পুষ্যামিত্র শুঙ্গ সম্পর্কে আলোচনা কর অথবা পুষ্যামিত্র শুঙ্গ বংশের শাসন সম্পর্কে আলোচনা কর

পুষ্যামিত্র শুঙ্গ সম্পর্কে আলোচনা কর অথবা পুষ্যামিত্র শুঙ্গ বংশের শাসন সম্পর্কে আলোচনা কর

 পুষ্যামিত্র শুঙ্গ সম্পর্কে আলোচনা কর অথবা পুষ্যামিত্র শুঙ্গ বংশের শাসন সম্পর্কে আলোচনা কর 



পুষ্যামিত্র শুঙ্গ

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ও অশোকের হাত ধরে ভারতবর্ষে যে কেন্দ্রীভূত স্বৈরাচারী শাসন গড়ে তুলেছিল মৌর্যরা অশোকের মৃত্যুর প্রায় ৫০ বছরের মধ্যে এসে সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়ে যায় । পুরাণের বর্ণনা অনুসারে ১৭৮ খ্রিঃ পূর্বাব্দে শেষ মৌর্য সম্রাট বৃহদ্রথকে হত্যা করে পুষ্যামিত্র মগধের সিংহাসন দখল করেন। তিনি ১৫১ খ্রিঃ পূর্বাব্দ পর্যন্ত ৩৬ বছর রাজত্ব করেছিলেন। পুষ্যামিত্রের মগধের রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চে আর্বিভাব প্রসঙ্গে পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মনে করেন, মৌর্য সম্রাটদের বিরুদ্ধে যে ব্রাহ্মণ বিক্ষোভ ছিল তাকে কাজে লাগিয়ে ব্রাহ্মণ পুষ্যামিত্র মগধের সিংহাসন অধিকার করেছিলেন। অতঃপর শত্রুদের বন্দী এবং নিজ পুত্র ও আত্মীয়দের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করে নিজের ক্ষমতাকে দৃঢ় ভিত্তিতে স্থাপন করেন।


তৎকালিন বেরার এবং ওয়ার্ধা ও বেনগঙ্গা নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল নিয়ে বিদর্ভ রাজ্যটি গঠিত ছিল। পুষ্যামিত্রের পুত্র যুবরাজ অগ্নিমিত্র বিদর্ভরাজ যজ্ঞসেনকে যুদ্ধে পরাস্ত করে বিদর্ভ অধিকার করেন। এরফলে নর্মদার দক্ষিণে শুঙ্গ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ মনে করেন যে কলিঙ্গরাজ খারবেল মগধরাজ পুষ্যামিত্রকে পরাজিত করেছিলেন। কিন্তু হাতিগুম্ফা লিপিতে যে 'বৃহষ্পতিমিত্র' নামের উল্লেখ আছে, তিনিই পুষ্যামিত্র কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।



গাগী সংহিতায় বলা হয়েছে যে যবন বা ব্যাকট্রিয় গ্রিকরা সাকেতা (অযোধ্যা), পাঞ্চাল, মথুরা আক্রমণ করে পাটলিপুত্র পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছিল। এর থেকে অনুমান করা যায় যে, পুষ্যামিত্রের আমলে ভারতে গ্রিক বা ব্যাকট্রিয় আক্রমণ হয়েছিল । ঐতিহাসিক র‍্যাপসন উল্লেখ করেছেন যে ১৫১ খ্রিঃ পূর্বাব্দে পুষ্যামিত্র শুঙ্গের ক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে শুঙ্গ সাম্রাজ্যের বিস্তৃতিতে ফাটল ধরে এবং সাম্রাজ্যের বেশকিছু অঞ্চল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অবন্তী প্রদেশটি সাতবাহন রাজা প্রথম সাতকর্ণী জয় করে নেন। শাকল বা শিয়ালকোট গ্রিক রাজা মিনান্দার দখল করে নেন । ডক্টরস মিটের মতে কলিঙ্গরাজ খারবেল এই সময় পাটলিপুত্র আক্রমণ করে ৷ তবে এই সম্পর্কে বহু মতভেদ আছে।



বৌদ্ধধর্মের প্রতি বিদ্বেষ নীতির কারণে পুষ্যামিত্রের চরিত্রে কালির ছিটে পড়লেও সামগ্রিক ভাবে তিনি বৌদ্ধ ধর্মের অনুরাগী ছিলেন। তা নাহলে সাঁচী ও ভারহুতের বৌদ্ধ স্তূপ আস্ত থাকত না। বস্তুত পুষ্যামিত্র গর্হিত উপায়ে সিংহাসন দখল করেছিল সত্য,তবে তিনি রাজা রূপে যে দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। উচ্চমৃত্যু সংঘ ১১৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে দেহত্যাগ করে ডঃ এস চট্টোপাধ্যায়ের মতে তার মৃত্যুর পরেই সঙ্গ সাম্রাজ্যের ভাঙ্গন দেখা দেয় ৷



About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟