মলোটভ-রিবেনট্রপ চুক্তি বা রুশ জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি বা রুশ-জার্মান অ-আগ্রাসন চুক্তি সম্পর্কে আলোচনা কর অথবা,নাৎসি সোভিয়েত অনাক্রমণ চুক্তি (১৯৩৯) সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টাকা লেখো
ইংল্যান্ড-ফ্রান্সের তোষণ নীতির ফলে জঙ্গিবাদী একনায়কতন্ত্রী দেশগুলির শক্তি বেড়ে যায় এবং তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কমেন্ট বিরোধী জোট গঠন করেন ৷ এই অবস্থায় রাশিয়া ইঙ্গ-ফরাসি শক্তিদয়ের কাছে জার্মান বিরোধী জোট গঠনের প্রস্তাব দেয় ৷ কিন্তু ইংল্যান্ডের ফ্রান্স জার্মানিকে দূষণ করতে থাকে এতে রাশিয়া খুব ভীত হয়ে পড়ে ৷ এদিকে জার্মানি ও রাশিয়ার সঙ্গে সাময়িক মিত্রতার প্রয়োজন অনুভব করেন এই পরিস্থিতিতে রুশ জার্মান অনক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । এটি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর মাত্র কয়েক দিন আগের ঘটনা, 23 আগস্ট, 1939 সালে নাৎসি জার্মানি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক চুক্তি । চুক্তিটির নামকরণ করা হয়েছিল এই সময় কার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নামানুসারে সোভিয়েত ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যাচেস্লাভ মোলোটভ এবং নাৎসি জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোয়াকিম ফন রিবেনট্রপ ৷ এটিই মলোটভ-রিবেনট্রপ চুক্তি বা রুশ জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি বা রুশো-জার্মান অ-আগ্রাসন চুক্তি নামেও পরিচিত ৷
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
১৯৩৯ সালে ২৩ শে আগস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যাচেস্লাভ মোলোটভ এবং নাৎসি জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোয়াকিম ফন রিবেনট্রপ এর মধ্যে ১০ বছরের জন্য রুশ জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ।
চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্দেশ্য গুলি হল :-
প্রথমতঃ - হিটলার উপলব্ধি করেছিলেন তার পক্ষে পূর্ব সীমান্তের রাশিয়া ও পশ্চিম সীমান্তে ইঙ্গো-ফরাসি শক্তির সঙ্গে একই সময়ে যুদ্ধ করা সম্ভব নয় ৷ তাই রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে, তিনি পূর্ব দিকে রাশিয়াকে নিরপেক্ষ রাখতে চেয়েছিলেন ।
দ্বিতীয়তঃ - ভবিষ্যতে পোল্যান্ড আক্রমণের সময় ইঙ্গ-ফরাসির শক্তিধর এর সম্ভাব্য বিরোধিতা আশঙ্কায় হিটলার রাশিয়াকে নিরস্ত রাখতে চেয়েছিলেন ৷
তৃতীয়তঃ - সোভিয়েত রাশিয়ার উদ্দেশ্য ছিল চুক্তির সুবাদে সামরিক দিক দিয়ে নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া এবং পূর্ব সীমান্তে জাপানের আক্রমণ ভীতি দূর করা ৷
রুশ জার্মান অনক্রমণ চুক্তির গুরুত্ব বা তাৎপর্য হলঃ - প্রথমতঃ - আগামী 10 বছর জার্মানি ও রাশিয়া কেউ কাউকে আক্রমণ করবে না ৷
দ্বিতীয়তঃ - শান্তিপূর্ণ উপায়ে পারস্পরিক বিবাদ মিটে নেবে ৷
তৃতীয়তঃ - তৃতীয় কোন শক্তি কর্তিত তাদের কেউ আক্রান্ত হলে কেউ তৃতীয় শক্তিকে সাহায্য করবে না ।
জার্মান অনক্রমণ চুক্তির গুরুত্ব ও তাৎপর্য গুলি হলঃ -
প্রথমতঃ - রাশিয়া বিশ্বযুদ্ধ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয় ৷
দ্বিতীয়তঃ - পূর্ব সীমান্তের রাশিয়াকে নিরপেক্ষ রেখে হিটলার সর্বশক্তি দিয়ে পশ্চিম রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়ার সুযোগ পায় ।
তৃতীয়তঃ - চুক্তির ফলে সোভিয়েত বাধা সরে যাওয়ায় হিটলার পূর্ব ইউরোপে তার বিস্তার নীতি সফল করেন ৷
মূল্যায়নঃ - রুশ জার্মান অনাক্রমণ চুক্তির ফলে সোভিয়েত ইউনিয়ন কেবল জার্মানিকে পশ্চিমী কমিউনিস্ট বিরোধী শক্তি জোট থেকে বের করে আনেননি ৷ তাকে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ঠেলে দিতে সক্ষম হয়েছিল ৷ এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষে এক অসামান্য কূটনৈতিক সাফল্য ছিল তবে শেষ পর্যন্ত রুশ জার্মান অন আক্রমণ চুক্তি বা রাশিয়াকে জার্মান আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারেননি ৷