বাঙালি চিত্র কলায় যামিনী রায়ের অবদান আলোচনা কর
বাংলা চিত্রকলায় বিশিষ্ট শিল্পধারার অন্যতম শিল্পী হলেন স্বর্ণখ্যাত যামিনী রায়(১৮৮৭-১৯৯২) ৷ বাংলা চিত্রকলায় নিজেই নিজস্বতার পরিচয় দিয়ে নিজের শিল্পীসত্তার প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন ৷
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
যামিনী রায়ের বাল্যজীবন কেটেছিল গ্রামে, তার পিতার রামতরন একজন সৌখিন শিল্পী ছিলেন ৷ যামিনী রায় ১৬ বছর বয়সে কলকাতা আর্ট কলেজে ভর্তি হন ৷ তিনি অনুভব করেন চিত্তচর্চা তার নিজস্ব স্থান নয় । তবে একসময় তিনি বাংলা লোকশিল্পে ও পটশিল্পে আকৃষ্ট হয়ে তিনি মেদিনীপুর কালীঘাট প্রভৃতি স্থানে গিয়ে বিভিন্ন পট সংগ্রহ করেন ৷
যামিনী রায় গিলার্ডি সাহেবের কাছে তেল রঙের আঁকা শিখলেও পরবর্তী সময়ে জলরঙের মাধ্যমে অসামান্য সব ছবি আঁকেন ৷
যামিনী রায়ের পটচিত্তে স্থান পায় মানুষজন,পশু-পাখি ও গ্রাম বাংলার চিত্র ৷ তার ছবির বিষয়ের মধ্যে রামায়ণ ও মহাভারতের নারী পুরুষ,রাধা কৃষ্ণ প্রভৃতি দেখা যায় ৷ যেমন জীবন হয়ে উঠেছে তেমনি ফুটে উঠেছে গামের চাষি, কামার, কুমোর,বাউল,বৃদ্ধা,সাঁওতাল,পশুপাখি, বৈষ্ণব,ফকির প্রকৃতি ৷
যামিনী রায়ের আঁকা উল্লেখযোগ্য ছবিগুলির মধ্যে অন্যতম হলো "সাঁওতাল মা ও দুই ছেলে","কনে ও তার দুই সঙ্গী"," কৃষ্ণ বলরাম","যুদ্ধরত রাজা" প্রভৃতির উল্লেখযোগ্য ৷
যামিনী রায় সব সময় চেষ্টা করেছেন তার ছবি অন্যদের থেকে আলাদা করতে ৷ তার চিত্রশিল্পে আকৃষ্ট হয়ে অনেকেই তার অনুগামী হন ৷ ভারতীয় চিত্রকলায় তার মৌলিক সৃষ্টি প্রতিভা বিশেষ খ্যাতি পেয়েছে । বিদেশে শিল্পী গণ তার চিত্রে গুণগত দিক খুঁজে পেয়েছেন তার আঁকা ছবিগুলি আমাদের নাড়া দেয়, মনকে দুলিয়ে দেয় । তার হাতের তুলির রং এইসব যেন জীবন্ত হয়ে গেছে ৷ ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তার ছবি সর্বভারতী প্রদর্শনীর তে "স্বর্ণপদক" লাভ করেন ৷ ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে এই প্রতিভাধর শিল্পীকে "পদ্মভূষণ" উপাধিতে ভারত সরকার সম্মানিত করেন ৷ তিনি বাংলা চিত্রকলাকে শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন ৷ যে কারণেই বাংলা চিত্রকলায় তার অবদান সবচেয়ে বেশি ।