সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ :- শক ক্ষত্ৰপ নহপান
কুষাণ সাম্রাজ্যের শাসনকালে পশ্চিম ভারত বিশেষত রাজস্থান, নিম্ন সিন্ধু অঞ্চল, জরাট ও মহারাষ্ট্রের কিছু অংশে যে আঞ্চলিক শক্তি নিজ প্রভুত্ব স্থাপন করে তারা হল এক-ক্ষত্রপরা। এই অঞ্চলে শক-অভ্যুত্থানের নায়ক ছিলেন ভূমক। তিনি কুষাণরাজ কণিস্কের সমসাময়িক ছিলেন। ভূমক-এর পর শক শাসক হন নহপান। শকরা সম্ভবত কুষাণদের প্রশ্যতা স্বীকার করেই পশ্চিম ভারতে নিজ রাজ্য গড়ে তুলেছিল। ভূমক ও নহপান দুজনেই রাত বংশের সন্তান ছিলেন। নহপানের সাম্রাজ্যকাল সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায় না। আনুমানিক ১০০ থেকে ১২৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নহপানের সম্ভাব্যকাল বলে গণ্য করা
নহপান শক সাম্রাজ্যের ক্ষত্রপ পদে অধিষ্ঠিত হয়েই রাজ্যবিস্তারে মন দেন। সুযোদ্ধা হিসাবে তাঁর খ্যাতি ছিল। তাঁর সময়ে কণিষ্ক মারা গেলে কণিতের রাজ্যাংশ দখলের সুযোগ আসে তাঁর কাছে। এই সুযোগে তিনি বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অধিকর্তা হন। আজমেড়ে তাঁর মুদ্রা পাওয়া গেছে। নহপানের একটি লেখ থেকে জানা যায় যে, তাঁর জামাতা ঋষভদও মালব জয় করেছিলেন। কোঙ্কনসহ মহারাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নহপানই প্রথম দখল করেছিলেন বলে জানা যায়। তিনি বহু বৌপ্যমুদ্রা উৎকীর্ণ করেছিলেন যা তাঁর সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে পাওয়া গেছে।
নহপানের রাজত্বকালের শেষের দিকে তাঁর ভাগ্যবিপর্যয় ঘটে। এইসময় গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী ১২৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দের শেষ বা পরবর্তী বছরের প্রথমদিকে নহপানকে পরাস্ত করে শক ক্ষত্রপ বংশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে নেন। গৌতমীপুত্রের কাছে নহপান যে পরাস্ত হয়েছেন তা নাসিক জেলার জোগলথেম্বি গ্রাম থেকে প্রাপ্ত রৌপ্যমুদ্রা থেকে জানা যায়। এই রৌপ্য মুদ্রাগুলির দুই-তৃতীয়াংশ নহপানের থেকে গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী পুনরায় উৎকীর্ণ করে চালু করেন। মোটামুটিভাবে জানা যায় যে, গৌতমীপুত্রের সঙ্গে যুদ্ধে নহপান পরাজিত ও নিহত হন। এর ফলে শকক্ষত্রপ ইতিহাসে চরম বিপর্যয় নেমে আসে।