ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সপ্তদশ শতকের সংকট কী?

ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সপ্তদশ শতকের সংকট কী?

ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সপ্তদশ শতকের সংকট কী?

ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সপ্তদশ শতকের সংকট কী?

প্তদশ শতাব্দীর ইউরোপে অর্থনৈতিক সংকট ছিল একটি বিতর্কিত বিষয় । যাইহোক, এটা সত্য যে সপ্তদশ শতাব্দী ছিল ইউরোপীয় ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় । কারণ এই শতাব্দীতে ইউরোপের বৈচিত্র্যময় দেশগুলোর ওপর বেশ কিছু অর্থনৈতিক সমস্যা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে । ইতালি ও তুরস্কের অবক্ষয় অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে, বাণিজ্যিক তৎপরতায় সমৃদ্ধ ভেনিস, পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয় । জার্মানিতে অবসাদের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল। পোল্যান্ড ও ডেনমার্কের অবস্থা ছিল ভয়াবহ।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

ষোড়শ শতকের সামন্ততান্ত্রিক উৎপাদন পদ্ধতি কৃষিতে পুঁজি বিনিয়োগের ঘাটতি সত্ত্বেও খাদ্যশস্যের চাহিদা ন্যায়সঙ্গতভাবে সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছিল । যাইহোক, সপ্তদশ শতকে উৎপাদনের সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়ে । মাটির উর্বরতা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে কোনো উন্নতি ঘটাতে পারেনি । জনসংখ্যা না বাড়লেও খাদ্যশস্যের অভাব এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ মৃত্যুর হার কে ভয়াবহ করে তুলেছিল । গোটা সপ্তদশ শতক জুড়ে রুটির জন্য দাঙ্গা অবিরল ভাবে ঘটে চলেছিল ।

সপ্তদশ শতাব্দীতে যেসব এলাকায় অবশিল্পায়ন বা শিল্পহীনতা দৃশ্যমান ছিল তার মধ্যে ইতালীয় নগর -রাষ্ট্রগুলি বিশিষ্ট ছিল । যদিও ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স এবং পোল্যান্ডের বড় অংশ কৃষিতে পরিণত হয়েছিল, তবে এক্ষেত্রে ইংল্যান্ড, সুইডেন এবং সুইজারল্যান্ড কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল । ফ্রান্স এবং ইতালির রেশম শিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যখন আমেরিকার সাথে স্পেনের বাণিজ্য হ্রাস পেয়েছিল । ইংল্যান্ডের উলের চাহিদা কমেছিল ।

আন্তর্জাতিক বা বৈশ্বিক বাণিজ্যের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ইতালির অবস্থা আরও শোচনীয় ছিল । উপরন্তু, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সংকুচিত হতে শুরু করে । এই অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি যেগুলি অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যায়নি তারা এখনও অন্যান্য সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল । উপরন্তু, এই সময়সীমায় ইউরোপের সম্প্রসারণ প্রক্রিয়াও নিরবচ্ছিন্নভাবে সফল ছিল না ।

পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীর দুরন্ত অর্থনৈতিক সাফল্যের পর কেন এই বিপর্যয় ঘটেছিল তা বোঝা এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে । এই প্রশ্নের উত্তরে এককথায় বলা যায় ১৭ শতকের ইউরোপের উৎপাদন ব্যবস্থায় একটা ছেদ সৃষ্টি হয়েছিল । একটি মুক্ত ও ভ্রাম্যমাণ শ্রমিক শ্রেণী এবং পণ্যের একটি উন্নয়নশীল বাজার তৈরি করতে অক্ষমতা পুঁজিবাদের সৃষ্টিকে স্থগিত করে । হবসবম এই অর্থনৈতিক মন্দার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন । তিনি সামন্ততান্ত্রিক কাঠামোয় পুঁজিবাদকে 'পরগাছা সুলভ' বলে উল্লেখ করেছেন । শিল্প উৎপাদনকারীরা তুলনামূলকভাবে সামান্য অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপে নিযুক্ত হয়ে আধুনিক ব্যবসা ও বাণিজ্যের গতি অনুসরণ করে । ভূমিদাস নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা সামন্ত শ্রেণীর সম্পদ বৃদ্ধিতে সহায়ক হলেও ছোটখাটো ভূস্বামীদের পিছনে ঠেলে দিয়েছিল ।

একটি সমৃদ্ধ বাজারের অভাবের কারণে, জমির মালিকদের আগ্রহ কৃষি পণ্য রপ্তানিতে স্থানান্তরিত হয় । প্রাথমিক বুলিয়ন সরবরাহকারী, ইউরোপ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রতিযোগিতামূলক সুস্থ পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি । এর সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে জলদস্যুতা ।

আসলে, ইউরোপে সপ্তদশ শতাব্দী একটি গভীর হতাশা, অস্থিরতা, রক্তপাত এবং সংঘাত দ্বারা চিহ্নিত ছিল যা মহাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল ।

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সপ্তদশ শতকের সংকট কী? এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟