লাহোর প্রস্তাব সম্পর্কে আলোচনা কর
১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের সাধারণ নির্বাচনে বাংলা ব্যতীত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ও নির্দেশ প্রদেশে সমূহে মুসলমান মুসলিম লীগের পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণের জন্য মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে লাহোরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সাধারণ অধিবেশন আহ্বান করেন । এই অধিবেশনের বাংলা থেকে যোগদান করেন একে ফজলুল হক । ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবসায়িক মুসলিমদের জন্য এই পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা ২৩ মার্চ পেশ করেন জিন্নাহ । যেটি উপাখ্যান করেছিলেন এ.কে ফজলুল হক । এ প্রস্তাবটি লাহোর প্রস্তাব নামে পরিচিত । মহম্মদ আলী জিন্নাহ প্রায়ই ২ ঘন্টা ধরে দেওয়া বক্তব্যে কংগ্রেস ও জাতীয়তাবাদী মুসলমানদের সমালোচনা করেন এর পাশাপাশি তিনি দ্বিজাতি তত্ত্ব ও মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের দাবির যুক্তিসঙ্গত কথা তুলে ধরেন ।
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
২৪ মার্চ প্রবল উৎসাহের সঙ্গে প্রস্তাবটি গৃহীত হয় সমসাময়িক পত্রপত্রিকায় লাহোর প্রস্তাবকে কেমব্রিজ বসবাসকারী রহমত আলী কর্তৃক বিস্তারিতভাবে নকশা অনুযায়ী পাকিস্তানের জন্য দাবি হিসাবে আখ্যায়িত করে । 1940 এর এই প্রস্তাবের কোথাও পাকিস্তানের উল্লেখ নেই, দেশীয় সংবাদ পত্রপত্রিকাগুলি মুসলিম নেতৃত্বকে একটি মুসলমান স্লোগান সরবরাহ করে যা অবিলম্বে তাদেরকে একটি রাষ্ট্রের ধারণা পোষণ করে । ১৯৪১ এর ১৫ এপ্রিল মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে লাহোর প্রস্তাবকে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের গঠনতন্ত্রের একটি মৌলিক বিষয় হিসেবে সান্নিধ্য করা হয় । ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের পূর্বকাল পর্যন্তও এই লীগের প্রধান বিষয় ছিল ।
প্রকৃতপক্ষে 1940 এর পরবর্তী সময় থেকে ভারতীয় স্বাধীনতা বিতর্কের প্রধান প্রাসঙ্গিক বিষয় হিসাবে পাকিস্তানের কথা উঠে এসেছিল ১৯৪১ এর মাদ্রাজ অধিবেশনে । এটি ভারতের মুসলিম লীগের প্রধান মৌলিক বিষয়ে পরিণত হয় । ১৯৪৬ এর মার্চ মাসে মন্ত্রী মিশন ভারতে এলে ৭ই এপ্রিল মুসলিম লীগ প্রবলভাবে তাদের পাকিস্তান দাবি উপস্থাপন করে । এই সূত্রে মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্যদের তিন দিনব্যাপী এক সম্মেলন হয় পাকিস্তান রাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাব তৈরি হয় । এই সম্মেলনে এবং এটি তৈরি করেছিলেন চৌধুরী খালিক্কুজামান ৭ই এপ্রিল এটি মন্ত্রী মিশনের সামনে পেশ করে মুসলিম লীগ এবং পরবর্তীতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয় সেই লাহোর প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে ।