রাওলাট সত্যাগ্রহ সম্পর্কে আলোচনা করো।

রাওলাট সত্যাগ্রহ সম্পর্কে আলোচনা করো।

রাওলাট সত্যাগ্রহ সম্পর্কে আলোচনা করো।

রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে গান্ধিজি সর্বভারতীয় রাজনীতির বৃহত্তর আঙিনায় প্রবেশ করেন। এর আগে তিনি ব্রিটিশ শাসননীতির অনুগামী ছিলেন। কিন্তু রাওলাট আইনের সুপারিশগুলি তাঁকে বিস্মিত করে এবং তিনি বিদ্রোহী হয়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে 'শয়তানবাদের পরিচায়ক' বলে মন্তব্য করেন।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

 গান্ধিজি তাঁর, সত্যাগ্রহের নীতি এই আন্দোলনে প্রয়োগ করেন। গান্ধিজিয় আহ্বানে ১৯১৯ খ্রিঃ দেশজুড়ে এক সফল ধর্মঘট পালিত হয়। এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম সর্বভারতীয় ধর্মঘট। গান্ধিজী রাওলাট আইনকে ব্যঙ্গ করে বলেন। -উকিল নেহি, দলিল নেহি, আপিল নেহি।



 রাওলাট সত্যাগ্রহের সাফল্যের মাধামে ও ১৯১৯ খ্রিঃ ৬এপ্রিল সারা ভারতে সফল ধর্মঘট পালিত হওয়ায় গান্ধিজি সর্বভারতীয় নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন। রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন চলতে থাকলে পাঞ্জাবের দুই জনপ্রিয় জননেতা সত্যপালও সৈফুদ্দিন কিচলুকে গ্রেপ্তার করে নির্বাসিত করা হলে জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। আবার পাঞ্জাবের শাসনভার সামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়।



 ১৯১৯ সালে ১৩এপ্রিল পাঞ্জাবের অমৃতসরে জালিয়ানওয়ালাবাগ নামে একটি উদ্যানে শান্তিপূর্ণভাবে প্রায় দশ হাজার নরনারী প্রতিবাদ সভায় সমবেত হয়। এই উদ্যানটি উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল এবং এতে প্রবেশের জন্য একটি ও বাহির হবার জন্য চারী সংকীর্ণ পথ ছিল। সভা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর বিনা প্ররোচনায়, কোনোরূপ হুঁশিয়ারি না দিয়ে জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী দশ মিনিট ধরে প্রায় ১৬০০ রাইন্ড গুলি চালায়। এতে প্রায় দুই সহস্রাধিক নরনারী হতাহত হলেন। এই হত্যা ও অত্যাচারের ঘটনা জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড নামে পরিচিত।


রাওলাট সত্যাগ্রহের গুরুত্বঃ


প্রথমতঃ গান্ধিজি সর্বভারতীয় নেতারূপে আত্মপ্রকাশ করেন। 

দ্বিতীয়তঃ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভারতবাসী গান্ধিজীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই সত্যাগ্রহ আন্দোলনকে এক অন্য মাত্রা দান করে।


তৃতীয়তঃ ভারতীয়দের মধ্যে বিশেষ করে পাঞ্জাবে সাম্প্রদায়িক ঐক্যের যে নিদর্শন দেখা গিয়েছিল তা ইংরেজদের মনে ভীতির সঞ্চার করে।


চতুর্থতঃ রাওলাট সত্যাগ্রহ ছিল অসহযোগ আন্দোলনের পূর্বাভাস।


পঞ্চমতঃ রাওলাট সত্যাগ্রহের মাধ্যমে শ্রেণিভিত্তিক জাতীয়বাদী আন্দোলন পরিণত হয় গণভিত্তিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে।


 গান্ধিজী পরিচালিত রাওলাট সত্যাগ্রহ শেষপর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যভূসিত হয়েছিল । কারণ- ক) ইংরেজরা রাওলাট আইন প্রত্যাহার করে নেয়নি। খ) এই আন্দোলন অহিংসার নীতি থেকে সরে এসে হিংসাশ্রয়ী হয়ে উঠেছিল। এই কারণে তিনি রাওলাট সত্যাগ্রহের কর্মসূচীকে 'হিমালয় সদৃশ ভুল' বলে অভিহিত করেছেন।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ রাওলাট সত্যাগ্রহ সম্পর্কে আলোচনা করো। এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟