ইতিহাস চর্চায় থুকিডিডিসের ভাবদান আলোচনা করো? অথবা, থুকিভিডিসকে কেন বিঞ্জানসম্মত ইতিহাসচর্চার জনক বলা হয়?

ইতিহাস চর্চায় থুকিডিডিসের ভাবদান আলোচনা করো? অথবা,থুকিভিডিসকে কেন বিঞ্জানসম্মত ইতিহাসচর্চার জনক বলা হয়?


 
গ্রীক ইতিহাস চর্চা, ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে অনান্য দেশের ইতিহাস চর্চাকে পিছেনে ফেলে । এক্ষেত্রে আমরা একাধিক গ্রীক ঐতিহাসিকদের অবদান লক্ষ্য করি । যাঁদের মধ্যে থুকিডিডিস ছিল অন্যতম একজন । একজন ঐতিহ্য এবং কৃর্তত্বের জন্য প্রভাবিত না হয়ে ঘটনাকে বিচার বিশ্লেষণ করা, তার সমালচোনা করা এই নিরপেক্ষ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি যাঁ গ্রীক চিন্তার ইতিহাসে বিপ্লব এনে ছিল । সেই বৈপ্লবিক চিন্তা ধারার অন্যতম পথিবৃৎ ছিলেন ঐতিহাসিক থুকিভিডিস ৷


প্রাক প্রচলিত ৪৫০ এর দশকে এথেন্সের এবং বিরাট অভিজাত পরিবারে তার জন্ম, এই নগরে জন্মে ছিলেন ইতিহাস জনক হেরোডোটাস, এ সময় এথেন্সে হয়ে সাম্রাজ্য উঠেছিল বিশাল রাজনৈতিক জটিলতা এবং পারস্পরিক বিরোধমুখী, তাই এই পরিস্থিতির প্রভাব আমরা থুকিডিডিসের ইতিহাস লক্ষ্য করি ৷


প্রাক প্রচলিত ৪৩১ অব্দে যখন এথেন্স ও তার মিত্র পক্ষ এবং স্পার্টার নেতৃত্বধীন পেলোপনেসিও মধ্যে পেলোপেনেসিও যুদ্ধ হয়েছিল, যুদ্ধের শুরুতে থকিডিডিস যুদ্ধের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করবেন তা মনোস্থির করেন এবং, সেই মত রচনার কাজ শরু করেন, পরবর্তী কালে তিনি সেনাদক্ম নিযুক্ত হন । এসময় থেকে, যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছর বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করে তথ্য সংরক্ষণ করেন এবং তাঁর এই অভিজ্ঞতা লীপি বদ্ধ করেন "History of Peloponnesian War”

থুকিডিডিস তার গ্রন্থের প্রথম অধ্যায়ে মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ৷

[1]. তিনি প্রথমে গ্রীক ইতিহাসে পূর্ববর্তী যুদ্ধ গুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়েছেন,

[2]. হেরোডোটাস যেখানে তাঁর ইতিহাস শেষ করেন , সেখান থেকে পেলোপনেসিওর যুদ্ধের সূচনা পর্যন্ত 50 বছরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা দ্বিতীয় অংশে করেছেন ৷

[4]. যুদ্ধের জন্য দায়ী বিভিন্ন তাৎক্ষনিক কারনে বিদ বননা দিয়েছেন, প্রথম 10 বছরে যুদ্ধকে সাধারণত স্পার্টার রাজা ও সোনাদক্ষ আর্ক জামাসের নাম অনুসারে বলা হয় আরবিং ড্যামীয় যুদ্ধ, এক্ষেত্রে পাটা ও এথেন্স কেউ ই চায়নি যুদ্ধের শেষে' শান্তি আসুক, যুদ্ধে শেষ পর্ব শুরু হয়েছিল সিসিলির অভিজানের মধ্য দিয়ে ৷ তাঁর চোখে পেলোপনেসিওর যুদ্ধ ছিল অনেকগুলি যুদ্ধ ৷


থুকিডিডিস নিজে কখনো হেরোডোটাসের উল্লেখ, করেন নি ৷ এটা স্পষ যে হেরোডোটাসের গ্রন্থ সম্পকে সচেতন ছিলেন, তাঁর অনেক ধারনা, সমলোচনা থুফিডিসিসের লেখায় পাওয়া যায়, মূলত থুকিডিডিস তাঁর লেখার মধ্য দিয়ে হেরোডোটাসের ইতিহাসকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, তবে থুকিডিডিস অনেক সংস্কীর্ণ পরিসরে বৈজ্ঞানিক ইতিহাস লিখেছেন ৷ অলৌকিকর্তা এড়িয়ে নিরাপদ দৃষ্টি থেকে তিনি ইতিহাস রচনা করেন ৷


বিজ্ঞান ধর্মী পর্যবেক্ষশ তথ্যের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিসঠিক সময়কাল নির্ণয়- ইত্যাদির কারণে ঐতিহাসিক এরা থুকিডিডিসকে Seienctific Historian বলে অভিহিত করেছেন । পেলোপনেসি ও যুদ্ধের সূচনার নির্ভুল সময়কাল থুকিডিডিস কঠোর ভাবে এক দক উল্লেখ করেছেন, একমাত্র পরীক্ষা নিরিক্ষা কার্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যুদ্ধের কারণ তাৎক্ষনিক বর্ণনা যা যুদ্ধে সূচনা করেছিল এবং প্রকৃত কারণ যা তাঁর মতে এথেন্সের সামাজ্য বিস্তার-গোলাদা ভাবে বিশ্লেষন করেছেন ৷


থুকিডিডিসের ইতিহাসের ভাষা খুব কঠিন, সুসংবদ্ধ এবং শৈলীয় দিকথেকে গ্রীক সাহিত্যে প্রায় বিরল ‌‌ ঐতিহাসিক রোমিলি – এর মতে থুকিডিডিসের গ্রীক ভাষা বড়ো বেশি অপ্রচলিত এবং চড়া রং-এর আসলে সমিষ্ঠ দর্শন যা আসলে কোন বিষয়কে পরম্পর বিরোধী দৃষ্ঠি কোন থেকে ব্যাখ্যা করে, তা  থুকিডিডিসকে গভীর ভাবে প্রভাবিত করে করেছিল ৷ তবে তিনি শুধুমাত্র অনুসরণ করেনি ৷


থুকিডিডিসের ইতিহাসের ভাষা খুব কঠিন, ঘটনা বহুলল, 'আবেগবর্জীত যুদ্ধের ইতিহাস । তিনি অত্যন্ত সচেতন ভাবে গভীর অনু- সন্ধানের দ্বারা যুদ্ধের ইতিহাস রচনা করেছেন, এথেনীয় চরিত্রের বৈশিষ্ট্য, প্রাণ চাঞ্চল্য এবং রসবাধের কোনো পরিচয় তাঁর রচনায় নেয় ‌৷ গ্রীসের মানুষ তাঁদের জীবন,  সংস্কৃতি, শৈল্প, নাটক, যে সময়ে উন্নতি চরম সীমায় পৌঁছেছিল সেই সময়কে প্রতক্ষ্য করে ও তিনি নিজেদের  তিনি নিজেদের যুদ্ধের জয় -পরাজয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছিলো ।


এসব ত্রুটির সত্ত্বেও ডুরান্ট লিখেছেন নিরপেক্ষ ঐতিহাসিক পদ্ধতি, শ্রেষ্ঠের প্রতি নিষ্ঠ, নিখুঁত পর্যবেক্ষণ নিরপেক্ষ বিচার প্রদ্ধতি, ভাষার সুন্দর্য ও কঠোর বাস্তবতা গুনে রচিত থুকিডিডিসের গ্রন্থ, মূলত তিনি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি ভঙ্গিকা থেকে ইতিহাসকে তুলে ধরার চেষ্ঠা করেছিলেন ৷ তিনি, ইতিহাসকে কখনও ব্যক্তিগত কাহীনি অনুক্রম ভাবেন নি ৷ ইতিহাসকে দেখেছেন বিচিএ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মনোস্তাতিক শক্তির ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রবাহ রুপে ৷ অমলেশ ত্রিপাঠী মতো এমন সংযোগ বিস্ময়  কর অনেকটা অতি মানবিক ৷


ঐতিহাসিক দিক থেকে বিচার করলো পেলোপনেসিও যুদ্ধের ইতিহাসের জন্য থুকিডিডিসের গ্রন্থ ছিল অন্যতম, প্রকৃত পক্ষে তাঁর গ্রন্থ সর্বযুগেরসম্পদ হিসাবে ইতিহাস চর্চ্চার মান্যতা পেয়েছে, এবং তাঁকে বিজ্ঞান সম্মত  ইতিহাস্ চর্চ্চার জনক বললে খুব একটা বেশি কিছু বলা হবে না ৷


About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟