তুমি কি মনে কর যে, ট্রুম্যান নীতি ও মার্শাল পরিকল্পনা ঠান্ডা লড়াইকে আহ্বান জানিয়েছিল
দুই মহাশক্তি তার রাষ্ট্রের মধ্যে চলমান ঠান্ডা লড়াই ১৯৪৭ এর গোড়ায় তীব্রতর দয়ে উঠেছিল ৷ ট্রুম্যান নীতি নামে পরিচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান পররাষ্ট্র সম্পর্কিত বিষয়ে নীতিটি ঘোষিত হওয়ার সাথে সাথে এই নীতিতে বলা হয়েছিল বিশ্বের যে কোন দেশ বা জাতি নিজেদের স্বাধীনতা ও স্বতন্ত্র বজায় রাখার প্রয়োজন অথবা বিদেশি চাপ ও প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে নিজ নিজ রাষ্ট্রে ঐক্য ও সংঘতির অভ্যুত্থান রাখতে চাইলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পুরো মাত্রায় সাহায্য ও সহযোগিতা পাবে ৷ তার প্রকৃত অর্থ ছিল কমিউনিস্ট ভাবাদন ও তার সঞ্চালক সোভিয়েত রাশিয়ার রাজনৈতিক তথা সামরিক তৎপরতা সর্বত্রভাবে বিরোধিতা করা ৷
ট্রুম্যান নীতি প্রবর্তনের একটি বিষয় পরিপ্রেক্ষিতে ছিল ৷ পূর্ব ইউরোপীয় ধাপে ধাপে কমিউনিস্ট শাসিত প্রভাব বলয় গড়ে তোলার পর সোভিয়েত ইউনিয়ন তুরস্ক ও ইরানের উপর তার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হয়েছিল ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আর্থিকভাবে বিধ্বস্ত ব্রিটেনের পক্ষে গ্রীস ও তুরস্কের অর্থনৈতিক ও সামরিক সাহায্য করে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে ৷ সোভিয়েত রাশিয়া সেই সুযোগ তুরস্কের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সচেষ্ট হন ৷ আবার এই পরিস্থিতি মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যান অনুরূপভাবে তুরস্ক ও গ্রীসে সহায়তা দেবার প্রয়োজন আর তো ৮০০ মিলিয়ন ডলার ব্যববাবদ অনুধাবন চান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তার এই উদ্দোগ ট্রুম্যান নীতি আস্থা নাম পরিচিত ৷ তবে রুশ বিরোধীতা এই মার্কিন অস্ত্র ঠান্ডা যুদ্ধ কে তীব্রতর হতে সাহায্য করেছিল ৷
লিপম্যানের মতে এই ট্রুম্যান তথ্য মার্কিন বিদেশনীতিকে তীব্র সোভিয়েত বিরোধী এবং প্রতিক্রিয়াশীল করে তুলেছিল ৷ তাই সোভিয়েত সম্পর্কিত সাম্যবাদের প্রসার রোধ করার জন্য আমেরিকা একগুচ্ছ আবেদার রাষ্ট্র গঠনে উদ্যোগী হয়ে পড়েন ৷ ফলে ট্রুম্যান ঘোষণা অনেকাংশে মার্কিন রাষ্ট্রপতির অগ্রাসী ও যুদ্ধ বাদী মনোভাবের প্রসার ঘটিয়েছিল যা ছিল আন্তর্জাতিক শান্তি ও যুদ্ধবিরতির মধ্যে ক্ষতিকর ৷ সমলোচকদের অধিকাংশের অভিমত হল ট্রুম্যান নীতি কেবল জনপ্রিয়তা ও অধিকাংশের অভিমত হল ট্রুম্যান নীতি যেমন অপ্রয়োজনীয় ও অন্যত্র ছিল তেমনি এই উদ্যোগের আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার স্বাভাবিক ক্ষতিকে ব্যাহত করে ঠান্ডা লড়াইয়ের বাড়তি ইন্ধান যুগিয়েছিল ৷
আমেরিকার ট্রুম্যান নীতি পরিপূরক এবং সমসাময়িক রাজনীতির কর্মসূচি ছিল মার্শাল পরিকল্পনা ৷ ১৯৪৭ এর ১৮ই এপ্রিল আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থে দ্বিধাবিভক্ত ইউরোপকে আর্থিক সাহায্যদানের কথা বলেন ৷ পরে ১৯৪৭ এ ৫ই জুন মার্কিন রাষ্ট্র সচিব মার্শাল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তার এক বক্তৃতায় ইউরোপীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধ জীবনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন ৷ এটি সাধারণ মার্শাল পরিকল্পনা নামে পরিচিত ৷
মার্শাল পরিকল্পনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও প্রধান ইউরোপের আর্থিকভাবে পশ্চাদ্গামি দেশগুলিকে সাহায্যদানের মাধ্যমে সোভিয়েত রাশিয়ার কমা বর্ধমান প্রভাব অভিমত করা এবং ভবিষ্যতের এইসব সাহায্যে পুষ্ট দেশগুলিকে মার্কিন জোটে সামিল করা হয় ৷ এই সহায়তা প্রকল্পের অন্তরালে মার্কিন জোট সামিল করে এবং এই সহায়তা অন্যত্রের অন্তরালে মার্কিন পুজাপতি গোষ্ঠীর স্বার্থ নিহিত ছিল ৷ যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট দেশগুলিতে মার্কিন পন্য বিক্রি স্থায়ী বজায়ি গড়ে তুলতে প্রয়াসী হয়েছিল ৷
মার্শাল পরিকল্পনা মার্কিন উদ্দেশ্য সাধনের সমর্থ্য হলে সামরিক বিচার বিশ্ব রাজনীতির পক্ষে অগ্রগতি ভাবে দুটি পরস্পর বিরোধী শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে ৷ ঠান্ডা লড়াই এর তীব্রতা রসায়ক ভাবে বৃদ্ধি পায় ৷ তবে রাশিয়া এর পাল্টা বহুগুচ্ছ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল যার ফলশ্রুতি হল ঠান্ডা যুদ্ধ বা শীতল লড়াই ৷
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ তুমি কি মনে কর যে, ট্রুম্যান নীতি ও মার্শাল পরিকল্পনা ঠান্ডা লড়াইকে আহ্বান জানিয়েছিল এই নোটটি পড়ার জন্য
