মেহেরগড় উৎখননের তাৎপর্য আলোচনা করো।

মেহেরগড় উৎখননের তাৎপর্য আলোচনা করো।

 মেহেরগড় উৎখননের তাৎপর্য আলোচনা করো।

মেহেরগড় উৎখননের তাৎপর্য আলোচনা করো।


মধ্যপ্রস্তর যুগের পর শুরু হয়েছিল নব্যপ্রস্তর যুগের। এই যুগে মানুষের। জীবিকা হিসাবে খাদ্য উৎপাদন অর্থাৎ, চাষবাস ও খাদ্য উৎপাদন করার পদ্ধতি আয়র করেছিল। আর এর প্রয়োজনে পশুপালনও চলত। এই সময় আবার মাটি খোঁড়ার জন পাথর দিয়ে কোদাল তৈরির পদ্ধতিও প্রচলিত হয়। কৃষি অর্থনীতির এই ক্রমশ রূপান্তরের সুস্পষ্ট চিত্র মেহেরগড়ে প্রাপ্ত প্রাক্-হরপ্পা সভ্যতার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যায়।


পাকিস্তানের বোলান গিরিপথের কাছে এবং কোয়েলা শহর থেকে ১৫০ কিমি দূরে মেহেরগড়ে এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি আবিষ্কৃত হয়েছে।


মেহেরগড় প্রত্নক্ষেত্রটি মূলত ৭টি স্তরে বিভক্ত প্রথম থেকে তৃতীয় স্তরটি নব্যপ্রস্তর যুগের বলে চিহ্নিত। প্রথম পর্বে উৎখননের দ্বারা প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায় যে, আনুমানিক ৫,১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এলাকাটি ছিল যাযাবর পশুপাখিদের অস্থায়ী আবাস্থল। পরে এখানে স্থায়ী আবাস গড়ে উঠে এবং স্থানীয় আদিবাসিরা কাদামাটি দিয়ে ইট তৈরি করে বাড়ি তৈরি করতে শুরু করে। মেহেরগড়ে প্রাপ্ত শস্যাগার এখানকার কৃষি অর্থনীতি বিকাশের পরিচয় দেয়। এই পর্বে সমাধিতে একটি তামার তৈরি প্রাচীনতম নিদর্শন ছিল এটি। মেহেরগড়ের প্রাচীনতম পর্বে মৃৎপাত্র ব্যবহারের কোনো নজির নেই কিন্তু এই পর্বের সমাধি ক্ষেত্রে প্রাপ্ত কোয়ার্টজ পাথরের তৈরি একটি মূর্তি থেকে জানা যায় যে, সম্ভবত তা তুর্কমেনিস্তান থেকে আনা হয়েছিল, এথেকে অনুমান করা হয় যে, খ্রিস্টপূর্ব ৬,০০০ অব্দে মেহেরগড়ের মানুষ মূল্যবান পাথরের ব্যবসা সূত্রে দূরবর্তী এলাকায় যাতায়াত ও লেনদেন করত।


মেহেরগড়ের দ্বিতীয় পর্বে পূর্বেকার ধারাবাহিকতার সঙ্গে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এই পর্বে তুলা আবিষ্কৃত হয়েছিল। তাছাড়া এই পর্বে হাতে তৈরি ও কুমোরের তৈরি মাটির পাত্রের নিদর্শন পাওয়া যায়। তা এই সময় তুর্কমেনিস্তান থেকে শুধু কোয়ার্টজ নয় আরবসাগরীয় অঞ্চল থেকে শঙ্খ, বাদাখশান থেকে 'লাপিজ লাডুলি' বা নীলকান্তমণি ভারা সংগ্রহ করত। তৃতীয় পর্বের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল মৃৎপাত্রের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য এবং মূল্যবান পাথর আনার জন্য দূরবর্তী অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্যের সম্প্রসারণ।


চতুর্থ থেকে সপ্তম পর্বে মেহেরগড়ের বস্তুগত সংস্কৃতি আরো পরিণত হয়। মৃৎপাত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। একরঙা, দুরঙা ও বহুরঙা মৃৎপাত্র নির্মিত হয়। নীলমোহরের অর্থাভাব দেখা যায় অধিকাংশক্ষেত্রেই তা পোড়ামাটির হলেও হাড়ের তৈরি একটা শীলমোহরও পাওয়া গেছে।


মেহেরগড়ের প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি শুধুমাত্র বিভিন্ন নতুন তত্ত্বের সন্ধান দেয়নি। নগর-কেন্দ্রিক হরপ্পা সভ্যতাকে আশ্রয় করে জটিলতার প্রমাণ দেয়। কেননা মেহেরগড়ের বস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে পরবর্তী নগরকেন্দ্রিক অর্থনীতির পর্বভাগ পাওয়া যায়।

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ মেহেরগড় উৎখননের তাৎপর্য আলোচনা করো। এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟