বিংশ শতকের প্রথমদিকে সমরনায়কদের শাসনের ফলাফল বর্ণনা করো। rule of warlords

বিংশ শতকের প্রথমদিকে সমরনায়কদের শাসনের ফলাফল বর্ণনা করো।

 বিংশ শতকের প্রথমদিকে সমরনায়কদের শাসনের ফলাফল বর্ণনা করো। 

বিংশ শতকের প্রথমদিকে সমরনায়কদের শাসনের ফলাফল বর্ণনা করো।


সমরনায়কদের শাসনের ফলাফলঃ ১৯১২ খ্রিঃ হুয়ান শি-কাই রাষ্ট্রপতি পদে নিযুক্ত হওয়ার পরেই চিনে সমরনায়কদের শাসনের সূচনা হয় এবং ১৯২৮ খ্রিঃ পর্যন্ত এই শাসনব্যবস্থা চালু ছিল। সমরনায়কদের ক্ষমতার উৎস ছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু সমরনায়কদের পশ্চাতে কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। সেজন্য তাঁরা সুস্থ ও সুসংগঠিত প্রশাসন প্রবর্তনে বাথ হন। ফলে তাঁদের নেতৃত্বে চীনের প্রশাসনে অবনতি ঘটে জনগণের দুঃখ-দুর্দশা বৃদ্ধি পায় এবং সমাজজীবন দুর্নীতিপরায়ণ হয়। লুইন এক অতিরিক্ত কর আদায়ের ফলে চিনের সাধারণ মানুষ উৎপীড়িত হয়। তাছাড়া মুদ্রার মূল্যহ্রাস, ব্যবসায়ে মন্দা, রেলপথ নির্মাণ, বন্যানিয়ন্ত্রণ, পূর্তকার্য প্রভৃতি জনকল্যানমূলক কর্মসূচী অবহেলিত হতে শুরু করলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বিঘ্নিত হয়।


সমর শাসনের অপর একটি কুফল হল আফিম উৎপাদনের পুনরুজ্জীবন। চিং সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে ১৯১৭ খ্রিঃ শেষের দিকে আফিম আমদানি ও সেবন বন্ধ হয়। কিন্তু সমরশাসকগণ জাতীয় জীবনের অভিশাপ স্বরূপ আফিম উৎপাদন পুনরুজ্জীবিত করে তোলেন। আফিম গাছ চাষের উপযোগী জমির ওপর অতিরিক্ত কর ধার্য করে তাঁরা সুকৌশলে কৃষকগণকে এইসব জমিতে আফিম উৎপাদন করতে বাধ্য করেন।


সমরশাসনের সুফল হিসাব উল্লেখযোগ্য যে, সে যুগের দুর্নীতি ও অত্যাচার দেশপ্রেমিক যুবকদের মনে গভীর রেখাপাত করে। ভবিষ্যতে অনুরূপ দুর্নীতি পরবর্তী যুগে যাতে পনরাবির্ভাব না ঘটে সেজন্য এই সব তরুণগণ ব্যবস্থা হিসাবে বিপ্লবের পথ ধরতে বদ্ধপরিকর হন। অপরদিকে শক্তিশালী কেন্দ্রীয় শক্তির অভাবে দেশের ঐকা বিনষ্ট রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে তৎপর হন। সমরনায়কদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও প্রতিযোগিতার সর্বপ্রথম বলি হয় দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা। সমগ্র দেশ প্রকৃত অর্থেই অন্তর্থদের একটি সেনা শিবিরে পরিণত হয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে সমরশাসকদের যুগকে চরম বিশৃঙ্খলার যুগ বলা চলে।


কিন্তু এই যুগের সৃজনশীল রূপটিকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় এবং যুদ্ধোত্তরকালে পাশ্চাত্য দেশগুলি থেকে চিনে আমদানি হ্রাস পায়। ফলে শহরাঞ্চলে দেশীয় শিল্পোৎপাদনের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। নতুন নতুন বহু কলকারখানা গড়ে ওঠে এবং বেকার সমস্যাও বহুলাংশে দূর হয়। গ্রামাঞ্চলের বহু লোক শহরে এসে জীবিকা অর্জন করার নতুন পথ খুঁজে পায়।


বিদেশী বণিকদের সাথে জড়িত কম্পাডোর নামে চীনা প্রতিনিধিদের অভ্যুদয় ঘটে এবং তাদের প্রচেষ্টায় চীনের শিল্প ও বানিজ্য দ্রুত উন্নতি সাধন করতে সমর্থ হয়। আধুনিক ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা এই সময়েই চীনে প্রবর্তিত হয় এবং চীনা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ গ্রহণের পদ্ধতিও অনেক সহজতর হয়ে ওঠে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সমরশাসকদের আমল বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছে।


About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟