চুক্তি ব্যবস্থা কীভাবে চীনের উপকূল বাণিজ্যের জন্ম দিয়েছিল? চীনের অর্থনীতির উপর এর প্রভাব আলোচনা কর।
আফিমের যুদ্ধে চালের পরাজয়ের পর ব্রিটেন, ফ্রান্স আমেরিকা ও রাশিয়ার সাথে স্বাক্ষরিত অসম চুক্তিগুলিকে ভিত্তি করে চলে ও পশ্চিমী দেশগুলির মধ্যে যে আম- রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার ভিত্তি হিসাবে চুক্তি ব্যবস্থা বা Treaty Syston' কথাটি ব্যবহৃত হয়, নানকিং, বোগ, ওয়াংশিয়া এবং ওয়ানপোয়া এই ৪ টি চুক্তির (১৮৪২-৪৪) মাধ্যমে সর্বপ্রথম চুক্তি ব্যবস্থা প্রাতিত হয় এই চুক্তি গুলি ছিল অসম ভিত্তিক এবং এদের বৈশিষ্ট্য ছিল আধা-ঔপনিবেশিক, ফলে এগুলি শেষ পর্যন্ত চীনের সার্বভৌমত্ব এ অর্থনৈতিক অধিকারের উপর বিদেশীদের কর্তৃত্ব কায়েম করেছিল, নানকিং -এর সন্ধি থেকে পিকিং কনভেনশন (১৮-82- ৬০) পর্যন্ত স্বাক্ষরিত অসম চুক্তি গুলিকে ভিত্তি করে চিনে 'উপকূল অর্থনীতির জন্ম হয়।
ক্যান্টন বাণিজ্যে অপমান জনক নিয়মাবলী ও অপ্রতল সুযোগ ব্রিটেন, ফ্রান্স প্রভৃতি ইউরোপীয় শক্তি- তলিকে চীনের উপর অধিকতর ঔপনিবেশিক শোষণ কায়েম করতে প্ররোচিত করেছিল, তাই আফিম যুদ্ধের অজহাতে তারা চীনের উপর বাণিজ্যিক চাপ সৃষ্টি করে। নানকিং-এর সন্ধিকে হারেজরা 'বন্ধুত্ব ও ক্ষতিপূরণের (Friendship and Companmation Nig অ্যাখা দিলেও কার্যত এটা ছিল টানের বাণিজ্যের উপর ইউরোপের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ। এই সন্ধির দ্বিতীয় অনুচ্ছেই দ্বার চীনের ৫ টি বন্দর বিদেশীদের কাছে উন্মুক্ত করা হয়, দ্বিতীয়ে অনুচ্ছেদে হংকং-এর প্রভাব ব্রিটেনের স্থায়ী কর্তৃত্ব মেনে নেবার ফলে চালের ছল্টিন-পূর্ব-উপকূল ব্রিটিশ বণিকদের শছে উন্মুক্ত হয়। একই সাথে শেং-২; বণিকদের চিরাচরিত বানিজ্যিক কর্তৃত্ব অস্বীকৃত হলে টনে উপকূল বানিজ্য বিস্তারের মস্তাবনা দেখা দেয়।
এতিহাসিক জান লিও ঔপনিবেশিক অর্থনীতির দ্বৈত স্বতার উল্লেখ করেছেন। এই ব্যবস্থার একদিকে থাকে কন্দর শহর কেন্দ্রিক শিল্প বাণিজ্য এবং অন্যদিকে থাকে সামনে বৃকৃষি নির্ভর দেশীয় অর্থনীতি, ইউরোপীয়রা চানের পূর্ব-উপকূল বরাবর বন্দর কেন্দ্রিক আধুনিক অর্থনীতি প্রণয়ন করেছিলেন, পূর্ব উপকূল বরাবর ১৫টি বন্দর বিদেশীদের কাছে উন্মুক্ত হয়েছিল, এই সকল বন্দরে তারা স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারত ত এবং এবং ব্রাঙ ধামা এজেন্সি হাউস ইত্যাদি অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার উপাদানগুনি নিম্নণ্ত্রন করতে পারত। এই ব্যবস্থা উপকূল কেন্দ্রিক অর্থনীতি বা Enclave Economy নামে পরিচিত। এই বন্দর শহরগুলিতে চমোরা বিভিন্ন ধরণের ধরণের কাছে কাজের সাথে যুক্ত ছিল, বিদেশী বণিকদের বাণিজ্য সহযোগী এই শ্রেণীর মধ্যবর্তীয়া Compradare শ্রেণী নামে পরিচিত, চীনারা উপকূলবর্তী শিল্প-বানিজ্যে কেরাণী বা দালাল হিসাবে কাজকর্ম করত। এরা ছিল সৎসিদ্ধি শ্রেণীর অন্তর্ভুজা। কালক্রমে এরাই টানে আধুনিক বুর্জোয়া ফেনীর পত্তন করে, চানে পুঁজিবাদের বিকাশে এই সেনট অগ্রনী ভূমিকা নেয়া সংখ্যায় নগন্য হলে ও আধুনিক ফ্রান্সে উদ্যোগী মেনীর আবির্ভাব মুৎসিদ্ধিদের অধ্য থেকেই ঘটেছিল,
সন্ধি ভুক্ত বন্দরগুলিতে বিদেশীরা সামান্য খাজনার বিনিময়ে ভূমি ইজারা দিতে পারত, ইউরোপীয় নাগরিকদের মধ্যে সেই জমি বণ্টন করা যেত, এই ব্যবস্থা সুবিধা ছান নামে পরিচিত। উপকূল বানিজ্যে বিকাশের ফলে কষ্টন বন্দর এরুত্ব হারায় এবং বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে সাংহাই এর মত বাজারের উত্থান ঘটে। চা ও রেশম বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসাবে সাং-হাই বন্দরের ক্রমবর্ধমান ওরুত্ব কষ্টন বাণিজ্যের ভাঙন আনে, উপকূল-বাণিজ্যের বিকাশ এবং কষ্টন বাণিজ্যের পতন স্থানীয় জনগণের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, বস্তুত, এই প্রভাবের ফলে টানে Gentry শ্রেণীর নেতৃত্বে হাতীয়-জাগরণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছিল।
উন্মুক্ত বন্দরগুলিতে বিদেশীদের সমান্তরাল প্রশাসন চালু ছিল। ঐতিহাসিক জাঁ কোনে লিখেছেন, "চীনের বহু এলাকায় চলো প্রশাসনের স্থান নিয়েছিল বিদেশী শাসন অথবা বিদেশীরা রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের সাথে নিজেদের কর্তৃত্বকে যুক্ত করেছিল, " বিদেশীদের তত্ত্বাবোধন সাংহাই, ক্যান্টন হ্যাংকা ও ডিয়েনসিন প্রভৃতি আধুনিক শহরে পরিণত হয়, চুক্তিভুক্ত বন্দরের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। এইসব বন্দরে বিদেশীদের উদ্যোগে আধুনিক প্রযুক্তির আমদানী ঘটে, উন্নত বাষ্পীয় জাহাজ ডাক ব্যবস্থা: সুয়েজ খালের উদ্ভাবন হত্যাদি উলেকে বিশ্ব অর্থনীতির সাথে সম্পর্কিত হতে সাহায্য করে। ফলে বিশ্ব-বাণিজ্যের উত্থান-পতন বা সংকট, এবং প্রতিযোগীতার প্রভাব টনের অর্থনীতির উপর পড়ে পশ্চিমী দেশগুলি চক্তি ব্যবস্থার দ্বারা উনেকে শর্যত একটি আধা -ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রে পরিণত করে।
ঔপনিবেশিক অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ী, বৈদেশিক উপকূল বানিজ্যের ফলে চীনের ঐতিহ্যশালী হস্তশিল্পেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিদেশের কলে প্রস্তুত পণ্যের সাথে প্রতিযোগীতায় চীনের হস্তশিল্পজাত পণ্য পিটু হটতে থাকে। তবে বিদেশীদের প্রতিযোগীতার মুখে ৩ টানা হস্ত শিল্প সম্পূর্ণ ধ্বংস, হয়নি একথা অনস্বীকার্য যে, উপকূল বাণিজ্যের সূত্র ধরে সাংহাই এবং হংকং-এর মত বন্দরে বিদেশী খুঁজি বিনিয়োগের ফলে টানে আধুনিক ব্যাঙ্ক-ব্যবস্থা ও শিল্প ভিত্তিক অর্থনীতির সূচনা হয়, এই সূত্রে চনে আধুনিক আন্তজাতিক ব্যবস্তার সাথে যুক্ত হতে পারে, আন্তর্জাতিক বাজারের উত্থান-পতন এবং বাণিজ্যিক প্রতিযোগীতার প্রভাব চীনের উপর পড়ো প্রসজাত উল্লেখ্য যে, সন্ধি ব্যবস্থা ও উপকূল বাণিজ্যর বিকাশ একদিকে যেমন টানের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন করেছিল, তেমনি এই ব্যবস্থার ব্যপকতর বাণিজ্য সম্পর্ক দ্বারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করেছিল। চীনে জাতীয়তাবাদী চেতনা বিকাশে উপকূল অর্থনীতির পরোক্ষ ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না, উপকূল অর্থনীতি দ্বারা পাশ্চাত্যের শোষন টানা ঐতিহ্যের মূলে আঘাত করে সমগ্র জাতিকে আত্মসচেতন করে তুলেছিল বিদেশী পুস্থির অনুপ্রবেশ চীনের সামন্ত সমাজে সেনদ্বৈন্দ্ব সেকাট করেছিল। পুঁজিবাদী অর্থনীতির আনির্ভার অনিবার্যভাবে কৃষক ও শ্রয়হীবী মানুষদের আর্থিক দুর্ছাসা বৃদ্ধি করেছিল করেছিল। এর পরিণামে তাইপিং বিদ্রোহের সতো কৃষক বিদ্রোহ সুসংগঠিত হয়। কালক্রমে চলো সামাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হতে পারে
বন্দর কেন্দ্রিক অর্থনীতি নতুন নতুন উদীয়মান শ্রেণী হিসাবে Comprador সৃষ্টি হয়, বিদেশীরা দেশীয় বণিকদের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল, দেশীয় দালালদের সহায়তা ছাড়া বিদেশীরা রপ্তানিযোগ্য পন্য সংগ্রহ করতে পারত না, আবার আমদানী করা পণ্য বাজারজাত করাও বিদেশীদের পক্ষে সহস্থ ছিল না এই টানের সাধারণ মানুষের কাছে Comprador শ্রেণীর বিদেশী বণিক ও চলোদের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করত, উদ্বোর সাধারণ মানুষের কাছে Comprador শ্রেণী হিসাবে কাঙ্খিত ছিল না। কারণ, এরা টানে আধুনিক শিল্প প্রতিষ্ঠায় পথিকৃতের ভূমিকা অয়েছিল, Comprador শ্রেণী বিদেশী জাহাজ ভাড়া করে দেশের অভ্যন্তরে রপ্তানির জন্য পণ্য সংসহ করত এবং আমদানী করা পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করত। এই Comprador (শ্রেণীর অধ্য থেকে দেশীয় পুঁজিপতি ও বণিকদের। সৃষ্টি হয়েছিল, যুক্তি ব্যবস্থার নিরাপ্রভা ও স্বাধীন উদ্যোগকে কাছে লাগিয়ে সৎসিদ্ধি সেণী মুহিবাদ বিস্তারে সহায়ক হয়- কিন্দর সমরে চীনা মহাজনরা মহাজনী কারবার ও ভূমি কেনাবেচায় লগ্নি করা এদের উদ্যোগে বন্দরে-শহরে নতুন-নতুন টানা শিল্পের আন্তিভাব ঘঠে। যেমন- রেশম, চাঃ ময়দাকল, কাপড়কল, চিনি ও মদের কারখানা, ইত্যাদি। এদের পাশাপাশি জল সরবরাহ, পরিবহন, গ্রন্থ নিমাণ প্রাবাজ ফারখানা ইত্যাদি শিল্পেও comprador শ্রেণী যক্তে ছিল, ইয়াৎসি নদীতে বাষ্পীয় পোত পরিবহণের ব্যবসায় Comprador পুঁজিবাদীরা। প্রচুর মূলধন লগ্নি করতেন। ১৯ শতকের শেষার্ধে চালের বন্দর শহরগুলিতে GT যে মূলধন ও. উদ্যোগ টেরি করা হয়, ত পরবর্তীকালে চানের শিল্পায়নের পথ দ্রুততর করেছিল। এইভাবে দেখা যায় যে, যুক্তি ব্যবস্থা প্রাথমিক ভাবে চীনকে একটি আধা সামন্ততান্ত্রিক ও আধা ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল এবং সুদুর প্রসারী ফল হিসাবে এই চার্জ। ব্যবস্থায় টানে পুঁজিবাদ ও জাতীয়তাবাদী জাগরণের পাঠতুমি তৈরি করেছিল।
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ চুক্তি ব্যবস্থা কীভাবে চীনের উপকূল বাণিজ্যের জন্ম দিয়েছিল? চীনের অর্থনীতির উপর এর প্রভাব আলোচনা কর। এই নোটটি পড়ার জন্য