জাবতি প্রথা বা আইন-ই-দহশালা বা zabti syestem বলতে কী বোঝো
মুঘল সম্রাট আকবরের রাজস্ব বিভাগীয় মন্ত্রী ছিলেন টৌডরমল ৷ তিনি মুঘল আমলে রাজস্ব বিভাগের বিপদ সংস্কার সাধন করেন ৷ তিনি রাজস্বের ক্ষেত্রে কতগুলি প্রথা চালু করেন যার মধ্যে অন্যতম হলো জ জাবতি প্রথা বা আইন-ই-দহশালা । জাবতি ব্যবস্থা ছিল টৌডরমল কর্তৃত্ব অন্যতম ভূমি ব্যবস্থা । এই ব্যবস্থা অনুসারে খালিসা জমিকে জরিপ করা হতো এবং জমির ফসলের উৎপাদনের ফসলের ভিত্তিতে জমিকে চার ভাগে ভাগ করা হয় যথা পালাজ পারাউতি,চাচর ও বাঞ্জর ৷ পালাজ অর্থাৎ যে জমিতে প্রতিবছর আবাদ করা হয় ৷ পারাউতি অর্থাৎ যে জমিতে সব সময় চাষ হতো না ৷ চাচর অর্থাৎ ৩ থেকে চার বছর অন্তর চাষ হতো এবং বাঞ্জর অর্থাৎ পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় অন্তর চাষ হতো সেই জমি ৷
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
পতি পরগণায় প্রথম তিন শ্রেণীর জমি কে সরেশ, মাঝারি,নিকৃষ্ট এই তিন শ্রেণীতে ভাগ করে প্রতি শ্রেণীর ১০ বছরের উৎপাদন একত্রিত করে ১০ দিয়ে ভাগ করে যে গড় পেতো তাকে গড় উৎপাদন বলা হতো । এই উৎপাদনের ⅓ ভাগ ছিল সরকারি রাজস্ব ৷ ভূমি রাজস্ব সে কৃষকের ফসলের ⅓ অংশের বদলে নগদ দান দিতে বলা হত ৷ শস্যের দশ বছরের গড়মূল্য ধরে শস্যের দাম স্থির করা হতো । যাবতি ব্যবস্থা অনুসারে জমি সরাসরি বন্দোবস্ত করা হত ৷ জায়গীর জমিগুলো কেউ জাবতি ব্যবস্থার অধীনে আনা হত ৷
সরকারি কর্মচারীরা রাজস্ব আদায় করার পর জায়গিরদার তার প্রাপ্য পেত ৷ রায়দের জমি পাট্টা দেওয়া হতো ৷ জাবতি প্রথা মালব অযোধ্যা আগ্রা এলাহাবাদ দিল্লী ও মুলতান প্রভৃতি স্থানে প্রচলিত ছিল । শাহজাহানের আমলে এক দ্বিতীয় অংশ হারে রাজস্ব আদায় করা হতো ৷ ওরঙ্গজেব এক নির্দেশ নামায় দেখা যায় যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে উৎপাদিত শস্যের ⅓ অংশ রাজস্ব হারে আদায় করতে হতো । সুতরাং এই সকল তথ্য থেকে এটা বোঝা যায় যে, রাজস্বের হাড় করে ⅓, ½ এই ভাবেই মুঘল আমলে জারি হয়েছিল ৷