বিংশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলায় নারী আন্দোলনের বৈশিষ্টগুলি আলোচনা করো।

  বিংশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলায় নারী আন্দোলনের বৈশিষ্টগুলি আলোচনা করো। 

বিংশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলায় নারী আন্দোলনের বৈশিষ্টগুলি আলোচনা করো।

বিংশ শতকে ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে বিভিন্ন নারীরাও যুক্ত হয়ে পড়েন। দীপালি সংঘের বিভিন্ন সদস্যা, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, সুহাসিনী গাঙ্গুলী, শান্তি ঘোষ, সুনীতি চৌধুরী, বীণা দাস প্রমুখ বঙ্গনারী সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এই সকল বিপ্লবী নারীরা নিঃস্বার্থভাবে আত্মত্যাগের মাধ্যমে দেশমাতৃকার জন্য বিশেষ অবদান রেখে গেছেন।


আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

বাংলায় নারী আন্দোলনঃ


দীপালি সংঘ প্রতিষ্ঠাঃ বাংলার নারীদের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সামিল করার উদ্দেশ্যে বিপ্লবী লীলা নাগ ১৯২৩ সালে ঢাকায় 'দীপালি সংঘ' প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংঘের সদস্যদের কুস্তি, লাঠি খেলা, শরীরচর্চা, অস্ত্রচালনা প্রভৃতি শিক্ষা দেওয়া হত।


চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে প্রীতিলতার অংশগ্রহণঃ মাস্টার দা সূর্য সেনের নেতৃত্বে ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুঠনের ঘনটায় বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এর পর তিনি টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন অফিস গৃৎসের কাজে অংশগ্রহণ করেন। জালালাবাদের পাহাড়ে যুদ্ধে প্রবল বিক্রমে লড়াই করে তিনি পালাতে সক্ষম হন।


ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণে প্রীতিলতাঃ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নেতৃত্বে শান্তি চক্রবর্তী, কালীকিংকর দে প্রমুখ বিপ্লবী ১৯৩২ খ্রিঃ চট্টগ্রাম পাহাড়তলীর ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ করেন এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগে প্রীতিলতা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। 


কল্পনা দত্তের বৈপ্লবিক কার্যকলাপঃ মাস্টার দা সূর্য সেনের বিপ্লবী সংগাম 'ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি'-র সদস্যা বিপ্লবী কল্পনা দত্ত জেলের অন্যান্য বিপ্লবীদে পালানোর সুযোগ করে দিতে কলকাতা থেকে বিস্ফোরক নিয়ে আসেন। পরে প্রীতিলতার সাথে ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণের দায়িত্ব নেন। তবে আক্রমণের পূর্বের তিনি ধরা পড়ে যান।



বিপ্লবী বীণা দাসের বৈল্পবিক কাজঃ বিপ্লবী বীণা দাস ১৯২৯ সালে সাইমন কমিশন বয়কট আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালে কলিকাতর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে লক্ষ্য করে বীণা দাস গুলি চালান কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। গ্রেফতার হওয়ার পর বিচারে তাঁর নয় বছর সশ্রম কারাদন্ড হয়।


লক্ষী সায়গলের বৈপ্লবিক কাজঃ চিকিসক ডঃ লক্ষ্মী সায়গল নিজের উজ্জ্বল কর্মজীবন ছেড়ে সুভাষচন্দ্রের আজাদ হিন্দ ফৌজের নারীবাহিনী ঝাঁসি বাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৪৪ সালে আজাদ হিন্দ বাহিনী ভারতের ব্রিটিশ শক্তিকে আক্রমণ করে পরাজিত হলে লক্ষ্মী ব্রিটিশ সেনার হাতে গ্রেফতার হন।


 ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে বাংলার নারীরাও অসমসাহসী বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তবে বৈপ্লবী সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহণের কিছু সীমাবদ্ধত পরিলক্ষিত হয়। যেমন- ক) মূলত বাংলার নারীরাই বিপ্লবী কাজে অংশ নিয়েছিল। এই কাজে ভারতের সর্বত্র নারীদের অংশগ্রহণ বিশেষ পরিলক্ষিত হয় না। খ) মূলত উচ্চস্তরের শিক্ষিত নারীরা এই বৈপ্লবিক কাজে আকৃষ্ট হয়েছিলেন। সমাজের নিম্নস্তরের নারীদের মধ্যে এর বিশেষ প্রভাব পড়েনি। তবে বলা যায় বিপ্লবী নারীরা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যেভাবে তাদের কৃত্বিত্ব রেখেছেন তাহা বাংলা তথা ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।


আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟