প্রাক আধুনিক চীনা সমাজে জেন্ট্রি শ্রেণীর ভূমিকা আলোচনা কর অথবা, প্রাক আধুনিক চীনের কৃষি অর্থনীতিতে জেন্ট্রি নিয়ন্ত্রণের প্রকৃতি আলোচনা কর? এই নিয়ন্ত্রণ চীন শাসনকালে কিভাবে বৃদ্ধি করে পেয়েছিল
প্রাক আধুনিক চীনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো চীন জাতীর রক্ষণশীলতা এবং প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতি অনর আস্থা ৷ তাই এই চীন সচেতন ভাবে বিদেশীদের চিন্তাভাবনা বা জীবনধারাকে বর্জন করে চলত ৷ প্রাক আধুনিক চীনা সমাজ ছিল চিরাচরিত পথ আবৃত্তিক এবং কঠোরভাবে কনফুসীয় নীতির দ্বারা পরিচালিত ৷ চীনা সমাজ ছিল প্রধানত গ্রাম্য দেশের অধিকাংশই মানুষ গ্রামে বসবাস করত এবং প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ ৷ মাত্র কুড়ি শতাংশই মানুষ ছিল শহরে এবং বৃত্তিজীবী ৷ তবে এদের একটি বিশেষ অংশ ও গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থা ও সম্পদের উপর নির্ভরশীল ছিল ৷ শহরবাসী বিভিন্ন শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত ছিল কনফুসীয় শাস্ত্রের সু পন্ডিত ব্যক্তিবর্গ, রাজকর্মচারীগণ, বণিক শ্রেণী, Genty শ্রেণী, কারিগর ইত্যাদি ৷
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
প্রাক আধুনিক চীনের সমাজ ও অর্থনীতিতে জেন্ট্রি শ্রেণীর নিয়ন্ত্রণকারী ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ ৷ চীনের প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক ছিলেন এই জেন্ট্রি শ্রেণীর মানুষ ৷ এরা রাজনীতি ও প্রশাসনে এমন অংশ নিতেন তেমনি বিশাল ভুসম্পত্তির মালিকও ছিলেন ৷ অর্থাৎ এরা ছিলেন একাধারে সরকারি কর্মী এবং জমিদার ৷ এই জেন্টি শ্রেণীভুক্ত মানুষ সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন ৷ যেমন কনফুসিও ধর্মস্থানগুলির রক্ষণাবেক্ষণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির তত্ত্বাবধান, স্থানীয় বিবাদের মেয়ে সম্পত্তি কনফুসিও আদর্শের প্রচার ইত্যাদি কাজ করতেন ৷ এই সংক্রান্ত পবিত্র রাগাঙ্গার জনগণের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছে দেওয়ার কাজেও জেন্টি শ্রেনি করতেন ৷ এরা সমাজের সম্ভ্রান্ত হিসেবে মর্যাদা পেতেন ৷ প্রাক আধুনিক চীনের সমাজ জীবনের উপর এই শ্রেণীর প্রভাবের গভীরতা ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে সমাজতাত্ত্বিকরা তৎকালীন চীনা সমাজকে জেন্টিক স্টেট আখ্যা দিয়েছেন । তবে জেন্টি শ্রেণীভুক্ত ব্যক্তিদের ভূমি থাকলেও এদের ইউরোপীয় সামন্তপ্রভূদের সমতুল্য বলা যায় না ৷ কারণ প্রাক আধুনিক চীনা সমাজের আক্ষরিক অর্থে সামন্ততান্ত্রিক ছিল না । জেন্টি সদস্যরা একদিকে যেমন জমির মালিক ছিলেন তেমনি পাশাপাশি প্রাচ্যবিদ্যার ডিগ্রী অর্জন করে সরকারি চাকরিতেও যোগ দিতে পারতেন ৷
মাঞ্চুরাজ বংশ কিছু কিছু ক্ষেত্রে জমির পুনর বন্টন করলেও অধিকাংশ জমির জেএনটি তে নিয়ন্ত্রণে ছিল ডিব আর কিসসা বলেছেন যে কৃষিতে নিযুক্ত শ্রমের প্রায় 30% ছিল ভাড়াটে পূজা আর এই চুনের মতে চীনা কৃষকেরা ৫০ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন সামাজিক প্রতিষ্ঠাতা ছিল ভূমিদাসদের সমতুল্য সাধারণত কৃষকদের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকত চার থেকে দশ মুক্তি জমি ৮ শতকের শেষ ও 19 শতকের গোড়ায় সম্রাটের অধীনে জমির পরিবার ও ধনী জেনট্রিগণ দ্বারা ক্ষুদ্র কৃষকদের জমি অধঃগ্রহণ বৃদ্ধি পায় উনিশ শতকের মাঝেমাঝে সময় সারমাই খুবই জিয়াংসু অঞ্চলের বেশিরভাগ জমির মানচু ও চীনা জেন্টটি পরিবারের অধীনে চলে এসেছিলেন গ্রহণের প্রবণতা দক্ষিণ চীন ও লক্ষ্য করা যায় বলা বাহুল্য কিসে জমি জেনটিদের নিয়ন্ত্রণে আসার সঙ্গে সঙ্গে জমির মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে তাই জমিদার ও কৃষকদের সম্পর্কের মধ্যে ভাগ চাষের ব্যবস্থাও ছিল ভাগ চাষিরা উৎপাদনের ৫০ শতাংশ জেএনটিদের দিতে বাধ্য ছিল অর্থনীতিতে প্রধান আই হতো কৃষি উৎপাদন থেকে ৷
নাউ সিচেন বলেছেন ১৮২৯ শে চার হাজার কৃষি মজুরের মাধ্যমে তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ করত ভারতে পূজা জেএনটিদের জমিতে আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা অনুসারে তুলা নিলা ইত্যাদি অর্থকরী ফসল চাষ করত ১৮২৩এ ই ৫৪ অঞ্চলে প্রাপ্ত লেগ থেকে জানা যায় যে পূর্বে ভ্রাম্যমান ব্যক্তিরা কৃষি মজুর হিসেবে চাষাবাদ করতো কিন্তু উনিশ শতকের মধ্যভাগে জেন টি এবং ধনী কৃষক বাণিজ্যিক কৃষি পণ্য উৎপাদনের জন্য মূলত স্থায়ী কৃষি মজুরদের নিযুক্ত করত ৷
উনিশ শতকে জেন্টিদের নিয়ন্ত্রণের জমি কেন্দ্রিকরণের ব্যাপক হলেও করের হার বৃদ্ধি পেয়ে কৃষকের দুরবস্থার সম্মুখীন হয় প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে মঞ্চ শাসকরা বিশেষ কোনো নতুন কর প্রণয়ন করেনি কিন্তু কেন্দ্রীয় রাজতন্ত্রের দুর্বলতা সুযোগে প্রাদেশিক শাসকরা ইচ্ছামত করের হার বৃদ্ধি করে এবং নতুন কর আরোপ করতে তৎপর ছিলেন প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের গ্রহণের স্বেচ্ছায় ও শোষণের প্রধান অঙ্গ ছিলেন বিভিন্ন স্তরের জমিদার ও বা জেন্ডার শ্রেণীর অধিক নিয়ন্ত্রণ চীনের কিসে অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে এক ধরনের স্থিতি বস্তা নিয়ে আসে প্রাক আধুনিক চীনে জমি হস্তান্ত ছিল ফলের সমৃদ্ধ সম্পন্ন অধিকাংশ জমির নিজেদের দখলে আনতে পেরেছিলেন কিন্তু উৎপাদক কৃষকরা প্রতি উদাসীন ও অবহেলার মানসিকতা সাধারণ কৃষি মজুদদের চরম দারিদ্র্যের সম্মুখীন করেছিলেন ৷