ব্রিটিশ শাসনকালে বাংলায় নমঃশূদ্র সংগঠনগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

 ব্রিটিশ শাসনকালে বাংলায় নমঃশূদ্র সংগঠনগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। 

ব্রিটিশ শাসনকালে বাংলায় নমঃশূদ্র সংগঠনগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।


 উনিশ শতকে ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে দলিত সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার আদায়ে সচেতন হয়ে ওঠে। তারা এরজন্য কয়েকটি সংগঠন গড়ে তোলে। এক্ষেত্রে বাংলার নমঃশূদ্র বা চন্ডাল সম্প্রদায় নিজেদের দাবি- দাওয়া আদায়ের জন্য গড়ে তোলেন বিভিন্ন সংগঠন। পূর্ববঙ্গের নিপীড়িত নমঃশূদ্র সম্প্রদায়কে নতুন জীবনদর্শনে উদ্বুদ্ধ করে তাদের মধ্যে আত্মশক্তি ও আত্মমর্যাদাবোধের বিকাশে প্রথম ভূমিকা গ্রহণ করেন শ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর। তিনি মতুয়া নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।




শ্রীহরিচাঁদ ঠাকুরের অনুগামী ও অন্যানা নেতাদের উদ্যোগে পূর্ব বাংলার বিভিন্ন জেলায় বেশ কতকগুলি সংগঠন গড়ে ওঠে। এগুলির মধ্যে ১৯০২ খ্রিঃ উন্নয়নী সভা, ১৯১২ খ্রিঃ 'বেঙ্গল নমঃশূদ্র আঅ্যাসোসিয়েশন' , ১৯২৬ খ্রিঃ "নিখিলবঙ্গ নমঃশূদ্র সমিতি" প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলির উদ্দেশ্য ছিল নমঃশূদ্রদের সংগঠিত করা ও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায় করা। ১৯২৬ সালে কাঁচড়াপাড়ায় নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের এক সম্মেলন আহুত হয়। এখানে বেঙ্গল ডিপ্রেস ক্লাসেস অ্যাসোসিয়েশন বা বঙ্গীয় দলীত শ্রেণী সমিতি নামে একটি সংগঠন গড়ে ওঠে। মুকুন্দবিহারী মল্লিক ছিলে এর প্রথম সভাপতি।




দলিত সম্প্রদায়গুলিকে সংগঠিত করার জন্য ড. বি. আর আম্বেদকর ১৯৩০ সালে অল ইন্ডিয়া ও ডিপ্রেস ক্ল‍্যাসেস অ্যাসোসিয়েশন বা নিখিল ভারত দলিত শ্রেণী সমিতি নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করলে বেঙ্গল ডিপ্রেসড ক্লাসেস অ্যাসোসিয়েশনও সেখানে যুক্ত হয়। নমঃশূদ্র নেতা বিরাটচন্দ্র মন্ডল সর্বভারতীয় এই সংগঠনটিতে বাংলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন।




নমঃশূদ্রর উচ্চবর্ণের প্রতিষ্ঠান কংগ্রেসে যোগাদানে আগ্রহী ছিলেন না। আবার কংগ্রেস নেতৃত্বও নানা কারনে এদের দাবিদাওয়ার প্রতি ও তাদের জাতীয় আন্দোলনে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ছিল উদাসীন। সেজন্য নমঃশূদ্ররাও ইংরেজদের সহযোগিতার মাধ্যমে সুবিধা লাভের চেষ্টা করে। ১৯৩৮ সালে যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল, প্রমথরঞ্জন ঠাকুর প্রমুখ ইন্ডিপেন্ডেন্ট সিডিউন্ড কার্স পার্টি গঠন করে কংগ্রেসকে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এরফলে জাতীয় আন্দোলন বিশেষ গতিলাভ করে। তবে ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের ফলে নমঃশূদ্র অধু্যুষিত পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হলে তাদের আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে।




এই প্রশ্নটি পড়লে কোন কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেঃ

  • বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলনের উদ্ভাব ও বিকাশ ব্যাখ্যা কর ৷
  • বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলন কিভাবে বিকাশ লাভ করে বাংলার নমঃশূদ্র আন্দোলনের ওপর একটি টীকা লেখাে। 
  • বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলনের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা কর ৷
  • বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলনের বিবরণ আলোচনা কর ৷

    About the author

    Irisha Tania
    "আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

    Post a Comment

    🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟