নারীর স্থানের ক্ষেত্রে স্ত্রীধনের ভূমিকা আলোচনা করো।The role of women's wealth in the place of women

নারীর স্থানের ক্ষেত্রে স্ত্রীধনের ভূমিকা আলোচনা করো।

 নারীর স্থানের ক্ষেত্রে স্ত্রীধনের ভূমিকা আলোচনা করো।

নারীর স্থানের ক্ষেত্রে স্ত্রীধনের ভূমিকা আলোচনা করো।The role of women's wealth in the place of women


প্রাচীন ভারতে নারীর স্থান নির্ণয় প্রসঙ্গে সম্পত্তির ওপর নারীর অধিকারের যিয়াট অবশ্যম্ভাবীভাবে এসে পড়ে। বিভিন্ন ব্রাহ্মণ্য ধর্মশাস্ত্রে 'স্ত্রীধন' কথাটি একাধিকবার উইল করা হয়েছে। ঋবৈদিক যুগে যেহেতু ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণা ছিল না, তাই পরিতে নারীদের অধিকারের বিষয়টি তখন অজানা ছিল। কিন্তু পরবর্তী বৈদিক যুগে সাঁ মলিকানার পরিবর্তে ব্যক্তি মালিকানা রীতির উদ্ভবের সঙ্গে সঙ্গে সম্পদ পিতা সংগৃাত্র সঞ্চারণের রীতির সূচনা ঘটে। ধর্মশাস্ত্র গ্রন্থগুলির মধ্যে 'মনুস্মৃতি'তে স্ত্রীধন পূর্ব আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া যাজ্ঞবাক্ষ্য, কাত্যায়ন, জীমূতবাহন, বিজ্ঞানেশ্বর হয়ও স্ত্রীবন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।


এপয়েন। তখন সেই সম্পদ 'স্ত্রীধন' হিসেবে গণ্য হবে। এইধরনের স্ত্রীধনকে বলা দৃমৃতিতে বলা হয়েছে, যদি পিতা ইচ্ছা করেন, তাহলে যত ইচ্ছা সম্পদ কন্যাকে আবিদেত স্ত্রীধন। এই সম্পদ কন্যা তার নিজস্ব ইচ্ছানুযায়ী ব্যবহার করতে পারবেন। 


অর্থাৎ, স্ত্রীধনে কন্যার অধিকার সর্বোচ্চ। অনুরূপ ধারণা আমরা যাজ্ঞবন্ধ্যের রচনায় দেখ পাই। সেখানে তিনি বলেছেন, স্ত্রীধনের প্রতি মেয়েদের অধিকার চূড়ান্ত। তবে আপদকালীম ক্ষেত্রে স্বামী এই সম্পদ ব্যবহার করতে পারবে।


স্ত্রীধন নিয়ে কাত্যায়ন বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। তিনি স্ত্রীধনকে কয়েকটি শ্রেনিতে ভাগ করেছেন। যেমন-

  1. অধ্যাগ্নি অর্থাৎ বিবাহের সময় কন্যা অগ্নির সামনে সে সম্পদ পেয়ে থাকে।
  2. অধ্যাবহনিকা বা যখন কন্যা পিতৃগৃহ থেকে স্বামী গৃহে যান, তখন উপহারসাদ যে সম্পদ পান।
  3. প্রীতিদত্ত অর্থাৎ স্নেহবশে বা ভালোবেসে যে-কোনো সময়ে দেওয়া উপহার।
  4. শুল্ক বা কন্যাপণ হিসেবে প্রাপ্ত অর্থ।
  5. অন্বাধেয় বা বিবাহের পর স্বামীগহ বা পিতৃগৃহ থেকে যা যা দেওয়া হয় এবং
  6. সৌদায়িকা অর্থাৎ, উপরিউক্ত বিষয় ছাড়া প্রাপ্ত উপহার বা অর্থ।


দশম শতাব্দীর গ্রন্থ দায়ভাগে বলা হয়েছে, স্ত্রীধন শধুমাত্র মেয়েরাই ভোগ করবে তবে 'দায়ভাগ' গ্রন্থের রচয়িতা জীমতবাহন এও বলেছেন যে, যদি মা মারা যান, তাহদে মৃত মায়ের স্ত্রীধন কন্যা ও পুত্র উভয়ই ভোগ করবে। অন্যদিকে বিজ্ঞানেশ্বর রচিং 'মিতাক্ষরা' গ্রন্থে স্ত্রীধনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে সাধারণত মেয়েরাই ভোগ করবে। তার কিছু ক্ষেত্রে যেমন-প্রীতিদত্ত এবং অন্বাধেয় থেকে প্রাপ্ত সম্পদে ছেলেদের অধিয়া থাকবে।


সুতরাং বলা যায় যে, পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় যেখানে সম্পদ সঞ্চালনের রীচি ছিল পিতা থেকে পুত্রের মধ্যে । সেখানে প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্রকারগণ স্ত্রীধনে নারীদের সার্বিক এবং সর্বতোভাবে অধিকার বজায় রাখতে চেয়েছিলেন । এই স্ত্রীধন ব্যবহার কয় তৎকালীন সমাজের অনেক নারীই জীবন অতিবাহিত করতেন। এ প্রসঙ্গে বিধবাদের বহু উল্লেখ করা যায়। তাই, স্ত্রীধনের প্রতি নারীদের চূড়ান্ত অধিকার-তাদের সমাজে বিশেষ স্থান দিয়েছিল।


About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟