আলিপুর বোমার মামলা (১৯০৮) সম্পর্কে আলোচনা করো। Alipore-Bomb-Case

  আলিপুর বোমার মামলা (১৯০৮) সম্পর্কে আলোচনা করো। Alipore-Bomb-Case

আলিপুর বোমার মামলা (১৯০৮) সম্পর্কে আলোচনা করো। Alipore-Bomb-Case


 ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ভারতীয় বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অনেকগুলি ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এগুলির মধ্যে সর্বপ্রথম যে ষড়যন্ত্র মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল তাহা হল আলিপুর বোমার মামলা।


 বঙ্গভঙ্গ কার্যকরী হবার পর পূর্ববঙ্গ ও অসমের গভর্নর ছিলেন ব্যামফিল্ড ফুলার এবং বাংলার গভর্নর ছিলেন অ্যান্ড্রু ফ্রেজার। এই সময় তারা বিপ্লবী ও সাধারণ মানুষের ওপর অকারণে অত্যাচার করত। ফলে 'যুগান্তর' গোষ্ঠীর সদস্যরা এদেরকে হত্যা করার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা বার্থ হয়। তখন তারা অত্যাচারী প্রেসিডেন্ট ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার পরিকল্পনা করে। কিংসফোর্ড প্রাণভয়ে বিহারের মজঃফরপুরে বদলি হয়ে যান। সেখানে প্রফুল্ল চাকী ও ক্ষুদিরাম বসু তাকে হত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। প্রফুল্ল চাকি আত্মহত্যা করেন এবং ক্ষুদিরাম বসু ধরা পড়েন ও বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়।


 এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ব্যাপক তল্লাশি শুরু করে। শীঘ্রই পুলিশ কলকাতার মুরারীপুকুর রোডের এক বাগান বাড়িতে বোমা তৈরীর কারখানা আবিষ্কার করে এবং বহু তাজা বোমা ও অন্যান্য বিস্ফোরক দ্রব্য আটক করে। এরপর বারীন্দ্রনাথ ঘোষ, অরবিন্দ ঘোষ, উল্লাসকর দত্ত সহ মোট ৩৬ জন মতান্তরে ৪৭ জন বিপ্লবীকে গ্রেপ্তার করে। ১৯০৮ সালে শুরু হয় আলিপুর বোমার মামলা।


 বিচারপতি বীচক্রফট-এর এজলাসে এই মামলার বিচার শুরু হয় এবং তাহা প্রায় এক বছর ধরে চলতে থাকে। বিচার চলাকালীন জেলের ভিতরে এক দুঃসাহসিক ঘটনা ঘটে। নরেন গোঁসাই নামে এক বিশ্বাসঘাতক বিপ্লবী রাজসাক্ষী হতে চাওয়ায় জেলের মধ্যেই সত্যেন্দ্রনাথ বসু ও কানাইলাল দত্ত নামে দুই বিচারাধীন বিপ্লবী নরেন গোঁসাইকে গুলি করে হত্যা করেন। এই মামলা চলাকালীনই বাংলার অন্যান্য বিপ্লবীরা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর নন্দলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেপুটি সুপার সামসুল আলম এবং সরকারি উকিল আশুতোষ বিশ্বাসকে হত্যা করেছিলেন। আলিপুর বোমা মামলার বিচারের রায়ঃ ১৮০৯ সালে আলিপুর বোম মামলার বিচারের রায় বের হয়। বিচারে সত্যেন্দ্রনাথ বসু ও কানাইলাল দত্তের ফাঁসি হয়। বারীন্দ্র ঘোষ, উল্লাসকর দত্ত সহ কয়েকজনের যাবজ্জীবন দীপান্তর হয়। দোষী সাব্যস্ত ১৫ জন বিপ্লবীদের মধ্যে বাকীদের কারাদন্ড হয়। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় অরবিন্দ ঘোষ মুক্তি পান। অরবিন্দ এর পর বৈপ্লবিক কার্যকলাপ ত্যাগ করে পন্ডিচেরিতে আধ্যাত্মিক সাধনায় ব্রতী হন।


 সরকার 'যুগান্তর' ও 'অনুশীলন সমিতি'-কে নিষিদ্ধ করে। আইন করে বৈপ্লবিক আন্দোলনের রাশ টেনে ধরার চেষ্টা করে। ফলে সাময়িকভাবে বাংলার বৈপ্লবিক আন্দোলনে ভাটা পড়ে।

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ আলিপুর বোমার মামলা (১৯০৮) সম্পর্কে আলোচনা করো। Alipore-Bomb-Case এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟