রংপুর কৃষক বিদ্রোহ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর
অথবা, রংপুর কৃষক বিদ্রোহ সম্পর্কে লেখ।
অথবা, টীকা লেখ রংপুর কৃষক বিদ্রোহ বা রংপুর বিদ্রোহ
পলাশীর যুদ্ধের পর বাংলাকে কেন্দ্র করে ইংরেজি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ৷ একই সঙ্গে চলছিল অর্থনৈতিক শোষণ ও সম্পদ লুণ্ঠন ৷ তবে বাংলাবাসী বিনা প্রতিবাদে ইংরেজদের শোষণ ও অত্যাচার করে নেননি ৷ ৷ তারা খাজনা বন্ধ করা ভূমি ব্রিটিশ ভূমি রাজস্ব নীতির বিরোধিতা করার ন্যায় একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেন ৷
রংপুরের বিদ্রোহ গড়ে উঠেছিল জমিদার দেবী সিংহের অত্যাচারের উদ্দেশ্যে ৷ দেবী সিংহ ছিলেন জমিদার এবং ওয়ারিং হেস্টিংয়ের খুব কাছের মানুষ ৷ সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন "Board of Revenue" সদস্য ৷ রংপুর অঞ্চলে অমানবিক অত্যাচার শুরু করেন ৷ অত্যাচারের কৃষক রংপুরের কালেক্টর এর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন কিন্তু দেবী সিংহ উৎকোচ দ্বারা উচ্চ পদস্থ কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন ফলে সুবিচার না পেয়ে কি সব বিদ্রোহে হাঁপিয়ে পড়েন ৷
রংপুরের বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠার অব্যাহিত পরেই কাজিরহাট,ফতেপুর চবসোনা,কাকিনা প্রভৃতি পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের কৃষকরা রংপুর বিদ্রোহের সাথে যোগ দেন ৷ বিদ্রোহীর নুরুদ্দীনকে তাদের নেতা মনোনীত করেন এবং তাকে নবাব আখ্যা দেওয়া হয় । দয়াশীল নিযুক্ত হন সহকারী নেতা হিসাবে ৷ কর প্রদান প্রদানের নিষেধ করেন এবং বিদ্রোহ পরিচালনার জন্য কৃষকদের নিকট হতে "ডিংখচরা" নামে কর আদায় করতে শুরু করেন ৷ হিন্দু-মুসলিম এই বিদ্রোহের সম্মিলিতভাবে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তোলে ৷ কিন্তু এই বিদ্রোহ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি দেবী সিংহ ইংরেজ বাহিনীর সহায়তা নিয়ে বিদ্রোহ দমন করতে এগিয়ে আসে ৷ নুরুদ্দিন বন্দি হন এবং দয়াশীল নিহত হন । অবশেষে পাঠ গ্রামের যুদ্ধের পরাজিত হলে বিদ্রোহীরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ৷