করে ৷ এইভাবে ৭০ বছরের কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত সোভিয়েত রাশিয়ার ভাঙ্গন ঘটে ৷ রাশিয়ার প্রদেশ গুলি অর্থাৎ ইউক্রেন ,উজবেকিস্তান, কাজাকিস্তান,আজারবাইজান একে একে তাদের স্বাধীনতার ঘোষণা করে ৷

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের জন্য মিথাইল গর্ভাচেভ কতখানি দায়ী ছিল আলোচনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য