গণ্ডোফারেস অথবা,গণ্ডোফারেস সম্পর্কে আলোচনা কর
মৌর্য পরবর্তী যুগে বিভিন্ন বিদেশী শক্তি ভারতবর্ষে তাদের আধিপত্য স্থাপন করেছিল। খ্রিস্টীয় প্রথম শতকের সময়কালে ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ অংশে শক-পল্লব শাসন কায়েম হয়েছিল। এই পল্লব শাসকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও সম্ভবত সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন গণ্ডোফারেস। তাঁর 'তখৎ-ই-বাহ' লেখ থেকে জানা যায় যে, তিনি গান্ধার অঞ্চলে শাসন করতেন। কান্দাহার অঞ্চলে পল্লব্যাজ ওর্থেগনেসের সহকারী প্রশাসক হিসাবে গন্ডোফারেস তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। তবে তাঁর উচ্চাভিলাষের কারণে তিনি পেশোয়ারকে কেন্দ্র করে এক বৃহৎ সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন বলে জানা যায়। মোটামুটিভাবে তিনি ১১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৪৫/৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন বলে জানা যায়।
ইরাতন থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত বিস্তৃত তাঁর রাজ্যটিকে গন্ডোফারেস কয়েকটি অঞ্চলে বিভক্ত করে তাঁর শাসনভার এক একজন প্রদেশ পালের হাতে অর্পণ করেন। এক্ষেত্রে প্রসেশপালকদের তিনি অনেকটাই স্বাধীনতা দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এমনকী প্রদেশপালকরা পৃথক পৃথক মুদ্রা উৎকীর্ণ ও পৃথক রাজকীয় উপাধি গ্রহণ করতে পারতেন।
গণ্ডোফায়েসের রাজত্বকালের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা হল-জিশুখ্রিস্টের প্রিয় শিষ্য সেন্ট টমাসের খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতবর্ষে আগমন। খ্রিস্টীয় উপকথা অনুযায়ী জানা যায় জিশুখ্রিস্টের মৃত্যুর পর তাঁর শিষ্যরা জেরুজালেমে সমবেত হয়ে দেশে দেশে গুরুর বাশী প্রচারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ভারতে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের দায়িত্ব পড়ে টমাসের ওপর। কিন্তু টমাস ভারতবর্ষে যেতে রাজী ছিলেন না। শেষপর্যন্ত নাকি জিশু তাঁকে স্বপ্নাদেশ ও দৈব বলে ভারতে পাঠান। টমাসের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গণ্ডোফারেস ও তাঁর ভাই খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন।
গন্ডোফারেসই পল্লব বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন। তাঁর সময়ে তিনি নিজ যোগ্যতাবলে যে সুদৃঢ় প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন তা ক্রমশই ভেঙে পড়ে তাঁর দুর্বল ও অযোগ্য উত্তরাধিকারীদের হাতে পড়ে। গান্ডোফারেসের উত্তরাধিকারীদের দুর্বলতার সুযোগে পল্লব সাম্রাজ্য দখল করে নেন কুষাণ সম্রাট কুজুল কদফিসেস। এইভাবে পল্লব সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে।
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ গণ্ডোফারেস অথবা,গণ্ডোফারেস সম্পর্কে আলোচনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য