সম্পত্তির বিশেষ অধিকার সহ আদি মধ্যযুগের নারীর অবস্থান বর্ণনা কর

সম্পত্তির বিশেষ অধিকার সহ আদি মধ্যযুগের নারীর অবস্থান বর্ণনা কর

প্রাচীন কাল থেকেই ভারতবর্ষে নারী পুরুষের মধ্যে বৈষম্য সামনে প্রবাহমান ৷ প্রাচীন স্মৃতিসাহিত্য গুলিতে নারী জাতির প্রতি অবহেলা ও অনাদারে ভুরি ভুরি দৃষ্টান্ত লক্ষ্য করা যায় ৷ প্রাচীনকাল হতে পারিবারিক ক্ষমতার অধিকারী ছিল একমাত্র পুরুষ ৷ কৃষিভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পর নারীর উপর পুরুষজাতির প্রাধান্য মাত্রাতিরক্ত ভাবে বাড়তে থাকে বলে আদি সমাজে যে লিঙ্গ সমতা ছিল তা পরবর্তী যুগে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় । খ্রিস্টপূর্ব ৩০ শতকে ভূমিদান ব্যবস্থা শুরু হলে ভূমি ভিত্তিক অভিজাত প্রবল অধিকার ধারণ করে সেই অভিজাতের ধারক ও বাহক ছিলেন পুরুষ ৷ অনিবার্যভাবে নারী হয়ে ওঠে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অবহেলিত ৷

আধুনিক যুগের ভারতীয় নারী জীবনের কিছু পরিবর্তন ঘটলেও সনাতন কিছু সমাজ পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার পুনঃ সংস্কার এখনো ঘটেনি অধ্যাপক দুবে তার "Indian socity" গন্থে মন্তব্য যে,"The social political system appears are continue gender is cloud not seens that much to land and tortuous"

ভারতের ঋক বৈদিক যুগে নারীরা সমাজের যে উচ্চ স্থান পেতে পারে পিতৃতান্তিকতার হাত ধরে সমাজের নারীর স্থান ক্রমাগত নিম্নগামী হয়ে পড়ে ৷ অগ্নি পুরাণে বলা হয়েছে নারী ও পশুকে বন্ধক রাখা যেতে পারে ৷ সুতরাং এ থেকে মনে করা হতো নারীর ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনিচ্ছা ভাললাগা এবং সম্পত্তিতে তার অধিকার ছিল না।

প্রাচীন ভারতের নারী ও পুরুষের মধ্যে যে তীব্র অবস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে আদি মধ্যযুগে সেই অবস্থার খুব বেশি গুণগত পরিবর্তন ঘটেনি ৷ রত্নাবলী চট্টোপাধ্যায় তার "ভারত ইতিহাসের নারী" নামক গ্রন্থে বলেছেন আদি মধ্যযুগে বাংলা তথা ভারতীয় সমাজে তিনটি ধারা গড়ে উঠেছিল এগুলি হলো (১).লৌকিক (২).তান্ত্রিক,(৩).ব্রাহ্মণ্য ৷এই সকল ধারাগুলোর মধ্যে দিয়ে শ্রেষ্ঠ সমাজের নারীরাই হয়েছিল অবহেলিত ৷ মধ্যযুগে কন্যা বিবাহ দান পিতার প্রাথমিক এবং পবিত্র কর্ম বলে বিবেচিত হতো । স্মৃতি চন্ডিকা গ্রন্থে বলা হয়েছে পত্নী স্থায়ীভাবে অসুস্থ সন্তান ধারণের অক্ষম কিংবা শুধুমাত্র কন্যা সন্তানদের জন্মদিনে স্বামী দ্বিতীয় প্রতিটি গ্রহণ করতে পারত ৷

মধ্যযুগে ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান ও সামাজিক অবস্থানের বিশেষ পরিবর্তন না ঘটিয়ে উচ্চ প্রভাবশালী ও শীর্ষ নারীদের কিছু রাজনৈতিক কার্যকলাপ লক্ষ্য করা গিয়েছে ৷ জানা যায় যে রুদ্রাক্ষ দীর্ঘ ৪০ বছর কৃতিত্বের সাথে শাসন পরিচালনা করেছিলেন তবে রাজনীতিতে কয়েকজন নারীর সাফল্যকে ব্যতিক্রম ভাবে দেখায় যুক্তিযুক্ত ৷ সার্বিকভাবে এই পর্বের নারীর উন্নতি সেভাবে ঘটেনি ৷

নারীদের সামাজিক ও রাজ রাজনৈতিকভাবে পরাধীন করে রাখার সাথে সাথেই নারীকে আর্থিকভাবে পুরুষ নির্ভর করে রাখার প্রবণতা দেখা যায় । আদি মধ্যযুগে মনু সম্পত্তিতে নারীদের অধিকার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ৷ তবে স্বামীর সম্পত্তিতে কোন অধিকার ছিল না ৷ স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা স্ত্রীর ধন সম্পত্তি অধিকারী হয়ে উঠতে পারতেন না ৷

তবে কোন কোন সূত্রে জানা যায় স্বামী পরিত্যক্ত নারী তার স্বামীর ৩/৯ অংশের অধিকারী ছিলেন ৷ গুপ্ত যুগের রচিত "নারদ স্মৃতি" "কাত্যায়ন স্মৃতি" "বৃহস্পতি স্মৃতি" সমূহ নারীর অর্থনৈতিক ও অধিকার বিষয়ে আলোচিত হয়েছে ৷ প্রাচীন বা আদি মধ্যযুগে কিছুই নির্দিষ্ট সম্পদের ওপর নারীর অধিকার স্বীকৃত হলেও সামগ্রিকভাবে নারীজাতির সমাধিকার সে অর্ধে প্রতিষ্ঠিত হয়নি ৷

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ সম্পত্তির বিশেষ অধিকার সহ আদি মধ্যযুগের নারীর অবস্থান বর্ণনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য